জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় নৌ-পরিবহন খাত ঘিরে আতঙ্ক
- আপডেট সময় : ০৩:২৮:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
চাঁদপুরে মেঘনায় জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নৌ-পরিবহন খাতে। চার মাসে দেশে জাহাজে অন্তত ৫২টি চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন শ্রমিকরা। নৌপথে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুট হয়ে উঠেছে হাতিয়া, চাঁদপুর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও আনোয়ারা এলাকা। সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে বছরে ৭ থেকে ১০ কোটি টন খোলা পণ্য পরিবহন হয় নৌপথে। এপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে প্রভাব পড়বে শিল্প আর অর্থনীতিতে।
দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশই হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। সংশ্লিষ্টরা জানান, কর্ণফুলী নদীর তীরের ১৩৭ বছর বয়সী এ বন্দর থেকে ছোট বড় মিলিয়ে ২ হাজার লাইটার জাহাজ বছরে অন্তত ৭-১০ কোটি টন পণ্য পরিবহন করে। যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত অন্তত ৩০ হাজার শ্রমিক।
গেলো ২২ ডিসেম্বর চাঁদপুরে চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জগামী সার বোঝাই এমভি আল বাখেরা জাহাজে ৭ জনকে নৃশংসভাবে হত্যার পর আতঙ্কিত নৌশ্রমিকরা।
লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি, গেলো চার মাসে ছোট বড় মিলিয়ে অন্তত ৫২টি চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি খোয়া গেছে জাহাজের যন্ত্রপাতি, মালামাল ও নাবিক-শ্রমিকদের ব্যক্তিগত সম্পদ।
বাংলাদেশ লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে আমরা যখন জাহাজ নিয়ে রুটে চলাচল করি তখন পাশাপাশি কোনো ট্রলার বা নৌকা যেতেই পারে। কিন্তু হঠাৎ করে এসে গায়ে চাপিয়ে আকস্মিকভাবে উঠে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে একটা ত্রাসের সৃষ্টি করে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং নাবিকদের মারধর করে।’
শ্রমিকরা জানান, হাতিয়া হয়ে চাঁদপুর পর্যন্ত অংশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এর পাশাপাশি মহেশখালী কুতুবদিয়া আনোয়ারা অংশেও নিয়মিত চলে ডাকাতি।
বাংলাদেশ লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দীন বলেন, ‘এক মাইল, দুই মাইল পরপর যখনই তারা সুবিধা পাচ্ছে সেখানে তারা অতর্কিতভাবে আক্রমণ করছে। জাহাজ জিম্মি করে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে পাঁচ দিন, সাত দিন তাদের মতো করে জাহাজ ভর্তি পণ্য খালাস করে নিয়ে যায়।’
তবে, এসব ঘটনা কেবল ডাকাতি হিসেবে মেনে নিতে নারাজ নৌ পুলিশ। একই সাথে প্রতিটি পয়েন্টে টহল বাড়ানোর কথাও জানায় সংস্থাটি।
চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে যতটুকু তথ্য আছে ঐরকম কোনো অনিরাপদ জায়গা আমাদের আছে বলে মনে হচ্ছে না। পুরোটা জায়গাই আমরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছি।’
নৌপথ অনিরাপদ হয়ে উঠলে চাপ বাড়বে সড়ক পথে। যাতে খরচ বাড়ার পাশাপাশি বেকার হয়ে যাবে বহু শ্রমিক। তাই দেশে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে বঙ্গোপসাগরে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন ও নৌ পথে টহল বাড়ানোর দাবি খাত সংশ্লিষ্টদের।