নয়াদিল্লিতে বায়ুমানের চরম অবনতি
- আপডেট সময় : ১২:৫৬:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে
প্রায় দেড়মাস ধরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বায়ুমানের চরম অবনতি আর সাম্প্রতিক শৈত্য প্রবাহে নাকাল জনজীবন। বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার ইনডেক্সের তথ্য বলছে, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে নয়াদিল্লির বায়ুমান ছিল ৬১৭, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ‘বিপজ্জনক’। এদিন রাজধানীর কোথাও কোথাও বায়ুমান ৮শ’ ছাড়াতে দেখা গেছে।
ডিসেম্বরের সকাল। সূর্য উঁকি দিচ্ছে আকাশে। এই দৃশ্য দেখে যদি মনে করেন আর পাঁচটা শীতের সকালের মতো কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। তাহলে ভুল করবেন। ফসলের আগাছা পোড়ানোর বিষাক্ত ধোঁয়া আর কুয়াশার সাথে মিলে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশার এই পুরু আস্তরণ বা স্মগ। রাজধানী নয়াদিল্লির বায়ুমান আরও তলানিতে পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখছে যানবাহন আর কলকারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার দূষণও।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘বিশেষ করে নয়াদিল্লির বায়ুদূষণ বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব। প্রতিবছরই আমাদের এই একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। গেল বছরও দূষণ দেখেছি, তার আগের বছরেও একই দশা ছিল। এর কোনো সমাধান আছে বলে মনে হয়না।’
আরেকজন বলেন, ‘চোখ জ্বালাপোড়া করছে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। সকাল থেকে একটু পরপরই গলা শুকিয়ে আসছে। বুকে ভারি কফও জমেছে।’
ঘন কুয়াশার কারণে যান চলাচল যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, কাশি, বুকে কফ জমে যাওয়া- এমনকি চোখ জ্বালাপোড়া নিয়েও ভুগছেন দিল্লিবাসী।
রাজধানীবাসীর ভোগান্তি বাড়াতে যোগ হয়েছে শীতের তীব্রতাও। মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লির তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে আসে। একইদিনে স্থানীয় সময় দুপুর বারোটায় নয়াদিল্লির বায়ু মান ছিল ৪২৪ একিউআই, রাত বাড়ার সাথে সাথে যা পৌঁছে যায় ৬১৭ তে। বায়ুমান আর শৈত্যপ্রবাহের পরিসংখ্যানই বলে দেয় কতটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বাস করছে দিল্লিবাসী।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সোমবার থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অলনাইল ও অফলাইনে সবধরণের ক্লাস কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি প্রশাসন। পরবর্তীতে দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি ব্যতীত সব শ্রেণির ক্লাস শিডিউল শিথিল করা হয়েছে। এছাড়া, সরকারি কর্মকর্তারা শুরুতে কর্মঘণ্টা কমানোর দাবি করলেও, পরে ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে অফিস করার অনুমতি প্রদানের আর্জি জানান।
এমন বাস্তবতায় মঙ্গলবার আবারও কঠোর দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি সরকার। সরকারি নিষেধাজ্ঞার অধীনে সবধরনের নির্মাণ এবং ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে। এছাড়াও, দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বিসিসি। শীর্ষ সংক্রামক বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে বিবিসি জানাচ্ছে, ভারতের এই বিষাক্ত বাতাস কোভিড-১৯ মহামারির চেয়েও বড় প্রভাব ফেলতে পারে জনস্বাস্থ্যে।