‘শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে উচ্চ আদালতের ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়েছে’
- আপডেট সময় : ০৪:৪৯:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
বিচার বিভাগের হাতে অসীম ক্ষমতা থাকলেও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে উচ্চ আদালতের ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আজ (সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর) সকালে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ আয়োজিত গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ বিচার বিভাগ প্রসঙ্গ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ঐক্যমত শক্ত থাকলে পরবর্তীতে কোনো রাজনৈতিক দল আসলেও যেসব বিষয়ে সংস্কার আসবে তা কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না।’
সংলাপে আলোচকের মধ্যে ছিলেনঃ অন্তরবর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়-এর উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; সিজিএস- এর চেয়ার মুনিরা খান; বিএনপির সহসভাপতি এডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী; বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম; সাবেক জেলা জজ এস এম বদরুল ইসলাম; বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, আতাউর রহমান ঢালী; ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড বোরহান উদ্দিন খান; সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী; সাবেক জেলা জজ ইকতেদার আহমেদ; খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট রোকসানা খন্দকার; বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন; সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান; বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও রাজনীতিবিদ মোশারাফ আহমেদ ঠাকুর; অধিকারকর্মী দিদারুল আলম; জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মোল্লা মহাম্মদ ফারুক আহসান; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ও অধিকার কর্মী রাফিদ আজাদ সৌমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ও অধিকার কর্মী ফাহিন রহমান অংকিতা। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সিজিএস- এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, বিচার বিভাগের দুর্দশা নিয়ে আমি বেশ মনঃকষ্টে আছি। উচ্চ আদালতে সকল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এই ক্ষমতা ব্যবহার করেছে ফ্যাসিস্ট সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য, সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করার জন্য। এই ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে। আওয়ামী সময়ে এমন অবস্থা ছিল যে রায় হওয়ার আগেই বছরের পর বছর ও মাসের পর মাস জেল খাটতে হয়। দেশে ৫ বছর পর পর সঠিক নির্বাচন হলে এমন হত না। আমাদের ঝামেলা মুক্ত ক্ষমতা স্থানান্তর প্রক্রিয়া থাকতে হবে। বিচার বিভাগের কমিশন তৈরি করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। উচ্চ আদালত দুর্নীতিগ্রস্ত হলে নিম্ন আদালত স্বাধীন হবে না। ভাল বিচারপতি নিয়োগ দিতে হবে। উচ্চ আদালতে আলাদা সেক্রেটারিয়েট করা দরকার। স্থায়ী প্রসিকিউশন করা দরকার। ঐক্যমত্য থাকলে আগামীতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন আইন বদলাতে পারবে না। সংস্কার ছাড়া আমাদের গতি নেই। রাষ্ট্রপতি এই পর্যন্ত স্বাধীনভাবে বিচারপতি নিয়োগ করতে পারে নি। সরকার প্রধান তা করে থাকে। এই দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
এদিকে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থা নিয়োগে দলীয় কাউকে নিয়োগ দেয়া যাবে না। পূর্বের সরকারের আমলে প্রধান বিচারপতিদের যে কাজ সে কাজ বাদ দিয়ে দলীয় কাজেও ব্যস্ত রাখা হতো।’