ঢাকা ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

করপোরেট হাউজগুলোর কাছে এখন চালের মজুত!

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:০৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বগুড়ায় চলছে আমন মৌসুমে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান। সংগ্রহ অভিযানের প্রথম দেড় মাসে কাঙ্ক্ষিত ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। ধান সংগ্রহে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে বাধ্যবাধকতার কারণে চাল হয়তো মিলবে তবে এক্ষেত্রে চালকল মালিকদের লোকসান দিতে হবে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা। আর এমন লোকসান দিতে গিয়ে ছোট চালকলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চালের মজুতদারি চলে যাচ্ছে করপোরেট হাউজগুলোর কাছে। এ পরিস্থিতির সরকারের হস্তক্ষেপ চান চালকল মালিকরা।

বগুড়া জেলায় ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে মধ্য নভেম্বরে। হাটবাজারে নতুন আমন ধান উঠলেও সরবরাহ কম। ফলে, ভরা মৌসুমেও চালের দাম কমেনি, বরং বেড়েছে।

সরকার প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ৩৩ টাকা এবং সিদ্ধ চাল ৪৭ টাকা। হাট বাজারে এই ধান বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা ও মোটা চাল ৫৬ টাকা । ব্যবসায়ীদের দাবি, ভালো দামের আশায় অনেক কৃষক বিক্রি করছেন না ধান। এভাবে বাধ্যবাধকতার কারণে চাল হয়তো মিলবে, তবে এক্ষেত্রে চালকল মালিকদের লোকসান দিতে হবে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা।

একজন চালকল মালিক বলেন, ‘সরকার যে রেট দিয়েছে। তাতে কেজিতে সাড়ে চার পাঁচ টাকা লোকসান হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা দেউলিয়া হয়ে যাবো।’

অন্য একজন চালকল মালিক বলেন, ‘এখানে প্রায় ৫০০ মিল ছিল। এখন মাত্র ১০০টার মতো মিল টিকে আছে, আর সব বাতিল হয়ে গেছে। এভাবে আমরা তো ফকির হয়ে যাচ্ছি।’

ধান থেকে চাল করতে অটো রাইস মিলগুলো থেকে হাস্কিং রাইস মিলের খরচ বেশি। এতে বাজার চলে যাচ্ছে করপোরেট হাউজগুলোর কাছে। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণহীন এবং সিন্ডিকেটের কাছে যাওয়ার শঙ্কা নেতাদের। এমন লোকসানে বগুড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এক হাজার ২০০ হাস্কিং মিল, অভিযোগ চালকল মালিকদের।

বগুড়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন ‘হাস্কিং মিলগুলো যদি সরকার টিকাতে না পারে তাহলে চালের ব্যবসাটা পুরোপুরি করপোরেট ব্রবসায়ীদের হাতে চলে যাবে। যদিও এখনও তারা নিয়ন্ত্রণ করে। করপোরেটে যে চাল ৮০ টাকা কেজি, আমাদের সেটা ৭০ টাকা কেজি।’

সরকারের নির্ধারিত দামে চাল সংগ্রহ করা কঠিন হলেও, কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন। যা সরকারের নির্ধারণ করা মূল্যের একটি উল্লেখযোগ্য দিক বলে মনে করেন খাদ্য কর্মকর্তারা।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, ‘বাজারদর যেহেতু একটু ঊর্ধ্বমুখী সরকারি রেটের তুলনায়। সেক্ষেত্রে সংগ্রহের গতি একটু কম। তবে সংগ্রহ কিন্তু হচ্ছে। যদি কৃষক আমাদের গুদামে ধান দিতে আগ্রহী না হয় বাজারে ভালো দাম পাওয়ার কারণে সেক্ষেত্রে সেটি হয়তো চালের আকারে পরবর্তীতে কেনার উদ্যোগ সরকার নিতে পারে।’

চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে এ সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে না আনলে ছোট মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে এবং চালের বাজার করপোরেটদের হাতে চলে যাবে, এমন শঙ্কায় চালকল মালিকরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

করপোরেট হাউজগুলোর কাছে এখন চালের মজুত!

