ঢাকা ০৬:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

১৭ বছর বয়সে ভোটার হওয়াকে সমর্থন করে জামায়াত

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভোটারদের বয়স ১৭ করার উদ্যোগকে সমর্থন করে জামায়াত। আমরা বলি তাদেরকে ভোটার করা হোক। রাস্তায় তো এরাই নেমে জীবন দিয়েছে। আপনি আমি যেটা পারিনি, আল্লাহর সাহায্য নিয়ে এসে অসাধ্য সাধন করেছে তারা।’

আজ সোমবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে পথসভায় এসব কথা বলেন জামায়াত আমির। জামায়াতে ইসলামী বীরগঞ্জ উপজেলা শাখার আমির মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর আমরা নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু স্বৈরাচার সরকরের পতন ঘটাতে পারিনি। আমাদের ছেলেমেয়েদের হাতে তাদের নেতৃত্বে আমরা দেশবাসী ছিলাম। অগ্রভাগে তারাই ছিল। এটা আমাদের গর্বের।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেছেন ১৮ নয়, ১৭ বছর বয়স যাদের হয়েছে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কেউ কেউ বলছেন- এটা আমরা মানি না। কেন মানেন না। রাস্তায় নেমে এরাই তো স্বাধীনতা এনেছে। তারা বুক পেতে দিয়ে বলেছে গুলি কর। আপনি আমি তা পারিনি। প্রধান উপদেষ্টার এ কথাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা বলি তাদেরকে অবশ্যই ভোটার করতে হবে। যারা বুক পেতে দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিতে পারে, আমরা দেশবাসী তাদের ভোটের অধিকার দিতে পারি না?

শফিকুর রহমান বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে এমন কোনো উদাহরণ নেই জাতি বিভক্ত হয়ে সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেছে এবং তারা উন্নতির শিখরে উঠেছে। বরং বিভক্ত জাতি বিশৃঙ্খল থাকে। আর যারা বিশৃঙ্খল থাকে তাদের মাথায় অন্য সবাই কাঁঠাল ভেঙে খায়। বাংলাদেশের বিগত ৫৩টি বছরে আমরা এই বিভক্তির কবর রচনা করতে চাই। কোনো পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি এদেশের মানুষ আর মানবে না। ওই বিভক্তি আমাদের সর্বনাশ করেছে। এই সর্বনাশে জাতি আর হাবুডুবু খেতে চায় না। এখন যারা এই বিভক্তিকে জিইয়ে রাখতে চেষ্টা করবে তারা কার্যত জনগণের মুখোমুখি দাঁড়াবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে আর ক্ষমা করবে না। আমাদের এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। কোনো কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে দেশ এবং জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধ, দেশের বিরুদ্ধে হাজার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করব।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা জীবন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিতে পারে, আমরা দেশবাসী তাদের ভোটের অধিকার দিতে পারি না? আমরা চাই তারা ভোটের অধিকার পাক। আগামী বাংলাদেশ জামায়াত যুবকদের হাতে তুলে দেবে। শুধু জামায়াতে ইসলাম নয় গোটা জাতি তুলে দেবে।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে অফিস আদালতে ঘুষ থাকবে না, দখলদারি থাকবে না, চাঁদাবাজি থাকবে না। সম্ভাবনার এ বাংলাদেশকে অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা ফোকলা দেশে পরিণত করেছে। বিগত সরকার বাংলাদেশ থেকে ১৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। টাকা পাচারের পর, যে দেশে টাকা পাচার করেছে সেই দেশে পালিয়ে গেছে।’

শফিকুর রহমান বলেন, মাঝে মাঝে মিডিয়ার ভাইয়েরা ওলটপালট করে ফেলে। আমার বক্তব্য বদলে ফেলে। আমি বলেছিলাম যে যদি বাংলাদেশে কোরআনের সমাজ কায়েম হয় তাহলে সেই সমাজে মায়েদেরকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হবে। তারা গর্বের সাথে ইজ্জতের সাথে এদেশে বসবাস করবে। কর্মক্ষেত্রে যার যার আগ্রহ আছে, অভিজ্ঞতা আছে, দক্ষতা আছে সে সেখানে যাবে। তারা সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। জোর করে আমরা কাউকে পোশাক পরাবো না। আমরা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলবো প্রত্যেকটি মা শালীন ও মার্জিত পোশাক পরে গর্ববোধ করবে। অথচ একটা টেলিভিশন চ্যানেল বলে দিলো জামায়াতের আমির বলেছেন- মেয়েরা ইচ্ছামতো পোশাক পরিধান করবে। সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় জাতির বিবেক ও জাতির আয়না। আমাদের অনুরোধ সাদাকে সাদা বলতে হবে, কালোকে কালো বলতে হবে। যদি আমিও কালো হই তাহলে কালোই বলবেন, আমাকে ছাড় দেবেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন

