জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী চিত্রনায়িকা অঞ্জনা চলে গেলেন
- আপডেট সময় : ১১:২৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাংলাদেশের খ্যাতনামা অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ৫৮ বছর বয়সে থামল তাঁর জীবনের পথচলা। কাজ করেছেন শতাধিক ছবিতে। কাজের জন্য পেয়েছেন বহু পুরস্কারও। শনিবারই তাঁর জানাজা হবে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে শনিবার, ৪ জানুয়ারি মধ্যরাতে ১ টা ১০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন অঞ্জনা রহমান। বহুদিন ধরে অসুস্থ থাকায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই প্রয়াত হয়েছেন বাংলাদেশের এই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী।
অভিনেত্রীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অঞ্জনা রহমানের মরদেহ শনিবার বাদ জোহর এফডিসিতে নেয়া হবে। সেখানে শ্রদ্ধা ও জানাজা শেষে বনানী কবরাস্থানে দাফন করার ইচ্ছা পরিবারের। তবে সেখানে না হলে পরিবারের দ্বিতীয় পছন্দ জুরাইন গোরস্তান।
অঞ্জনা রহমান বাংলাদেশের এক সময়ের দাপুটে অভিনেত্রী ছিলেন। কাজ করেছেন প্রায় ৩০০ টির বেশি ছবিতে। পরিণীতা ছবিটির জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বর্তমানে তাঁর ২ মেয়ে এবং ১ ছেলে আছেন।
অঞ্জন রহমান একজন নৃত্যশিল্পীও ছিলেন। সেখান থেকেই অভিনেত্রী হন তিনি। অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্র দিয়ে। একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’ ছবি দারুণ সাড়া ফেলে। এরপর তাকে আর ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে হয়নি।
বাংলাদেশি ছবি তো বটেই, কাজ করেছেন বহু বিদেশি ছবিতেও। এরপর তিনি দস্যু বনহুর, অশিক্ষিত, চোখের মণি, অভিযান, রাজার রাজা, নাগিনা, জিঞ্জির, ইত্যাদির মতো ছবিতে কাজ করেছেন। বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় চিত্রনায়িকাও তিনি।
একে একে অভিনয় করেন ‘মাটির মায়া’, ‘অশিক্ষিত’, ‘চোখের মণি’, ‘সুখের সংসার’, ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ,‘আনারকলি’, ‘বিচারপতি’, ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, ‘অভিযান’, ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘রাম রহিম জন’, ‘নাগিনা’, ‘পরীণিতা’র মতো সফল সিনেমায়।
অঞ্জনা রহমান প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে অসুস্থ ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। প্রথমে জ্বর হয় তাঁর। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসত তাঁর। ওষুধেও কাজ হচ্ছিল না। পরে জানা যায় রক্তে সংক্রমণ হয়েছে তাঁর। প্রথমে তাঁকে ভর্তি করানো হয় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই কিছুদিন ভর্তি ছিলেন তিনি। সিসিইউতে ছিলেন। কিন্তু সেখানেও চিকিৎসায় বিশেষ সাড়া দিচ্ছিলেন না। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত বুধবার, ১ জানুয়ারি তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেও ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। কখনও সাড়া দিতেন চিকিৎসায়। কখনও আবার অবনতি হচ্ছিল তাঁর স্বাস্থ্য। এদিন সমস্ত চেষ্টাকে বিফল করে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন তিনি।