চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে চাল বোঝাই জাহাজ আসতে শুরু করেছে। দুটি জাহাজে ভারত থেকে ৫২ হাজার টনের পর এবার মিয়ানমার থেকে আসছে আরো এক লাখ টন চাল। পাকিস্তান থেকেও প্রায় ৫০ হাজার টন চাল আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারি-মার্চের মধ্যেই আড়াই লাখ টন চাল আমদানি করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সরকারি পর্যায়ে বিপুল আমদানি, শুল্ক প্রত্যাহার, ব্যাংক মার্জিন কমানোসহ নানা পদক্ষেপের পরও লাগামহীনভাবে বাড়ছে চালের দাম। এজন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের চাল মজুত ও সরবরাহ ব্যবস্থায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।
গত অর্থবছরে দেশে চাল আমদানিতে শুল্ক কর ছিল ৬৩ শতাংশ। দাম সহনীয় রাখা ও চাল আমদানি উৎসাহিত করতে দুই মাস আগে শুল্ক কর পুরোপুরি তুলে নেয় সরকার।
এরপরেও বেসরকারিভাবে চাল আমদানি বাড়েনি সেভাবে। তাই মজুত বাড়ানো এবং দামে লাগাম টানতে ৬ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
গত ২৬ ডিসেম্বর ভারত থেকে প্রথম চালানে ২৪ হাজার ৬৯০ টন চাল চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আজ (শনিবার, ১১ জানুয়ারি) আরও ২৭ হাজার টন চাল নিয়ে ভারত থেকে আসছে দ্বিতীয় চালান।
চলতি সপ্তাহেই মিয়ানমার থেকে প্রায় ২৫ হাজার টন আতপ চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়বে আরও দু'টি জাহাজ। মিয়ানমার থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এক লাখ টন ও পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হচ্ছে আরো ৫০ হাজার টন আতপ চাল।
সেভেন সিজ শিপিং লাইন্সের সিইও আলী আকবর বলেন, ‘৬ লাখ টন চালের অনুমোদন হয়েছে তার মধ্যে মিয়ানমার থেকে আসবে ১ লাখ টন চাল। তাদের প্রথম জাহাজ আসবে ১৪ তারিখে। বাকি চাল আসবে ইন্ডিয়া থেকে।’
তবে সরকারিভাবে বিপুল চাল আমদানি হলেও, আগ্রহ নেই ব্যক্তি পর্যায়ে আমদানিকারকদের। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের হিসেবে গত ছয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মোট চাল আমদানি হয়েছে ২৫ হাজার টন। এর মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি হয়েছে মাত্র ৩৭১ মেট্রিক টন। তবে ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে বেশি চাল আসে বলে জানান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মো. কাউসার পাটোয়ারি বলেন, ‘যে পরিমাণ চাল সরকার আমদানি করেছে তাতে বাংলাদেশের বাজারে চালের সংকট হবে না।’
পাইকারি চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারে চালের সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও দাম বাড়ছে দফায় দফায়। অসাধু ব্যবসায়ীরা বিপুল চাল মজুত করলেও সরকারি সংস্থাগুলোর নজরদারি না থাকায় তারা পার পেয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম পাহাড়তলি বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের তো সংকট নেই। তাহলে কেন দাম বাড়ছে? সরকার যদি উত্তরবঙ্গের যেসব জায়গায় চাল উৎপাদন হয় সেখানে মনিটরিং করে তাতে চালের বাজার কমে আসবে।’
গত দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে চালের দাম বেড়েছে প্রতি বস্তায় দেড়শ' থেকে দুইশ' টাকা।