বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচন আসলেই একটি দেশ (ভারত) ঠিক করে কে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবে। তবে এবার সেই সুযোগ আর নেই। আমাদের তরকারিতে আমরাই লবণ দিবো, আর দেশের জনগণও জানে লবণ দিতে কিভাবে। তাই ভারতকে বলব, আমাদের তরকারিতে লবণ না দিয়ে নিজেদের তরকারিতে লবণ দিন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে জেলা কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন। এসময় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেছেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতের ভূমিকাকে বড় দাবি করেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, যারা দেশের প্রতি ভালোবাসা ও দরদ অনুভব করেন, তারা কখনো দেশ ছেড়ে পালান না। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বিনা অপরাধে ফাঁসির শিকার হয়েছেন, অথচ তারা দেশ ত্যাগ করেননি। কিন্তু সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, কারণ তাদের দেশপ্রেম নেই। জনগণ তাদের বিচার করতে চায়, তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

সভায় ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনাময় দেশ। এখানে আল্লাহ প্রচুর খনিজ সম্পদ দান করেছেন, আর বাতাসও বসবাসের উপযোগী। তবে, যারা দেশ শাসন করেছেন, তারা জনগণের আমানত রক্ষা করেননি এবং তা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছেন। ১৫ বছরে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কারা এসব করেছে, সেটা আপনারা জানেন।

জামায়াত আমির আরও বলেন, আমরা একটি এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সব ধর্মের ও বর্ণের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। দেশে কোনো চাঁদাবাজ, দুষ্কৃতকারী বা দুর্নীতিবাজ থাকবে না, এবং কেউ কোনোভাবে অন্যায়ের শিকার হবে না।

ঠাকুরগাঁও জেলার উন্নয়ন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ঠাকুরগাঁও একটি অন্তর্ভুক্তি জেলা, কিন্তু অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত। এখানে মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করা, একটি মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। আজকের এই ঐতিহাসিক কর্মী সম্মেলন থেকে আমরা ঠাকুরগাঁওবাসীর এসব দাবি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তুলে ধরবো এবং সরকারের কাছে দাবি জানাবো যেন বড় বাজেটের মাধ্যমে এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হয়।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য মাওলানা আব্দুল হাকিম, সাবেক ছাত্রশিবির সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন, জেলা আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলমগীর এবং সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কফিন উদ্দিন আহমেদ।