ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দ্য ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশ বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের সেরা দেশ নির্বাচন করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে এবার বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দ্য ইকোনমিস্টের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এতে বলা হয়েছে, প্রতিবছর সেরা দেশ নির্বাচনের সময় সাধারণত সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে না দেখে, বরং গত ১২ মাসে যেই দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেই দেশকে সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এবারের তালিকায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ছিল সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড। তবে, ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর সংবাদদাতাদের মধ্যে ‘উত্তপ্ত বিতর্ক’ শেষে সেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ এবং রানারআপ হয় সিরিয়া।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি এক সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অংকের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

প্রতিদবেদনটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দুর্নীতিগ্রস্ত। ইসলামি চরমপন্থাও একটি হুমকি। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিবর্তন আশাব্যঞ্জক। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।

২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।

তবে, একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং আরও উদার সরকার গঠনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের এ বছরের সেরা দেশ বাংলাদেশ।

এছাড়া, সিরিয়া এ বছরের রানার্সআপ নির্বাচিত হয়েছে, যেখানে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পোল্যান্ডও এই তালিকায় স্থান পেয়েছে তাদের অর্থনৈতিক সংস্কার ও নতুন সরকারের গঠনের কারণে।

পূর্ববর্তী বছর ২০২৩ সালে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর বর্ষসেরা দেশ ছিল গ্রীস, যারা দীর্ঘ আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সফল হয়েছিল এবং একটি সংযত মধ্যপন্থী সরকার পুনর্র্নিবাচিত হয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

দ্য ইকোনমিস্টের বর্ষসেরা দেশ বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ১১:৪৬:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের সেরা দেশ নির্বাচন করেছে দ্য ইকোনমিস্ট। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে এবার বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দ্য ইকোনমিস্টের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এতে বলা হয়েছে, প্রতিবছর সেরা দেশ নির্বাচনের সময় সাধারণত সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে না দেখে, বরং গত ১২ মাসে যেই দেশ সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে, সেই দেশকে সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এবারের তালিকায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ছিল সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড। তবে, ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর সংবাদদাতাদের মধ্যে ‘উত্তপ্ত বিতর্ক’ শেষে সেরা দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ এবং রানারআপ হয় সিরিয়া।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়, আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা এক স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছে। আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করেন। দেশের স্বাধীনতার হিরোর এক কন্যা হিসেবে তিনি এক সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দমন শুরু করেন, নির্বাচনে কারচুপি করেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠান এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তার শাসনামলে বিশাল অংকের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

প্রতিদবেদনটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দুর্নীতিগ্রস্ত। ইসলামি চরমপন্থাও একটি হুমকি। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিবর্তন আশাব্যঞ্জক। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে রয়েছে একটি অস্থায়ী সরকার, যা ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।

২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে এবং কবে নাগাদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এর আগে নিশ্চিত করতে হবে যে দেশটির আদালত নিরপেক্ষভাবে চলছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এর কোনোটিই সহজ হবে না।

তবে, একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং আরও উদার সরকার গঠনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের এ বছরের সেরা দেশ বাংলাদেশ।

এছাড়া, সিরিয়া এ বছরের রানার্সআপ নির্বাচিত হয়েছে, যেখানে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পোল্যান্ডও এই তালিকায় স্থান পেয়েছে তাদের অর্থনৈতিক সংস্কার ও নতুন সরকারের গঠনের কারণে।

পূর্ববর্তী বছর ২০২৩ সালে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ এর বর্ষসেরা দেশ ছিল গ্রীস, যারা দীর্ঘ আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সফল হয়েছিল এবং একটি সংযত মধ্যপন্থী সরকার পুনর্র্নিবাচিত হয়েছিল।