ঢাকা ০২:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আরব জোটের আহ্বান

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে দেশটির ওপর আনা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আরব জোট গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের প্রধান। গতবার (বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর) কুয়েতে কাউন্সিলের ৪৬তম বৈঠকে আরব দেশের নেতারা আরও বলেন, আঞ্চলিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে সিরিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। এদিকে সিরিয়ায় নতুন সরকারের উত্থান ও আসাদের পতনের পর আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে তেহরান।

সিরিয়ার হোমজ, তার্তুস ও লাতাকিয়া শহরে প্রবেশ করছে আসাদ বিরোধী হায়াত তাহরির আল শামের সশস্ত্র যোদ্ধারা। ভারি অস্ত্রশস্ত্র আর গাড়ির বহর দেখে মনে হতে পারে যুদ্ধের ডঙ্কা বাজছে গোটা সিরিয়াজুড়ে।

গেল বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সংখ্যালঘু আলাউইত সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় স্থাপনাতে আগুন দেয়ার প্রতিবাদে এই তিন শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার ঐ এলাকাগুলোতে সংগঠনের কর্মীদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্রোহী এই সংগঠনটি। যদিও আসাদ বিরোধীদের সাথে কোনো কোনো ক্ষেত্রে একমত হতে পারছেন না স্থানীয়রা।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘আসাদ সমর্থক ও পুরানো কিছু সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে সিরীয় নাগরিকদের রক্ষা করা জরুরি। আমরা সেটাই করছি। এখনও অনেকেই এই অঞ্চলে শান্তি ভঙ্গের অপচেষ্টা করছে।’

অন্য একজন স্থানীয় বলেন, ‘আমাদের মূল দ্বন্দ্ব আসাদ বিরোধীদের সাথে। আলাউইত আর খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা আমাদের ভাইয়ের মতো।’

একদিকে ইসরাইল অন্যদিকে রাশিয়া- এই দুই দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা নিয়ে যখন টালমাটাল সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার, তখন রাজধানী দামেস্কে ইরাকি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হামিদ আল-শাত্রির সাথে সাক্ষাৎ করেছেন আসাদবিরোধী প্রধান বিদ্রোহীগোষ্ঠী এইচটিএস এর প্রধান আবু মুহাম্মদ আল জুলানি। ইরাক সরকারের মুখপাত্র বাসিম-আল আওয়াদির বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সীমান্তে আধিপত্য ধরে রাখা ও দেশে স্থিতিশীলতা আনতে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা।

আল জাজিরা বলছে, সিরিয়ায় নতুন সরকারের উত্থান ও আসাদের পতনের পর আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে তেহরান। ক্ষমতাচ্যুত বাসার আল আসাদ ক্ষমতা ধরে রাখতে রাশিয়ার পর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করেছিলেন ইরানের ওপর। বিশেষ করে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নিষ্ক্রিয়তা আসাদের পতনের অন্যতম কারণ ছিল এমন আলোচনা উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান যখন আসাদবিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার আশা করে, ভবিষ্যতেও মস্কো তাদের দ্বিপক্ষীয় ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ধরে রাখবে। ক্রেমলিনও বিষয়টিকে একইভাবে বিবেচনা করছে বলে নিশ্চিত করেন ল্যাভরভ।

এদিকে সিরিয়ার নতুন সরকার ব্যবস্থা ও দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কুয়েতে গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের ৪৬তম বৈঠকে অংশ নেন আরব দেশের প্রতিনিধিরা। যেকোনো ধরনের স্বৈরাচারী ও সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক নেতাদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান জোট প্রধান।

গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল জসিম আল-বুদাউই বলেন, ‘সিরিয়া সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার বিষয়ে কাউন্সিলের সদস্যরা সম্মত হয়েছেন। সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও বিশৃঙ্খলা মোকাবিলা করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। চরমপন্থি আচরণ, ধর্মান্ধতা ও যে কোনো ধরনের উস্কানি বন্ধ করে জাতি বৈচিত্র্য ও অন্যান্য গোষ্ঠীর নেতাদের মতামত গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে।’

অন্যদিকে গোলান মালভূমিতে সেনা মোতায়েনের পর এবার অঞ্চলটিতে সেনাঘাঁটি বা মিলিটারি পোস্ট নির্মাণের পথে অগ্রসর হচ্ছে তেল আবিব। শীতকাল জুড়ে সেনা সক্ষমতা জানান দিতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে বাফার জোনের ঘাঁটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত এসেছে বলে দাবি সিরীয় গণমাধ্যমের।

