ঢাকা ১১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

খুলনায় অরক্ষিত নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৭৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

খুলনায় অরক্ষিত পড়ে আছে বেশিরভাগ নৌ ঘাট। মালামাল ও যাত্রী ওঠানামায় দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে নৌ ঘাট ব্যবহারকারীদের। এতে নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। একইসাথে বিভিন্ন ঘাটের কর্তৃত্ব নিয়ে সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএ’র দ্বন্দ্ব তো আছেই।

খুলনার কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ভৈরবের ঢেউ শতবছরের বেশি সময় ধরে নৌপথের ব্যবসার অন্যতম রুট। এই নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে দক্ষিণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র বড়বাজার। ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা এই বাজার এখন আরো প্রশস্ত হয়েছে, বেড়েছে পরিধি।

খরচ কম হওয়ায় এখনো খুলনার বড়বাজার থেকে নদীপথে বিভিন্ন এলাকায় পণ্য আনা-নেওয়া হয়। মালবাহী ট্রলার ভেড়ার জন্য নির্ধারিত রয়েছে কয়েকটি নৌ ঘাট। সব থেকে বেশি মালামাল বহন করা হয় তুলাপট্টি ঘাট থেকে।

শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ৬ দিনই এই ঘাট ব্যবহার করেন দূরদূরান্তের ব্যবসায়ীরা। তবে সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রিত তুলাপট্টি ঘাট যেন ভাগাড়ে পরিণত। ছোট্ট একটি পন্টুনে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শ্রমিকরা।

শতবছরের রকেট ঘাট পরিচর্যার অভাবে এখন বন্ধ। সেখানে পড়ে আছে পুরনো একটি পন্টুন। বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ন্ত্রিত ৪ থেকে ৭ নম্বর ঘাট ভাঙনের কারণে আগের তুলনায় কমেছে পণ্য খালাস।

খুলনার নদী কেন্দ্রিক ঘাটগুলোর এমন বেহাল অবস্থার কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ীরা। দিনের পর দিন শ্রমিকদের সাথে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এসব কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন অনেকেই। প্রতিটি ঘাট থেকে টোল আদায় করা হলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সংস্কার।

পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি বেশকিছু ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য রূপসা ঘাট। একসময় এটি নিয়ন্ত্রণ করত খুলনা সিটি করপোরেশন- এখন তা আদালতের নির্দেশে নিয়ন্ত্রণ করছে বিআইডব্লিউটিএ। জরাজীর্ণ পন্টুনে ঘটছে দুর্ঘটনা। জেলখানা ও কালীবাড়ি ঘাটের অবস্থাও বেহাল।

১৪ আগস্টের আগ পর্যন্ত রূপসা খেয়াঘাটের রাজস্ব নিতো সিটি করপোরেশন। গেল দুই অর্থবছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও নেই সংস্কারের উদ্যোগ। এছাড়া জুতাপট্টি ও কাচারি ঘাট থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করে করপোরেশন। এরমধ্যে শুধু তুলাপট্টি ঘাটে সম্প্রতি একটি পন্টুন স্থাপন করেছে করপোরেশন।

খুলনা সিটি করপোরেশন সম্পত্তি কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দিন বলেন, বড় বাজারের দুটি ঘাট আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। একটি হলো নড়াইল কাছারি ঘাট, আরেকটি হচ্ছে জুতাপট্টি ঘাট। যথাযথভাবে একবারে নতুন পন্টুন। পন্টুনগুলো আমরা মেরামত না পরিবর্তন করে নতুন পন্টুন দিয়েছি।’

গেল আগস্টে আদালতের নির্দেশে রূপসা খেয়াঘাট নিয়ন্ত্রণ পায় বিআইডব্লিউটিএ। কর্মকর্তারা জানান, চলতি মাসেই নতুন পন্টুন দেওয়াসহ রূপসা ঘাটের উন্নয়নে প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

খুলনা নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপ-পরিচালক মোহা. মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা কিছু সংস্কার কাজ করেছি। আমরা আশা করছি এই ২৫ তারিখের মধ্যে দুটি ঘাটে আমরা নতুন পন্টুন স্থাপন করব।’

বর্তমানে খুলনা সিটিতে ২৮টি ঘাট রয়েছে। যার মধ্যে ২টি সিটি করপোরেশন, ১৩টি বিআইডব্লিউটিএ, ৮টি জেলা পরিষদ, ৫টি ঘাট চলছে ব্যক্তি মালিকানায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

