দেশের সম্মান ও গৌরব অটুটে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী: প্রধান উপদেষ্টা
- আপডেট সময় : ০৩:২০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা সেনা সদস্যদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আভিযানিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে ৫৫ পদাতিক ডিভিশন আয়োজিত রাজবাড়ী সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকায় ‘সেনাবাহিনীর ম্যানুভার অনুশীলন-২০২৪/২৫’-এ একটি পদাতিক ব্রিগেড গ্রুপের অনুশীলনে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহম্মদ ইউনুস বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির অহংকার ও বিশ্বাসের জায়গা। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ‘প্রশিক্ষণই সর্বোত্তম কল্যাণ’ এই মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আভিযানিক দক্ষতা অর্জন করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা সেনাসদস্যদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলবে।
প্রধান উপদেষ্টা অনুশীলনস্থলে আগমন করলে তাকে অভ্যর্থনা জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, যশোর এরিয়া মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম প্রমুখ।
এক শীতের দুপুরে রাজবাড়ীর সাদার চরে হানা দেয় একদল বিদেশি শত্রু। তখনই শত্রুর অবস্থান নিশ্চিত লাল পতাকা শিবিরে অবস্থান নেয়া শত্রু পক্ষকে ঘায়েল করতে ছুটতে থাকে একের পর এক কামান, আর্টিলারি, মেশিনগান। শুরু হয় যুদ্ধ।
এটি সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শত্রুর বিরুদ্ধে একটি ছায়া যুদ্ধ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই রণকৌশল দেখতে রোববার ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে ছুটে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান।
সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের আয়োজনে এই প্রশিক্ষণ অনুশীলনে অংশ নেয় অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ও সরঞ্জাম। এদিন শত্রু শিবিরে হামলা করতে এগিয়ে যায় যুদ্ধক্ষেত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র, ট্যাংক। শত্রুর বাংকার লক্ষ্য করে শুরু হয় গোলা বর্ষণ।
আরেকদিক থেকে অস্ত্র সরঞ্জাম ও গোলাবারুদ নিয়ে এগিয়ে এলাকায় এগিয়ে যায় এপিসি, সঙ্গে অস্ত্র সজ্জিত পদাতিক বাহিনী। যারা জলে,স্থলে, আকাশে কিংবা দুর্গম পথে শত্রুপক্ষের উপর আক্রমণ চালাতে সক্ষম, সাহসী সৈনিক।
এদিকে বিকট শব্দে উড়তে থাকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান। মুহূর্তেই শত্রুর আকাশ সীমায় আধিপত্য বিস্তার করে নেয়। পদাতিক বাহিনীকে সহায়তায় এগিয়ে আসে আর্মি এভিয়েশনের বিমান এবং হেলিকপ্টার।
যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা অপসারণসহ পদাতিক বাহিনীকে সহায়তা করে ইঞ্জিনিয়ার্স কোর। শত্রুপক্ষের অবস্থান জানানো এবং কমান্ডোদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিগন্যাল কোর।
অবশেষে শত্রুর সঙ্গে চূড়ান্ত বোঝাপড়া। বাংলার দামাল ছেলেদের সাহস আর নৈপুণ্যে পরাস্ত দখলদার বাহিনী। তখন সবুজ শিবিরে বিজয়োল্লাস।
এই মহড়া দেখে ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
দেশের সম্মান ও গৌরব অটুট রাখতে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান।
এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান রাজবাড়ী সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকায় সেনাসদস্যদের অবস্থানের জন্য প্রশাসনিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে সেনাবাহিনী প্রধান রাজবাড়ী সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এ সময় সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।