নিউজটি শেয়ার করুন

সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আরব জোটের আহ্বান

আপডেট সময় : ০৯:৫১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে দেশটির ওপর আনা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আরব জোট গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের প্রধান। গতবার (বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর) কুয়েতে কাউন্সিলের ৪৬তম বৈঠকে আরব দেশের নেতারা আরও বলেন, আঞ্চলিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে সিরিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। এদিকে সিরিয়ায় নতুন সরকারের উত্থান ও আসাদের পতনের পর আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে তেহরান।

সিরিয়ার হোমজ, তার্তুস ও লাতাকিয়া শহরে প্রবেশ করছে আসাদ বিরোধী হায়াত তাহরির আল শামের সশস্ত্র যোদ্ধারা। ভারি অস্ত্রশস্ত্র আর গাড়ির বহর দেখে মনে হতে পারে যুদ্ধের ডঙ্কা বাজছে গোটা সিরিয়াজুড়ে।

গেল বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সংখ্যালঘু আলাউইত সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় স্থাপনাতে আগুন দেয়ার প্রতিবাদে এই তিন শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার ঐ এলাকাগুলোতে সংগঠনের কর্মীদের পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিদ্রোহী এই সংগঠনটি। যদিও আসাদ বিরোধীদের সাথে কোনো কোনো ক্ষেত্রে একমত হতে পারছেন না স্থানীয়রা।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘আসাদ সমর্থক ও পুরানো কিছু সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে সিরীয় নাগরিকদের রক্ষা করা জরুরি। আমরা সেটাই করছি। এখনও অনেকেই এই অঞ্চলে শান্তি ভঙ্গের অপচেষ্টা করছে।’

অন্য একজন স্থানীয় বলেন, ‘আমাদের মূল দ্বন্দ্ব আসাদ বিরোধীদের সাথে। আলাউইত আর খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা আমাদের ভাইয়ের মতো।’

একদিকে ইসরাইল অন্যদিকে রাশিয়া- এই দুই দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা নিয়ে যখন টালমাটাল সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার, তখন রাজধানী দামেস্কে ইরাকি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হামিদ আল-শাত্রির সাথে সাক্ষাৎ করেছেন আসাদবিরোধী প্রধান বিদ্রোহীগোষ্ঠী এইচটিএস এর প্রধান আবু মুহাম্মদ আল জুলানি। ইরাক সরকারের মুখপাত্র বাসিম-আল আওয়াদির বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সীমান্তে আধিপত্য ধরে রাখা ও দেশে স্থিতিশীলতা আনতে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা।

আল জাজিরা বলছে, সিরিয়ায় নতুন সরকারের উত্থান ও আসাদের পতনের পর আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে তেহরান। ক্ষমতাচ্যুত বাসার আল আসাদ ক্ষমতা ধরে রাখতে রাশিয়ার পর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করেছিলেন ইরানের ওপর। বিশেষ করে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর নিষ্ক্রিয়তা আসাদের পতনের অন্যতম কারণ ছিল এমন আলোচনা উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান যখন আসাদবিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার আশা করে, ভবিষ্যতেও মস্কো তাদের দ্বিপক্ষীয় ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ধরে রাখবে। ক্রেমলিনও বিষয়টিকে একইভাবে বিবেচনা করছে বলে নিশ্চিত করেন ল্যাভরভ।

এদিকে সিরিয়ার নতুন সরকার ব্যবস্থা ও দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কুয়েতে গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের ৪৬তম বৈঠকে অংশ নেন আরব দেশের প্রতিনিধিরা। যেকোনো ধরনের স্বৈরাচারী ও সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক নেতাদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান জোট প্রধান।

গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল জসিম আল-বুদাউই বলেন, ‘সিরিয়া সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করার বিষয়ে কাউন্সিলের সদস্যরা সম্মত হয়েছেন। সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও বিশৃঙ্খলা মোকাবিলা করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। চরমপন্থি আচরণ, ধর্মান্ধতা ও যে কোনো ধরনের উস্কানি বন্ধ করে জাতি বৈচিত্র্য ও অন্যান্য গোষ্ঠীর নেতাদের মতামত গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে।’

অন্যদিকে গোলান মালভূমিতে সেনা মোতায়েনের পর এবার অঞ্চলটিতে সেনাঘাঁটি বা মিলিটারি পোস্ট নির্মাণের পথে অগ্রসর হচ্ছে তেল আবিব। শীতকাল জুড়ে সেনা সক্ষমতা জানান দিতে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে বাফার জোনের ঘাঁটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত এসেছে বলে দাবি সিরীয় গণমাধ্যমের।