বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিলেন। সেই মেজর ডালিম দীর্ঘ ৫০ বছর পর ফের প্রকাশ্যে এলেন। জামাত সমর্থক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তাঁর টক শো-তে মেজর শরিফুল হক ডালিমের সাক্ষাৎকার নিলেন গতকাল। সেই সাক্ষাৎকারের শুরুতেই হাসিনা বিরোধী অভ্যুত্থানকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, 'নতুন প্রজন্মের ছাত্র-জনতা আংশিক বিজয় অর্জন করেছেন। তাঁদের জানাই লাল সেলাম।' তাঁর কথায়, 'একটি রাষ্ট্রে বিপ্লব হল চলমান প্রক্রিয়া। এই আবহে তাঁরা পূর্ণ বিজয় অর্জন করেনি। এর জন্যে আরও সময় লাগবে।' অবশ্য মেজর ডালিম এখন কোন দেশে আছেন, তা গোপন রাখা হয়েছে।
এদিকে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার ঘটনা প্রসঙ্গে মেজর ডালিম বলেন, 'মুজিব মারা যাননি। সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছেন। স্বৈরাচারী শেখ মুজিব তাঁর জুলুমের মাত্রা এত তীব্র করে তুলেছিলেন যে মানুষ তাঁর থেকে মুক্তি চেয়েছিল। সেনা অভ্যুত্থান তো আর খালি হাতে মার্বেল খেলা না। ওখানে দুই পক্ষ থেকেই গোলাগুলি হয় এবং হতাহত হয় দুইপক্ষেই।' এদিকে মেজর ডালিম জানিয়েছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁকে দিল্লিতে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। এদিকে মেজর ডালিব দাবি করেন, জিয়াউর রহমান মুজিব বিরোধী অভ্যুত্থানে প্রথমে তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন। পরে তিনি সরে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, মুজিবকে হত্যা করার পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট মেজর ডালিমই বেতারে তা ঘোষণা করেছিলেন।
মুজিব হত্যা নিয়ে মেজর ডালিমের বক্তব্য, '১৫ অগস্ট কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এটার সূত্রপাত ঘটেছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়তেই। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধটা কাদের স্বার্থে হচ্ছে, নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্যে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় থেকেই এর শিকড় বিস্তৃত হয়েছিল। ১৫ অগস্ট একটি সামরিক বিপ্লব ছিল। এতে উভয় পক্ষের লোকজন হতাহত হয়। তবে বিপ্লবীরা বিজয়ী হয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয়। এরপর লাখ লাখ মানুষ আনন্দ মিছিল করে, এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো জনসমর্থন নিয়ে প্রকাশ্যে আসে। এর মাধ্যমে এই সামরিক অভ্যুত্থান জনসমর্থন লাভ করে।' এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মেজর ডালিম বলেন, 'আমরা সম্প্রসারণবাদী-হিন্দুত্ববাদী ভারতের কবলে চলে গিয়েছি প্রায়। সেই অবস্থান থেকে ১৯৭১ সালের মতো আরও একটি স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। না হলে বর্তমানের এই বিপ্লব ব্যর্থ হবে।'