ঘোষণাপত্র পাঠ স্থগিত করে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ ঘোষণা
- আপডেট সময় : ১০:৫১:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ স্থগিত করে, ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল (সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকরা। তারা আশা করেন, জুলাই ঘোষণা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ভূমিকা রাখবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিলোপ হয় ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার। শুরু হয় নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের বাস্তবতা আর জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর চ্যালেঞ্জ। এমন বাস্তবতায় জন আকাঙ্ক্ষার দলিলস্বরূপ ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রণয়ন নিয়ে সরব হয় নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠনগুলো।
ঘোষণা ছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করার। সে লক্ষ্যে শুরু হয় প্রস্তুতিও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে রাজপথ। সবার কণ্ঠে, লিখনিতে ৩১ ডিসেম্বর।
তবে সোমবার রাতে হঠাৎই দেখা দেয় সংশয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগের কথা জানায় সরকার। বলা হয়, এর মধ্যদিয়ে জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা সুসংহত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। সর্বসম্মতিক্রমে এ ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থিত করা হবে।’
এরপরই চলে দফায় দফায় বৈঠক। শেষ পর্যন্ত সোমবার দিবাগত রাত ২টায় সিদ্ধান্ত আসে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র প্রকাশ নয়, ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ পালন করবে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। যেখানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচক সাড়া সঞ্চারিত হয়েছে। এমতাবস্থায় ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময় উপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।’
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও জানান, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের যে উদ্যোগ তা ইতিবাচক। তারা আশা করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে লিখিত প্রমাণপত্র হিসেবে ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ভূমিকা রাখবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই যে ঘোষণাপত্রটি আমাদের এই জুলাই অভ্যুত্থানের। এই ঘোষণাপত্রটি আসা উচিত এবং এটি একটি লিখিত ডকুমেন্ট হিসেবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যাওয়া উচিত। তো আমাদের জায়গা থেকে যা মনে হয়েছে সেটি হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এই প্লাটফর্মের চেয়ে রাষ্ট্র যখন এই দায়িত্বটি নিয়ে নেয়, আমরা এটিকে সাধুবাদ এবং স্বাগত জানাই।’
সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি বিকেল ৩টার নতুন কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ অংশ নেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান ছাত্র আন্দোলনের নেতৃরা।