যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি প্রতিবেশি দেশ জর্ডানের
- আপডেট সময় : ০৩:৪০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রতিবেশি দেশ জর্ডান। এছাড়া, সিরিয়ার বন্দর ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আশ্বাস দিয়েছে আরব রাষ্ট্র কাতার। এদিকে, কুর্দি মিলিশিয়াদের সিরিয়া থেকে বিতাড়িত করতে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। গোলান মালভূমির বাফার জোনে প্রবেশ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। আসাদ সরকারের পতনের পর সম অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছে সিরিয়ার নারীরা।
ইরাক, ইরান, তুরস্ক, আর্মেনিয়া ও সিরিয়ায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কুর্দিরা। সিরিয়ার নাটকীয় রাজনৈতিক পরিবর্তনে এবার শঙ্কায় পড়েছে কুর্দিদের ভবিষ্যৎ। সিরিয়ার চার ভাগের এক অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, বাকি অংশ হায়াত তাহরির আল শামের হাতে। কুর্দিদের বিরুদ্ধে তুর্কি-সমর্থিত গোষ্ঠীও মোতায়েন আছে।
সিরিয়ার মাটি থেকে কুর্দি ওয়াইপিজি মিলিশিয়াদের বিতাড়িত করতে অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। গোষ্ঠীটি তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সন্ত্রাসী তালিকায় আছে। ক্ষমতাসীন বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার কথাও বলেন তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, ‘সিরিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের কোনো ঠাঁই হবে না। বেসামরিক নাগরিকদের এক চুল ক্ষতি না করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাবে তুরস্ক। সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের উদ্যোগকে তুরস্ক স্বাগত জানিয়েছে। এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করে আসছে পশ্চিমারা।’
দেশ গঠনে কূটনৈতিক যোগাযোগ বিস্তৃত করতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান আহমেদ আল শারা। সিরিয়ার পুনর্গঠনে ভাইয়ের মতো পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে জর্ডান। দামেস্কে আল-শারার সঙ্গে বৈঠকের পর জর্ডান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান আল-সাফাদি বলেন, একটি সুন্দর, স্থিতিশীল ও নিরাপদ সিরিয়া গঠনের মাধ্যমে জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটানো হবে।
এছাড়া আরব রাষ্ট্র কাতারও সিরিয়ার দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আহমেদ আল শারা জানান, সিরিয়া জ্বালানি ও বন্দরসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে সম্মত হয়েছে কাতার।
সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান আহমেদ আল-শারা বলেন, ‘কাতার সবসময় সিরিয়ার বন্ধু ছিল। বিপ্লবের চূড়ান্ত মুহূর্ত পর্যন্ত তারা আমাদের পাশে ছিল। সিরিয়ার বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সিরিয়ার ভূখণ্ডে বড় পরিসরে বিনিয়োগ করার আশ্বাস দিয়েছে কাতার।’
স্বৈরশাসকের পতন হলেও নারী অধিকার রক্ষা হয়নি সিরিয়ায়। নতুন প্রশাসনের কাছে নিজেদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন নারীরা। এ সময় কুর্দিদের উচ্ছেদের নামে তুর্কি দখলদারিত্বের নিন্দা জানান তারা।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘বৈষম্য দূর করে সকল নারীদের স্বাধীনতা ও তাদের অধিকারের দাবি করছি।’
আরেকজন বলেন, ‘সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের কাছে নারীদের অধিকার রক্ষার দাবি জানাচ্ছি। আশা করি তারা আমাদের দাবির বিষয়ে সম্মান দেখাবে।’
সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান আহমেদ আল শারা বলেছেন, এই মুহূর্তে নতুন করে কারও সঙ্গে যুদ্ধে নয়, আগে দেশ গঠন। এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে গোলান মালভূমির বাফার জোনে প্রবেশ করছে ইসরাইলি সেনারা। যদিও ইসরাইলের দাবি, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।