খুলনায় অরক্ষিত নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা

আপডেট সময় : ০১:১০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

খুলনায় অরক্ষিত পড়ে আছে বেশিরভাগ নৌ ঘাট। মালামাল ও যাত্রী ওঠানামায় দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে নৌ ঘাট ব্যবহারকারীদের। এতে নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। একইসাথে বিভিন্ন ঘাটের কর্তৃত্ব নিয়ে সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিএ’র দ্বন্দ্ব তো আছেই।

খুলনার কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ভৈরবের ঢেউ শতবছরের বেশি সময় ধরে নৌপথের ব্যবসার অন্যতম রুট। এই নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে দক্ষিণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কেন্দ্র বড়বাজার। ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা এই বাজার এখন আরো প্রশস্ত হয়েছে, বেড়েছে পরিধি।

খরচ কম হওয়ায় এখনো খুলনার বড়বাজার থেকে নদীপথে বিভিন্ন এলাকায় পণ্য আনা-নেওয়া হয়। মালবাহী ট্রলার ভেড়ার জন্য নির্ধারিত রয়েছে কয়েকটি নৌ ঘাট। সব থেকে বেশি মালামাল বহন করা হয় তুলাপট্টি ঘাট থেকে।

শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ৬ দিনই এই ঘাট ব্যবহার করেন দূরদূরান্তের ব্যবসায়ীরা। তবে সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রিত তুলাপট্টি ঘাট যেন ভাগাড়ে পরিণত। ছোট্ট একটি পন্টুনে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শ্রমিকরা।

শতবছরের রকেট ঘাট পরিচর্যার অভাবে এখন বন্ধ। সেখানে পড়ে আছে পুরনো একটি পন্টুন। বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ন্ত্রিত ৪ থেকে ৭ নম্বর ঘাট ভাঙনের কারণে আগের তুলনায় কমেছে পণ্য খালাস।

খুলনার নদী কেন্দ্রিক ঘাটগুলোর এমন বেহাল অবস্থার কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ীরা। দিনের পর দিন শ্রমিকদের সাথে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এসব কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন অনেকেই। প্রতিটি ঘাট থেকে টোল আদায় করা হলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সংস্কার।

পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি বেশকিছু ঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার হয়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য রূপসা ঘাট। একসময় এটি নিয়ন্ত্রণ করত খুলনা সিটি করপোরেশন- এখন তা আদালতের নির্দেশে নিয়ন্ত্রণ করছে বিআইডব্লিউটিএ। জরাজীর্ণ পন্টুনে ঘটছে দুর্ঘটনা। জেলখানা ও কালীবাড়ি ঘাটের অবস্থাও বেহাল।

১৪ আগস্টের আগ পর্যন্ত রূপসা খেয়াঘাটের রাজস্ব নিতো সিটি করপোরেশন। গেল দুই অর্থবছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও নেই সংস্কারের উদ্যোগ। এছাড়া জুতাপট্টি ও কাচারি ঘাট থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করে করপোরেশন। এরমধ্যে শুধু তুলাপট্টি ঘাটে সম্প্রতি একটি পন্টুন স্থাপন করেছে করপোরেশন।

খুলনা সিটি করপোরেশন সম্পত্তি কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দিন বলেন, বড় বাজারের দুটি ঘাট আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। একটি হলো নড়াইল কাছারি ঘাট, আরেকটি হচ্ছে জুতাপট্টি ঘাট। যথাযথভাবে একবারে নতুন পন্টুন। পন্টুনগুলো আমরা মেরামত না পরিবর্তন করে নতুন পন্টুন দিয়েছি।’

গেল আগস্টে আদালতের নির্দেশে রূপসা খেয়াঘাট নিয়ন্ত্রণ পায় বিআইডব্লিউটিএ। কর্মকর্তারা জানান, চলতি মাসেই নতুন পন্টুন দেওয়াসহ রূপসা ঘাটের উন্নয়নে প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

খুলনা নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের উপ-পরিচালক মোহা. মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা কিছু সংস্কার কাজ করেছি। আমরা আশা করছি এই ২৫ তারিখের মধ্যে দুটি ঘাটে আমরা নতুন পন্টুন স্থাপন করব।’

বর্তমানে খুলনা সিটিতে ২৮টি ঘাট রয়েছে। যার মধ্যে ২টি সিটি করপোরেশন, ১৩টি বিআইডব্লিউটিএ, ৮টি জেলা পরিষদ, ৫টি ঘাট চলছে ব্যক্তি মালিকানায়।