১৭ বছর বয়সে ভোটার হওয়াকে সমর্থন করে জামায়াত

আপডেট সময় : ০৫:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভোটারদের বয়স ১৭ করার উদ্যোগকে সমর্থন করে জামায়াত। আমরা বলি তাদেরকে ভোটার করা হোক। রাস্তায় তো এরাই নেমে জীবন দিয়েছে। আপনি আমি যেটা পারিনি, আল্লাহর সাহায্য নিয়ে এসে অসাধ্য সাধন করেছে তারা।’

আজ সোমবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে পথসভায় এসব কথা বলেন জামায়াত আমির। জামায়াতে ইসলামী বীরগঞ্জ উপজেলা শাখার আমির মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

শফিকুর রহমান বলেন, সাড়ে ১৫ বছর আমরা নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু স্বৈরাচার সরকরের পতন ঘটাতে পারিনি। আমাদের ছেলেমেয়েদের হাতে তাদের নেতৃত্বে আমরা দেশবাসী ছিলাম। অগ্রভাগে তারাই ছিল। এটা আমাদের গর্বের।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেছেন ১৮ নয়, ১৭ বছর বয়স যাদের হয়েছে তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কেউ কেউ বলছেন- এটা আমরা মানি না। কেন মানেন না। রাস্তায় নেমে এরাই তো স্বাধীনতা এনেছে। তারা বুক পেতে দিয়ে বলেছে গুলি কর। আপনি আমি তা পারিনি। প্রধান উপদেষ্টার এ কথাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা বলি তাদেরকে অবশ্যই ভোটার করতে হবে। যারা বুক পেতে দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিতে পারে, আমরা দেশবাসী তাদের ভোটের অধিকার দিতে পারি না?

শফিকুর রহমান বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে এমন কোনো উদাহরণ নেই জাতি বিভক্ত হয়ে সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেছে এবং তারা উন্নতির শিখরে উঠেছে। বরং বিভক্ত জাতি বিশৃঙ্খল থাকে। আর যারা বিশৃঙ্খল থাকে তাদের মাথায় অন্য সবাই কাঁঠাল ভেঙে খায়। বাংলাদেশের বিগত ৫৩টি বছরে আমরা এই বিভক্তির কবর রচনা করতে চাই। কোনো পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি এদেশের মানুষ আর মানবে না। ওই বিভক্তি আমাদের সর্বনাশ করেছে। এই সর্বনাশে জাতি আর হাবুডুবু খেতে চায় না। এখন যারা এই বিভক্তিকে জিইয়ে রাখতে চেষ্টা করবে তারা কার্যত জনগণের মুখোমুখি দাঁড়াবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদেরকে আর ক্ষমা করবে না। আমাদের এখন প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। কোনো কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে দেশ এবং জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধ, দেশের বিরুদ্ধে হাজার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবিলা করব।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা জীবন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিতে পারে, আমরা দেশবাসী তাদের ভোটের অধিকার দিতে পারি না? আমরা চাই তারা ভোটের অধিকার পাক। আগামী বাংলাদেশ জামায়াত যুবকদের হাতে তুলে দেবে। শুধু জামায়াতে ইসলাম নয় গোটা জাতি তুলে দেবে।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে অফিস আদালতে ঘুষ থাকবে না, দখলদারি থাকবে না, চাঁদাবাজি থাকবে না। সম্ভাবনার এ বাংলাদেশকে অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা ফোকলা দেশে পরিণত করেছে। বিগত সরকার বাংলাদেশ থেকে ১৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। টাকা পাচারের পর, যে দেশে টাকা পাচার করেছে সেই দেশে পালিয়ে গেছে।’

শফিকুর রহমান বলেন, মাঝে মাঝে মিডিয়ার ভাইয়েরা ওলটপালট করে ফেলে। আমার বক্তব্য বদলে ফেলে। আমি বলেছিলাম যে যদি বাংলাদেশে কোরআনের সমাজ কায়েম হয় তাহলে সেই সমাজে মায়েদেরকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হবে। তারা গর্বের সাথে ইজ্জতের সাথে এদেশে বসবাস করবে। কর্মক্ষেত্রে যার যার আগ্রহ আছে, অভিজ্ঞতা আছে, দক্ষতা আছে সে সেখানে যাবে। তারা সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। জোর করে আমরা কাউকে পোশাক পরাবো না। আমরা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলবো প্রত্যেকটি মা শালীন ও মার্জিত পোশাক পরে গর্ববোধ করবে। অথচ একটা টেলিভিশন চ্যানেল বলে দিলো জামায়াতের আমির বলেছেন- মেয়েরা ইচ্ছামতো পোশাক পরিধান করবে। সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় জাতির বিবেক ও জাতির আয়না। আমাদের অনুরোধ সাদাকে সাদা বলতে হবে, কালোকে কালো বলতে হবে। যদি আমিও কালো হই তাহলে কালোই বলবেন, আমাকে ছাড় দেবেন না।