ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: তারেক রহমান

নীলফামারী প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি একা নয়, সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। যেভাবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে, তেমনি দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। স্বৈরাচার এ দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। যদিও স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে আছে। তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপের দুবাছুরি দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসা মাঠে বিএনপির এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে র‌্যাবের হাতে ক্রসফায়ারে নিহত নীলফামারী সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর পরিবারের জন্য নবনির্মিত বাড়ির চাবি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। গোলাম রব্বানীরা এ কথাগুলোই বলতে চেয়েছিল, কিন্তু সেদিনকার সেই স্বৈরাচার গোলাম রব্বানীদের কথা বলতে দেয়নি, শুনতে চায়নি। এ কারণে তারা হাজার হাজার গোলাম রব্বানীকে হত্যা করেছে, লাখ লাখ পরিবারকে নির্যাতিত করেছে। গত ১৬ বছরে বিএনপির বহু নেতাকর্মীর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের হাতে নীলফামারীর বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর মতো বহু সহকর্মী খুন হয়েছেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী খুন হয়েছে। আমরা এই নির্যাতনের জবাব তাদের মতো করে দেব না। তারা অধম বলে আমরাও অধম হব না। আমরা সকল নির্যাতনের জবাব ৩১ দফা সফল করার মাধ্যমে দেব।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দল ও মানুষের মাঝে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সেই মতপার্থক্য এমন কোনো পর্যায়ে না পৌঁছায়, যেখানে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশকে যদি আগামী দিনে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে। তা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হোক, তা পৌরসভার নির্বাচন হোক, সংসদ নির্বাচন হোক, মসজিদ কমিটির নির্বাচন হোক, বা কোনো প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হোক, সবক্ষেত্রেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলে আমাদের মধ্যে থেকেই যোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। যোগ্য মানুষ বেরিয়ে আসবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের আস্থা, আশা রক্ষা করাই এখন আমাদের বড় কাজ। বিএনপির কর্মী হিসেবে আপনি মানুষের কাছ থেকে যে সম্মান পান, সেটাকে ধরে রাখতে হবে। আমাদের প্রতি নির্যাতনের জবাব হিংসায় নয়, ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দিতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রেখে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের পুঁজি হচ্ছে জনগণের আস্থা, বিশ্বাস, ভালোবাসা। আপনি যদি অন্য কিছুকে পুঁজি ভাবেন, অন্য কিছুতে মনোনিবেশ করেন, তাহলে আজ, কাল, পরশু আপনার সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সব কিছু ধ্বংস করেছে। জোর করে ক্ষমতায় টিকে ছিল। মানুষের অধিকারকে হরণ করেছিল। আজ কি তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে? পারেনি। তাই আপনারা জনগণের আস্থা ধরে রাখতে কাজ করবেন।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) আসাদুল হাবিব দুলু, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ও দলের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জাসান সামু, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার, সহ-সভাপতি মীর সেলিম ফারুক, মোস্তফা প্রধান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, বিএনপি আইনজীবী ফোরাম নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডঃ আবু মো. সোয়েম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান কোকো, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম দোলন, নীলফামারী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আল মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় বাবার হত্যার বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন নিহত গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জাহান রিক্তা। তারেক রহমানের পক্ষে ঘরের চাবি নিহত গোলাম রব্বানীর বিধবা স্ত্রীর হাতে তুলে দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও রুহুল কবির রিজভী। এ সময় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রংপুর বিভাগের নিহত ১২ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: তারেক রহমান

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি একা নয়, সব রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। যেভাবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে, তেমনি দেশকে পুনর্গঠন করতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। স্বৈরাচার এ দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। যদিও স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা এখনো দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে আছে। তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপের দুবাছুরি দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসা মাঠে বিএনপির এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে র‌্যাবের হাতে ক্রসফায়ারে নিহত নীলফামারী সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানীর পরিবারের জন্য নবনির্মিত বাড়ির চাবি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হস্তান্তর করেন আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। গোলাম রব্বানীরা এ কথাগুলোই বলতে চেয়েছিল, কিন্তু সেদিনকার সেই স্বৈরাচার গোলাম রব্বানীদের কথা বলতে দেয়নি, শুনতে চায়নি। এ কারণে তারা হাজার হাজার গোলাম রব্বানীকে হত্যা করেছে, লাখ লাখ পরিবারকে নির্যাতিত করেছে। গত ১৬ বছরে বিএনপির বহু নেতাকর্মীর বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের হাতে নীলফামারীর বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর মতো বহু সহকর্মী খুন হয়েছেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী খুন হয়েছে। আমরা এই নির্যাতনের জবাব তাদের মতো করে দেব না। তারা অধম বলে আমরাও অধম হব না। আমরা সকল নির্যাতনের জবাব ৩১ দফা সফল করার মাধ্যমে দেব।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দল ও মানুষের মাঝে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সেই মতপার্থক্য এমন কোনো পর্যায়ে না পৌঁছায়, যেখানে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশকে যদি আগামী দিনে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশেকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে। তা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হোক, তা পৌরসভার নির্বাচন হোক, সংসদ নির্বাচন হোক, মসজিদ কমিটির নির্বাচন হোক, বা কোনো প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন হোক, সবক্ষেত্রেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলে আমাদের মধ্যে থেকেই যোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। যোগ্য মানুষ বেরিয়ে আসবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের আস্থা, আশা রক্ষা করাই এখন আমাদের বড় কাজ। বিএনপির কর্মী হিসেবে আপনি মানুষের কাছ থেকে যে সম্মান পান, সেটাকে ধরে রাখতে হবে। আমাদের প্রতি নির্যাতনের জবাব হিংসায় নয়, ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দিতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রেখে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের পুঁজি হচ্ছে জনগণের আস্থা, বিশ্বাস, ভালোবাসা। আপনি যদি অন্য কিছুকে পুঁজি ভাবেন, অন্য কিছুতে মনোনিবেশ করেন, তাহলে আজ, কাল, পরশু আপনার সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সব কিছু ধ্বংস করেছে। জোর করে ক্ষমতায় টিকে ছিল। মানুষের অধিকারকে হরণ করেছিল। আজ কি তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে? পারেনি। তাই আপনারা জনগণের আস্থা ধরে রাখতে কাজ করবেন।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও আমরা বিএনপি পরিবারের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) আসাদুল হাবিব দুলু, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ও দলের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জাসান সামু, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার, সহ-সভাপতি মীর সেলিম ফারুক, মোস্তফা প্রধান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, বিএনপি আইনজীবী ফোরাম নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডঃ আবু মো. সোয়েম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান কোকো, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম দোলন, নীলফামারী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আল মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় বাবার হত্যার বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন নিহত গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জাহান রিক্তা। তারেক রহমানের পক্ষে ঘরের চাবি নিহত গোলাম রব্বানীর বিধবা স্ত্রীর হাতে তুলে দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ও রুহুল কবির রিজভী। এ সময় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রংপুর বিভাগের নিহত ১২ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।