ঢাকা ০৮:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যুদ্ধ-পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নতুন করে যুদ্ধ-পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। সম্প্রতি সীমান্তে দুদেশের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে হতাহত হয়েছে বহু মানুষ। ২০ বছরের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে হুট করেই দেখা দিয়েছে টানাপড়েন। ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণকে পাকিস্তান স্বাগত জানালেও এখন তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে ডুরান্ড লাইন আন্তর্জাতিক সীমানা হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছে ১৯৪৭ সাল থেকে। তবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর আফগান সরকার এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। এই সীমানা দুই পাশের পশতুনদের বিভক্ত করে রেখেছে। যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানদের ক্ষোভ জমেছে দীর্ঘকাল ধরে।

দুই দশক লড়াই সংগ্রামের পর ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসে তালেবান গোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের সময় তালেবান নেতা ও যোদ্ধারা প্রতবেশি দেশ পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল। তালেবানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা পড়াশোনা করেছেন পাকিস্তানে। যা তাদের সংগঠিত ও টিকে থাকতে সহায়তা করেছে।

তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণকে এ অঞ্চলের বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছিল পাকিস্তান। তালেবানকে মিত্র হিসেবে স্বাগত জানালেও, তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছুই পাচ্ছিল না পাকিস্তান। অন্যদিকে তালেবান সরকারও পাকিস্তানের ওপর নির্ভরতা কমাতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

২০২২ সাল থেকে পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও পুলিশ বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে। অধিকাংশ হামলার দায় স্বীকার করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি। তালেবান ও টিটিপির মধ্যে সখ্যতা বহু বছর ধরে।

টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানালেও তালেবান সরকার তা কানে তুলেনি। তাদের বক্তব্য এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এমনিতেই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় চাপে আছে পাকিস্তান সরকার।

চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানি বিমান হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালায় তালেবান। এতে হতাহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। পাকিস্তান বলছে, জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি নিহতদের মধ্যে টিটিপির কোনো সদস্য ছিল না।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘পাকিস্তানি হামলায় সব বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন। যা খুবই দুঃখজনক। এ অঞ্চলে টিটিপির কোনো সদস্য নেই।’

আরেকজন বলেন, ‘রাতে হুট করেই আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা শুরু হয়। বোমার আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে যায় ঘরবাড়ি।’

বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে পাকিস্তানের সামরিক পদক্ষেপ আফগান জনগণের মধ্যে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলবে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, টিটিপির বিরুদ্ধে আফগানিস্তান ব্যবস্থা না নিলে তাদের অভিযানও থামবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুদ্ধ-পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান

আপডেট সময় : ০১:২২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নতুন করে যুদ্ধ-পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। সম্প্রতি সীমান্তে দুদেশের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে হতাহত হয়েছে বহু মানুষ। ২০ বছরের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে হুট করেই দেখা দিয়েছে টানাপড়েন। ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণকে পাকিস্তান স্বাগত জানালেও এখন তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে ডুরান্ড লাইন আন্তর্জাতিক সীমানা হিসেবে স্বীকৃত হয়ে আসছে ১৯৪৭ সাল থেকে। তবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর আফগান সরকার এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। এই সীমানা দুই পাশের পশতুনদের বিভক্ত করে রেখেছে। যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগানদের ক্ষোভ জমেছে দীর্ঘকাল ধরে।

দুই দশক লড়াই সংগ্রামের পর ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসে তালেবান গোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের সময় তালেবান নেতা ও যোদ্ধারা প্রতবেশি দেশ পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল। তালেবানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা পড়াশোনা করেছেন পাকিস্তানে। যা তাদের সংগঠিত ও টিকে থাকতে সহায়তা করেছে।

তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণকে এ অঞ্চলের বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছিল পাকিস্তান। তালেবানকে মিত্র হিসেবে স্বাগত জানালেও, তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছুই পাচ্ছিল না পাকিস্তান। অন্যদিকে তালেবান সরকারও পাকিস্তানের ওপর নির্ভরতা কমাতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

২০২২ সাল থেকে পাকিস্তানি নিরাপত্তা ও পুলিশ বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে। অধিকাংশ হামলার দায় স্বীকার করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি। তালেবান ও টিটিপির মধ্যে সখ্যতা বহু বছর ধরে।

টিটিপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানালেও তালেবান সরকার তা কানে তুলেনি। তাদের বক্তব্য এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এমনিতেই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় চাপে আছে পাকিস্তান সরকার।

চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানি বিমান হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালায় তালেবান। এতে হতাহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। পাকিস্তান বলছে, জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি নিহতদের মধ্যে টিটিপির কোনো সদস্য ছিল না।

স্থানীয়দের একজন বলেন, ‘পাকিস্তানি হামলায় সব বেসামরিক মানুষ মারা গেছেন। যা খুবই দুঃখজনক। এ অঞ্চলে টিটিপির কোনো সদস্য নেই।’

আরেকজন বলেন, ‘রাতে হুট করেই আমাদের বাড়ি লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা শুরু হয়। বোমার আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে যায় ঘরবাড়ি।’

বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে পাকিস্তানের সামরিক পদক্ষেপ আফগান জনগণের মধ্যে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলবে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, টিটিপির বিরুদ্ধে আফগানিস্তান ব্যবস্থা না নিলে তাদের অভিযানও থামবে না।