বিদেশি বিনিয়োগ টানতে ‘অর্থনৈতিক কূটনীতির’ তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
- আপডেট সময় : ০৪:৪৭:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
প্রধান উপদেষ্টার কাছে সোমবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেন বেপজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
শিল্প খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে অর্থনৈতিক কূটনৈতিক দল তৈরি করে বাংলাদেশকে প্রচারের তাগিদ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বেপজা’র ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় এমন নির্দেশনা দেন তিনি।
এদিন বেপজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দিলে প্রধান উপদেষ্টা দেশের শিল্প খাতে আরও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন। এ জন্য প্রয়োজনে ‘অর্থনৈতিক কূটনীতির’ জন্য একটি দল তৈরি ও বিদেশে বাংলাদেশকে প্রচারের তাগিদও দেন তিনি।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে বেপজা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তনের পর ইতোমধ্যেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। গত তিন সপ্তাহে চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে।
আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু আছে, যেখানে ৪৫২টি কারখানা রয়েছে। এছাড়া আরও ১৩৬টি কারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। এ কারখানাগুলোর ৫২ শতাংশ তৈরি পোশাক সামগ্রী, টেক্সটাইল আইটেম এবং গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদন করে। অবশিষ্ট কারখানাগুলো বহুমুখী উৎপাদন করে থাকে যেমন-কফিন ও খেলনা সামগ্রী।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান জানান, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পরিবর্তনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তারা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন।
মেজর জেনারেল জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি ফ্লাইট চলাচল এবং চীনের সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সেলর সার্ভিসসহ বিনিয়োগকারীরা কয়েকটি বিষয়ে জানিয়েছেন। এসব সুবিধা পেলে বিনিয়োগ বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বেপজাকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার এবং গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন কীভাবে করা যেতে পারে সে বিষয়েও বিশেষভাবে কাজ করতে বলেন।
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেন।
তিনি জানান, সরকার দেশে বিদ্যমান প্ল্যান্টগুলো থেকে শিল্প কারখানায় যেন আরো বেশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পৌঁছাতে পারে সেজন্য একটি সমন্বিত বিতরণ ব্যবস্থা তৈরিতে কাজ করবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
‘আমাদের উচিত বেপজার পাশাপাশি বেজাকেও আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং আরও বিনিয়োগ আনার জন্য বিশ্বজুড়ে এসব অঞ্চলে থাকা সুযোগ-সুবিধা প্রচার করা,’ বলেন তিনি।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।