আপডেট সময় : ০১:০৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

বগুড়ায় চলছে আমন মৌসুমে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান। সংগ্রহ অভিযানের প্রথম দেড় মাসে কাঙ্ক্ষিত ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। ধান সংগ্রহে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে বাধ্যবাধকতার কারণে চাল হয়তো মিলবে তবে এক্ষেত্রে চালকল মালিকদের লোকসান দিতে হবে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা। আর এমন লোকসান দিতে গিয়ে ছোট চালকলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চালের মজুতদারি চলে যাচ্ছে করপোরেট হাউজগুলোর কাছে। এ পরিস্থিতির সরকারের হস্তক্ষেপ চান চালকল মালিকরা।

বগুড়া জেলায় ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে মধ্য নভেম্বরে। হাটবাজারে নতুন আমন ধান উঠলেও সরবরাহ কম। ফলে, ভরা মৌসুমেও চালের দাম কমেনি, বরং বেড়েছে।

সরকার প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ৩৩ টাকা এবং সিদ্ধ চাল ৪৭ টাকা। হাট বাজারে এই ধান বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা ও মোটা চাল ৫৬ টাকা । ব্যবসায়ীদের দাবি, ভালো দামের আশায় অনেক কৃষক বিক্রি করছেন না ধান। এভাবে বাধ্যবাধকতার কারণে চাল হয়তো মিলবে, তবে এক্ষেত্রে চালকল মালিকদের লোকসান দিতে হবে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা।

একজন চালকল মালিক বলেন, ‘সরকার যে রেট দিয়েছে। তাতে কেজিতে সাড়ে চার পাঁচ টাকা লোকসান হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা দেউলিয়া হয়ে যাবো।’

অন্য একজন চালকল মালিক বলেন, ‘এখানে প্রায় ৫০০ মিল ছিল। এখন মাত্র ১০০টার মতো মিল টিকে আছে, আর সব বাতিল হয়ে গেছে। এভাবে আমরা তো ফকির হয়ে যাচ্ছি।’

ধান থেকে চাল করতে অটো রাইস মিলগুলো থেকে হাস্কিং রাইস মিলের খরচ বেশি। এতে বাজার চলে যাচ্ছে করপোরেট হাউজগুলোর কাছে। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণহীন এবং সিন্ডিকেটের কাছে যাওয়ার শঙ্কা নেতাদের। এমন লোকসানে বগুড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এক হাজার ২০০ হাস্কিং মিল, অভিযোগ চালকল মালিকদের।

বগুড়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন ‘হাস্কিং মিলগুলো যদি সরকার টিকাতে না পারে তাহলে চালের ব্যবসাটা পুরোপুরি করপোরেট ব্রবসায়ীদের হাতে চলে যাবে। যদিও এখনও তারা নিয়ন্ত্রণ করে। করপোরেটে যে চাল ৮০ টাকা কেজি, আমাদের সেটা ৭০ টাকা কেজি।’

সরকারের নির্ধারিত দামে চাল সংগ্রহ করা কঠিন হলেও, কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন। যা সরকারের নির্ধারণ করা মূল্যের একটি উল্লেখযোগ্য দিক বলে মনে করেন খাদ্য কর্মকর্তারা।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, ‘বাজারদর যেহেতু একটু ঊর্ধ্বমুখী সরকারি রেটের তুলনায়। সেক্ষেত্রে সংগ্রহের গতি একটু কম। তবে সংগ্রহ কিন্তু হচ্ছে। যদি কৃষক আমাদের গুদামে ধান দিতে আগ্রহী না হয় বাজারে ভালো দাম পাওয়ার কারণে সেক্ষেত্রে সেটি হয়তো চালের আকারে পরবর্তীতে কেনার উদ্যোগ সরকার নিতে পারে।’

চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে এ সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে না আনলে ছোট মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে এবং চালের বাজার করপোরেটদের হাতে চলে যাবে, এমন শঙ্কায় চালকল মালিকরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।