চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচরে মেঘনা নদীতে সার বহনকারী এমভি আল বাখেরা জাহাজে সাত জন খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ এর সদস্যরা।
আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াসহ সবাইকে হত্যা করে।
সূত্রে জানা গেছে, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন ভাতা দিতেন না। এমনকি তিনি দুর্ব্যবহারও করতেন। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান সবাইকে হত্যা করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও জানা গেছে, জাহাজের বাজার করার ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।
র্যাব দাবি করে বলে, হত্যার দিন রাতের খাবার রান্নার সময় ইরফান জাহাজের বাবুর্চির অগোচরে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন। সেই খাবার খেয়ে সবাই অচেতন হয়ে পড়লে হাতে গ্লাভস পড়ে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন ইরফান।
মেজর সাকিব হোসেন জানান, ২৩ ডিসেম্বরই চাঁদপুরের হাইমচর থেকে আল বাখেরা জাহাজ থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে শৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তারাও মারা যান। একমাত্র জীবিত জাহাজের কর্মচারী জুয়েলের দেওয়া তথ্য অনুসারে নিবিড় তদন্তে র্যাব ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাটের চিতলমারি থেকে কাশ মন্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এরপরই তাকে নিয়ে আসা হয় র্যাব কুমিল্লা সিপিসি ২–এর কার্যালয়ে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ এই সাতজনকে খুনের ঘটনা র্যাবের কাছে স্বীকার করে। তবে ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনো কারণ কিংবা কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেপ্তার আকাশ বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মন্ডলের ছেলে। তাঁর বয়স ২৬ বছর। সাতজনকে খুনের ঘটনায় চাঁদপুরে মামলা করেছেন জাহাজের মালিক মাহবুব মোর্শেদ।