ভারতের হারে বাংলাদেশি আম্পায়ারের দোষ খুঁজে নিচ্ছেন গাভাস্কাররা
- আপডেট সময় : ০৪:৫৫:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৬৩ বার পড়া হয়েছে
সংবাদ সম্মেলনে যতই রোহিত শর্মা দাবি করুন না কেন, তাঁরা জিততেই চেয়েছিলেন; শেষ দিনে ৯০ ওভারে ৩৪০ রানের লক্ষ্যে ভারত কখনোই জয়ের চেষ্টা করেনি। ঋষভ পন্তের মতো ব্যাটসম্যানও ৩০ এর নিচে স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন। তবু ম্যাচ ড্র করার লক্ষ্যে ব্যর্থ হয়েছে ভারত। ১৫৫ রানে গুটিয়ে ১৮৪ রানে হেরে গেছে সফরকারীরা।
ম্যাচ হারের আগ থেকেই অবশ্য ভারতের সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছেন বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌল্লা সৈকত। ভারতের হয়ে একমাত্র প্রতিরোধ গড়া ইয়াসাসভি জয়সোয়ালকে আউট দিয়েছেন তৃতীয় আম্পায়ার সৈকত।
৩৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারত ধুঁকছিল। এমন অবস্থায় স্বভাববিরুদ্ধ এক জুটি গড়েন জয়সোয়াল ও পন্ত। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য বিখ্যাত দুই বাঁহাতি ৩২.৩ ওভার স্থায়ী জুটিতে ৮৮ রান তোলেন। এর মধ্যে পন্তের ইনিংসটি ছিল বিস্ময়কর। ১০৪ বলের ইনিংসে মাত্র দুই চারে ৩০ রান করেছেন পন্ত।
তবে আউট হওয়ার বেলায় আবার নিজের মতোই আউট হয়েছেন। হাল ছেড়ে দেওয়ার পর্যায়ে চলে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া বল তুলে দিয়েছিল ট্র্যাভিস হেডের হাতে। আর তাঁকেই তুলে মারতে গিয়ে আউট পন্ত। জাদেজা ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান রেড্ডিও আউট হয়ে যান দ্রুত।
এরপর ভারত আর রান নেওয়ার চেষ্টাই করেনি। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা ওয়াশিংটন সুন্দর ও জয়সোয়াল ৪৫ বলে মাত্র ১০ রান তোলেন সপ্তম উইকেট জুটিতে।
দিনের আর মাত্র ২১ ওভার বাকি, এমন সময় ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়া সে সিদ্ধান্ত। প্যাট কামিন্সের একটি স্লো বাউন্সারে হুক করতে গিয়েছিলেন জয়সোয়াল। কিন্তু বল চলে যায় উইকেটকিপারের কাছে। অস্ট্রেলিয়ার জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি মাঠের আম্পায়ার জো উইলসন।
অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার যায় সৈকতের কাছে। ক্যাচ আউটের ক্ষেত্রে দুটি প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেন তৃতীয় আম্পায়ার- স্নিকোমিটার ও হটস্পট। সাধারণত হটস্পট এক্ষেত্রে ভালো ধারণা দেয়। কিন্তু বেশ খরচে এই প্রযুক্তির ব্যবস্থা এবার রাখা হয়নি।
স্নিকোতে কোনো স্পাইক দেখা যায়নি। এসব ক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই রেখে দেন টিভি আম্পায়ার। কিন্তু খালি চোখে দেখে এবং স্লো মোশনে দেখে বোঝা যাচ্ছিল, বলটি জয়সোয়ালের গ্লাভসের কাছে গিয়ে দিক পরিবর্তন করেছে প্রায় ৪৫ ডিগ্রির মতো।
কোনো কিছুর স্পর্শ ছাড়া মাঝবাতাসে বলের এতটুকু সুইং করা অসম্ভব। ওভার দ্য উইকেট থেকে কামিন্সের অ্যাঙ্গেলে করা বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে উইকেটকিপারের কাছে যাওয়ার কথা, কিন্তু ক্যারি বলটি ধরে লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে। আর ভিডিও দেখেও মনে হচ্ছিল গ্লাভসে লাগার আগে, ব্যাটের স্পর্শও পেতে পারে বলটি। সৈকত তাই সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বলেন আম্পায়ারকে।
এ নিয়ে মাঠেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ৮৪ রানে থাকা জয়সোয়াল। তাঁর বিদায়ের পর ৫০ বল টিকেছে ভারত। আর সে সময়ে হারের ব্যবধান মাত্র ১৫ কমাতে পেরেছেন বাকিরা। দিনের খেলার প্রায় ১০ ওভার বাকি থাকতেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। সিরিজেও ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে তারা।
এদিকে সৈকতের এমন সিদ্ধান্ত ভারতের অনেক সমর্থকই মেনে নিতে পারেননি। সমর্থক কেন, সুনীল গাভাস্কারের মতো সাবেক ক্রিকেটারও প্রশ্ন তুলেছেন এই সিদ্ধান্ত নিয়ে, ‘যদি প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, তাহলে শুধু প্রযুক্তিই ব্যবহার করেন। আমি যাই দেখি না কেন, আমি সবসময় বলি এটা চোখের ধাঁধা। এটা চোখের ধাঁধা। স্নিকো আছে, স্নিকো কী বলছে? স্নিকোতে সোজা লাইন দেখাচ্ছে, তার মানে এটা একদমই আউট না। আমার মতে এটা আউট না। স্নিকোতে কিছু দেখা গেলে ভিন্ন কিছু। এটা ভুল সিদ্ধান্ত। একদম ভুল সিদ্ধান্ত। তা না হলে প্রযুক্তি ব্যবহার করা বন্ধ করুন। যদি চোখের ধাঁধা নিয়েই কাজ করবেন, তাহলে প্রযুক্তি ব্যবহার করা বন্ধ করুন। ’