হারাতে বসা গ্রামীণ খেলায় মেতে উঠেছে পঞ্চগড়বাসী
- আপডেট সময় : ০৪:৩৯:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে
প্রায় হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ খেলাধুলায় মেতেছে পঞ্চগড়ের বাসিন্দারা। মাঠভরা দর্শকের উল্লাস আর খেলোয়াড়দের নৈপুণ্য মুগ্ধ করছে সবাইকে। পৌষের মিষ্টি রোদে তাই জমে উঠে খেলার মাঠ প্রান্তর।
একদল আরেক দলের হাত ফসকে পালানোর এই খেলার নাম পাক্ষি। দাগ টানা ঘরে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষকে আটকানোর লড়াই এটি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসা গ্রামীণ খেলাধুলা চলছে পঞ্চগড়ে।
গ্রামীণ খেলাধুলাকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রতিটি উপজেলায় গ্রামীণ বিলুপ্তপ্রায় খেলাধুলার আয়োজন করা হচ্ছে। পাক্ষি, হা-ডু-ডু, বৌ ছি, রশি টান, ডাঙ্গুলি, তৈলাক্ত কলাগাছে চড়া ও লাঠি খেলার মতো এক সময়ের জনপ্রিয় খেলার দেখা মিলছে আয়োজনে।
পুরোনো খেলা দেখতে মাঠে ভিড় করেন হাজারো দর্শক। কৌতূহল নিয়ে আসেন শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করা। হাততালি আর উল্লাসে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন তারা। স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামীণ বাংলার এসব খেলাধুলা বিলুপ্তপ্রায়। তরুণরা আসক্ত মোবাইল গেইমে।
তৈলাক্ত কলাগাছে ওঠার প্রাণপণ চেষ্টা আর ঢাক-ঢোলের তালে তালে লাঠির লড়াইয়ে বিনোদন খুঁজে পায় দর্শকরা। মানুষকে আনন্দ দিতে পারায় খুশি খেলোয়াড়রাও। আর এসব খেলা যেন হারিয়ে না যায় সে আকুতি বয়োজ্যেষ্ঠদের।
উৎসবের অংশ হিসেবে জেলার প্রত্যেক উপজেলায় গ্রামীণ খেলার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তরুণদের মাদক ও মোবাইল আসক্তি থেকে সুস্থ বিনোদনের পথে নিয়ে আসতেই এমন আয়োজন বলে জানান তারা।
পঞ্চগড় সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের চাওয়া গ্রামীণ খেলাগুলো যেন পুনর্জীবিত হতে পারে এবং আমাদের তরুণরা যারা এই খেলাগুলো ভুলে গিয়েছে তারা এই খেলায় আবারো অংশগ্রহণ করুক। আজ আমাদের সমাজে মোবাইল আসক্তি ও মাদকাসক্তসহ অন্যান্য যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে সেগুলো প্রতিহত করতে এই খেলাগুলো হতে পারে অন্যতম পথ।’
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সুস্থ সংস্কৃতির দিকে আনার জন্য প্রতিটি উপজেলার আমরা এই গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করছে। ইতোমধ্যে আমরা দুইটি উপজেলায় গ্রামীণ খেলার আয়োজন করেছি।’
মাঠভরা দর্শক প্রমাণ করে এখনো সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে গ্রামীণ বাংলার খেলা। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এসব খেলাকে ধরে রাখতে সরকারি উদ্যোগ চান স্থানীয়রা।