ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিপিএলে ১ বলে এল ১৫ রান!

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

৩ উইকেটে ৫৬ রান থেকে ৩ বলের ব্যবধানে স্কোরবোর্ড ৫৬/৬। খুলনা টাইগার্সের দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে চিটাগং কিংস যে বড় হারের সাক্ষী হতে যাচ্ছে, এটা ততক্ষণে নিশ্চিত। ৭৫ এর মধ্যে আরও দুটি উইকেট হারায় চিটাগং। তখন ইনিংসের সবে ১১তম ওভারের খেলা চলে। একপেশে ম্যাচ দেখতে দেখতে গ্যালারিতে যে গোটা কয়েক দর্শক এসেছিলেন তারাও অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছিলেন!

শামীম পাটোয়ারি এর পর ঘুম তাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন ৭৮ রানের ঝড়ে। যদিও ইনিংসের প্রথম ওভারেই যা করেছেন তাতে আলোচনায় ওশান থমাসের নামটাই সবার আগে চলে আসছে। ১২ বলের ওভার করেছেন ক্যারিবীয় পেসার। ৩৭ রানের জয়ের পরও খুলনার দুশ্চিন্তার নাম এই পেসার।

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে গেছেন শামিম। ২৫ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান একের পর এক বল সীমানাছাড়া করে ম্যাচে কিছুটা উত্তেজনা ফেরান। শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হন শামিম। শামিমের বিদায়ের পর ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে চিটাগং কিংসকে ১৬৬ রানে গুটিয়ে দেয় খুলনা।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে এমন জয় পেলেও দলটির বিদেশি পেসার ওশানে থমাস প্রথম ওভারে যা করেছেন, তা খালি চোখে অস্বাভাবিক ঠেকতে পারে। নো বল দিয়ে ওভার শুরু করা ওশানে থমাস দ্বিতীয় বল ডট দেওয়ার পর আবার নো বল করেন। সে বলে ছক্কা মারেন নাঈম ইসলাম। এরপর দুটি ওয়াইড ডেলিভারির পর আবারও নো বল করেন থমাস। সে বলে আবার বাই থেকে আসে ৪ রান। চিটাগংয়ের স্কোরবোর্ডে তখন ১ বলে ১৫ রান!

থমাস ওই ওভারে ৪ নো বল আর ২ ওয়াইড দিয়ে নাইম ইসলামের (৯ বলে ১২ রান) উইকেট নেন। ১২টি বল করে ১৮ রান দেওয়া এই পেসারকে আর আক্রমণে আনা হয়নি।

প্রথম ওভারে নাঈম ইসলামকে হারালেও আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন পরপর দুই ওভারে ২ ছক্কা মেরে ঝড়ের আভাস দেন। কিন্তু সেটাকে দীর্ঘ করতে পারেননি ইমন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে অঙ্কনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৮ বলে ১৩ রান করেই।

অধিনায়ক মোহাম্মন মিথুন (৬) উইকেটে এসে থিতু হওয়ার আগেই বিদায় নিয়েছেন আবু হায়দার রনির দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে। এক প্রান্তে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় থাকা উসমান খান (১৫ বলে ১৮ রান) বোল্ড হন পাওয়ার প্লের শেষ বলে। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের উইকেট শিকার করেছেন হাসান মাহমুদ।

পাওয়ার প্লে শেষে চিটাগংয়ের স্কোরবোর্ডে ৫৬ রানে ৪ উইকেট। পরের ওভারের প্রথম দুই বলে আরও দুই উইকেট হারায় চিটাগং। হায়দার আলী ও টম কন্নেলকে রানের খাতা খুলতে দেওয়ার আগেই বিদায় করেছেন মোহাম্মদ নেওয়াজ।

পরপর ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩ উইকেটে ৫৬ রান থেকে মুহূর্তেই চিটাগংয়ের স্কোরবোর্ড রূপ নেয় ৫৬/৬। চিটাগংয়ের এমন ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে গ্যালারিতে উপস্থিত খুলনা সমর্থকেরাও উদযাপনের আগ্রহ বোধহয় হারিয়ে ফেলেছিলেন!

চিটাগং যে ম্যাচটা হারছে, এটা তখন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। দেখার বিষয় ছিল, শেষ পর্যন্ত হাতে থাকা ৪ উইকেট নিয়ে হারের ব্যবধান কতটা কমাতে পারে দলটি। দলের রান ৭৫ এ পৌঁছাতে উইকেটের ঘরে আরও দুটি সংখ্যা যোগ হয়।

এরপর বলতে গেলে চিটাগং কিংসের হারের ব্যবধান কমানোর দায়িত্বটা একাই কাঁধে তুলে নেন শামিম পাটোয়ারি। এক প্রান্ত আগলে সমানে ব্যাট-চালিয়ে যান। তাতে প্রায় ঘুমিয়ে পড়া গ্যালারিতেও কিছুটা প্রাণের সঞ্চার হয়।

নাসুমের করা ১৩তম ওভার থেকে পরপর ৪ বলে ২ চার ও ২ ছক্কা মারেন শামিম। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে আবু হায়দার রনিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৩ বলে ফিফটি পেরিয়ে যান ২৪ বছর বয়সী বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। একই ওভারের শেষ দুই বলে মারেন চার-ছক্কা।

১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দৃষ্টিনন্দন এক সুইপে নেওয়াজকে ছক্কা মারেন শামিম। পরের বলে মারতে গিয়ে লাইন মিস করে এলবিডাব্লিউ হয়েছিলেন। তবে রিভিউ নিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে যান শামিম। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ১৯তম ওভারে আবু হায়দার রনিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন নেওয়াজের হাতে। খালেদ আহমেদ নেমে ২ ছক্কা মারলেও আবু হায়দার রনির বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় হতেই থেমে যায় চিটাগংয়ের ইনিংস।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিপিএলে ১ বলে এল ১৫ রান!

আপডেট সময় : ০৮:১৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

৩ উইকেটে ৫৬ রান থেকে ৩ বলের ব্যবধানে স্কোরবোর্ড ৫৬/৬। খুলনা টাইগার্সের দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে চিটাগং কিংস যে বড় হারের সাক্ষী হতে যাচ্ছে, এটা ততক্ষণে নিশ্চিত। ৭৫ এর মধ্যে আরও দুটি উইকেট হারায় চিটাগং। তখন ইনিংসের সবে ১১তম ওভারের খেলা চলে। একপেশে ম্যাচ দেখতে দেখতে গ্যালারিতে যে গোটা কয়েক দর্শক এসেছিলেন তারাও অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছিলেন!

শামীম পাটোয়ারি এর পর ঘুম তাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন ৭৮ রানের ঝড়ে। যদিও ইনিংসের প্রথম ওভারেই যা করেছেন তাতে আলোচনায় ওশান থমাসের নামটাই সবার আগে চলে আসছে। ১২ বলের ওভার করেছেন ক্যারিবীয় পেসার। ৩৭ রানের জয়ের পরও খুলনার দুশ্চিন্তার নাম এই পেসার।

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়ে গেছেন শামিম। ২৫ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান একের পর এক বল সীমানাছাড়া করে ম্যাচে কিছুটা উত্তেজনা ফেরান। শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হন শামিম। শামিমের বিদায়ের পর ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতে চিটাগং কিংসকে ১৬৬ রানে গুটিয়ে দেয় খুলনা।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে এমন জয় পেলেও দলটির বিদেশি পেসার ওশানে থমাস প্রথম ওভারে যা করেছেন, তা খালি চোখে অস্বাভাবিক ঠেকতে পারে। নো বল দিয়ে ওভার শুরু করা ওশানে থমাস দ্বিতীয় বল ডট দেওয়ার পর আবার নো বল করেন। সে বলে ছক্কা মারেন নাঈম ইসলাম। এরপর দুটি ওয়াইড ডেলিভারির পর আবারও নো বল করেন থমাস। সে বলে আবার বাই থেকে আসে ৪ রান। চিটাগংয়ের স্কোরবোর্ডে তখন ১ বলে ১৫ রান!

থমাস ওই ওভারে ৪ নো বল আর ২ ওয়াইড দিয়ে নাইম ইসলামের (৯ বলে ১২ রান) উইকেট নেন। ১২টি বল করে ১৮ রান দেওয়া এই পেসারকে আর আক্রমণে আনা হয়নি।

প্রথম ওভারে নাঈম ইসলামকে হারালেও আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন পরপর দুই ওভারে ২ ছক্কা মেরে ঝড়ের আভাস দেন। কিন্তু সেটাকে দীর্ঘ করতে পারেননি ইমন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে অঙ্কনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৮ বলে ১৩ রান করেই।

অধিনায়ক মোহাম্মন মিথুন (৬) উইকেটে এসে থিতু হওয়ার আগেই বিদায় নিয়েছেন আবু হায়দার রনির দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে। এক প্রান্তে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় থাকা উসমান খান (১৫ বলে ১৮ রান) বোল্ড হন পাওয়ার প্লের শেষ বলে। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের উইকেট শিকার করেছেন হাসান মাহমুদ।

পাওয়ার প্লে শেষে চিটাগংয়ের স্কোরবোর্ডে ৫৬ রানে ৪ উইকেট। পরের ওভারের প্রথম দুই বলে আরও দুই উইকেট হারায় চিটাগং। হায়দার আলী ও টম কন্নেলকে রানের খাতা খুলতে দেওয়ার আগেই বিদায় করেছেন মোহাম্মদ নেওয়াজ।

পরপর ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩ উইকেটে ৫৬ রান থেকে মুহূর্তেই চিটাগংয়ের স্কোরবোর্ড রূপ নেয় ৫৬/৬। চিটাগংয়ের এমন ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে গ্যালারিতে উপস্থিত খুলনা সমর্থকেরাও উদযাপনের আগ্রহ বোধহয় হারিয়ে ফেলেছিলেন!

চিটাগং যে ম্যাচটা হারছে, এটা তখন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। দেখার বিষয় ছিল, শেষ পর্যন্ত হাতে থাকা ৪ উইকেট নিয়ে হারের ব্যবধান কতটা কমাতে পারে দলটি। দলের রান ৭৫ এ পৌঁছাতে উইকেটের ঘরে আরও দুটি সংখ্যা যোগ হয়।

এরপর বলতে গেলে চিটাগং কিংসের হারের ব্যবধান কমানোর দায়িত্বটা একাই কাঁধে তুলে নেন শামিম পাটোয়ারি। এক প্রান্ত আগলে সমানে ব্যাট-চালিয়ে যান। তাতে প্রায় ঘুমিয়ে পড়া গ্যালারিতেও কিছুটা প্রাণের সঞ্চার হয়।

নাসুমের করা ১৩তম ওভার থেকে পরপর ৪ বলে ২ চার ও ২ ছক্কা মারেন শামিম। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে আবু হায়দার রনিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৩ বলে ফিফটি পেরিয়ে যান ২৪ বছর বয়সী বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। একই ওভারের শেষ দুই বলে মারেন চার-ছক্কা।

১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে দৃষ্টিনন্দন এক সুইপে নেওয়াজকে ছক্কা মারেন শামিম। পরের বলে মারতে গিয়ে লাইন মিস করে এলবিডাব্লিউ হয়েছিলেন। তবে রিভিউ নিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে যান শামিম। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ১৯তম ওভারে আবু হায়দার রনিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন নেওয়াজের হাতে। খালেদ আহমেদ নেমে ২ ছক্কা মারলেও আবু হায়দার রনির বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় হতেই থেমে যায় চিটাগংয়ের ইনিংস।