সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কা
- আপডেট সময় : ১১:৫১:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে
সিরিয়ায় নতুন করে চলমান গৃহযুদ্ধে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। এরইমধ্যে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো হাজার হাজার বাসিন্দা খাবারের অভাবে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় সিরিয়ায় থাকা সব মানবিক সংস্থায় অর্থায়ন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সহায়তা সংস্থা ডব্লিউএফপি।
আট বছর পর বাশার আল আসাদ সরকার বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী মাথাচাড়া নিয়ে ওঠায় আবারো গৃহযুদ্ধের আগুনে পুড়ছে সিরিয়া। সময় যত গড়াচ্ছে তত অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে হায়াত তাহরির আল-শাম নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বড় দু’টি শহর আলেপ্পো ও হামা দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। রাশিয়া ও ইরান পাশে থাকলেও শত্রুপক্ষের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে পারছে না বাশার আল আসাদ বাহিনী।
গৃহযুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি তছনছ হচ্ছে বসতভিটা। আলেপ্পো ও হামা ছেড়ে পালানো সাধারণ মানুষের সারিও দীর্ঘ হচ্ছে। আলোপ্পো ছেড়ে পাশের তাবকা শহরের তাঁবুতলে অনেকে আশ্রয় নিলেও হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত সিরিয়ান খোলা আকাশের নিচে।
স্থানীয় একজন বলেন, ‘বেকারিতে গিয়ে অনেকে রুটি পাচ্ছেন, অনেকে পাচ্ছেন না। একটি রুটির জন্যও এখন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।’
অন্য একজন স্থানীয় বলেন, ‘প্রতিদিনই জ্বালানির দাম বাড়ছে। আগের চেয়ে দ্বিগুণ দাম দিয়েও আমরা চাহিদা মতো পেট্রোল পাচ্ছি না।’
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তথ্য বলছে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ২৭ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার শঙ্কা ডব্লিউএফপির।
ডব্লিউএফপি’র জরুরি সমন্বয় পরিচালক সামের আবদেলজাবার বলেন, ‘২৭ নভেম্বরের পর বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৪৮ হাজার থেকে বেড়ে এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৮০ হাজরে পৌঁছেছে। যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি এভাবেই চলতে থাকে, তাহলে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। আর তা হলে আমাদের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন পড়বে।’
জাতিসংঘ বলছে, ২০১১ থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে দেশটিতে আগে থেকেই প্রায় দুই কোটি সিরিয়ান খাদ্য নিরাপত্তাহীন ছিলেন। এরসাথে নিত্যদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। তাদের সহায়তায় বিপুল অর্থ প্রয়োজন।
সামের আবদেলজাবার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সংকটের আগেও খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন ছিল। তাই সিরিয়া জুড়ে কাজ করা সমস্ত সংস্থা এবং মানবতাবাদীদের জন্য এখন অর্থায়ন বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
এমন করুণ পরিস্থিতির মধ্যেও যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। হামার পর সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রণাধীন আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর হোমসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন বিদ্রোহীরা। তবে কঠোর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ।