বিমান ভ্রমণ, সিগারেট, এলপিজি, পোশাক, রেস্তোরাঁর খাবার ও হোটেল খরচে বাড়তি টাকা গুণতে হতে পারে ভোক্তাদের। কারণ, এসব পণ্য ও পরিষেবার ওপর কর বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে সরকার। ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রেস্তোরাঁয় ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। নন-এসি হোটেলের ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।
এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ, সার্কভুক্ত দেশ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে বিমান ভাড়াও বাড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, বিমান টিকিটে আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় ফ্লাইটে শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা, সার্ক দেশগুলোর ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ৩,০০০ টাকা থেকে ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এ পদক্ষেপের মাধ্যমে এনবিআর ৩০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য স্থির করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পোশাক খাতে ব্র্যান্ডেড ও নন-ব্র্যান্ডেড উভয় ধরনের পণ্যের ওপর ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে। পাশাপাশি, ট্রেডিং কার্যক্রমে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ করা হতে পারে। এলপিজির ট্রেডিং পর্যায়ে ভ্যাটও ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। মোট ৪৩টি পণ্য ও পরিষেবার ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
তামাকজাত পণ্যের দাম ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করে অর্থবছরের বাকি সময়ের মধ্যে ৪,০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, এছাড়া মোবাইল টক-টাইমে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ এবং ওষুধের ওপর ভ্যাট ২.৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, ‘এনবিআরের প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। বুধবার কিছু সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশোধনের পর একটি অধ্যাদেশ জারি করা হবে।’
আইএমএফের নতুন রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অংশ হিসেবে এনবিআর ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে ১২,০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব সংগ্রহের চেষ্টা করছে। এটি দেশে মধ্যবছরে ভ্যাট বৃদ্ধির নজিরবিহীন ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এমন পদক্ষেপ ভোক্তাদের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে। মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যেতে পারে।