ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়ার গ্যাস ও জ্বালানি তেল খাত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৪০৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাশিয়ার তরলীকৃত গ্যাস ও জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রতি মাসে মস্কোকে কয়েকশ’ কোটি ডলার লোকসান গুনতে হবে বলে জানাচ্ছে হোয়াইট হাউস। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মন্তব্য করেছেন, রুশ জ্বালানির ওপর এই নিষেধাজ্ঞার জেরে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম লিটারে ৩ থেকে ৪ সেন্ট বাড়লেও, রাশিয়ার অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বহুগুণে। এদিকে, ১০ জানুয়ারির পর ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পরিকল্পনা করছে ক্রেমলিন।

১৯৯১ সাল থেকে ইউক্রেনের পাইপলাইন ব্যবহার করে ইউরোপের দেশগুলোতে তুলনামূলক সস্তা দামে গ্যাস সরবরাহ করতো রশিয়া। মস্কো আর কিয়েভের মধ্যে ৫ বছরের গ্যাস ট্রানজিটের যে চুক্তি ছিল, নতুন বছরের প্রথম দিন তা অকেজো হয়েছে। ফলে ইউরোপজুড়ে যখন গ্যাস মজুদের তোড়জোড় চলছে তখন মস্কোর তরলীকৃত গ্যাস ও তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর তরল গ্যাসের বাজার ধরতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে ও কাতারের মতো দেশ। গেল ১১ দিন ধরে ইউক্রেন গ্যাস ট্রানজিট বন্ধ রাখায় আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে পারছে না কিয়েভ-মস্কো। আশঙ্কা আছে বাজার হারানোর।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়ার পর এ নিয়ে কথা বলেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।

শীতের জ্বালানির চাহিদা বেশি থাকায় নিষেধাজ্ঞার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসের দাম লিটারে ৩-৪ সেন্ট বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে জো বাইডেন মনে করেন, এতে করে শত কোটি ডলার লোকসান গুনতে হবে মস্কোকে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘পুতিন এখন মারাত্মক চাপে আছেন। তাকে এখন কোন ধরনের ছাড় দেয়া যাবে না। সুযোগ পেলেই পুতিন আরেকজনের ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লাগবে। রাশিয়ার অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিয়ে পুতিন বিপর্যস্ত। ক্ষমতা ছাড়ার আগ পর্যন্ত স্বাধীনতার প্রশ্নে আমি ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন ও সুবিধা দিতে চাই।’

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান জানায়, গেল ২ বছর ধরে মস্কোর গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চড়া দামে প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার পথে ছিল ইউরোপ। যদিও সেখানে গুনতে হবে অতিরিক্ত কিছু অর্থ।

কিন্তু এই ডামাডোলের মধ্যেই গেল মাসে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও গ্যাস আমদানির পরিমাণ না বাড়ানো হলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করবেন তিনি।

এমন বাস্তবতায় এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে মস্কো। শুক্রবার ক্রেমলিন মুখপাত্র জানান, ১০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা আছে তাদের।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার বলেছেন তিনি বিশ্ব নেতাদের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে আগ্রহী। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথেও। তিনি একাধিকবার এই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শর্তহীনভাবেই তিনি আলোচনায় বসতে চান। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে যে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

মার্কিন গণমাধ্যমেও একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে, পুতিনের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতায় বসতে আগ্রহী ট্রাম্প। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ইতি টানতে হলেও আলোচনার বিকল্প নেই।

যদিও এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে ক্রেমলিনের সাথে যোগাযোগ করেনি ট্রাম্প শিবির। এখন ক্ষমতা ছাড়ার আগ মুহূর্তে ডেমোক্র্যাটদের এই মস্কো বিরোধী সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটনের ওপর বাড়তি চাপ হয়ে আসছে কী না- তা নির্ভর করছে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর।

নিউজটি শেয়ার করুন

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়ার গ্যাস ও জ্বালানি তেল খাত

আপডেট সময় : ০৪:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

রাশিয়ার তরলীকৃত গ্যাস ও জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রতি মাসে মস্কোকে কয়েকশ’ কোটি ডলার লোকসান গুনতে হবে বলে জানাচ্ছে হোয়াইট হাউস। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মন্তব্য করেছেন, রুশ জ্বালানির ওপর এই নিষেধাজ্ঞার জেরে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম লিটারে ৩ থেকে ৪ সেন্ট বাড়লেও, রাশিয়ার অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বহুগুণে। এদিকে, ১০ জানুয়ারির পর ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পরিকল্পনা করছে ক্রেমলিন।

১৯৯১ সাল থেকে ইউক্রেনের পাইপলাইন ব্যবহার করে ইউরোপের দেশগুলোতে তুলনামূলক সস্তা দামে গ্যাস সরবরাহ করতো রশিয়া। মস্কো আর কিয়েভের মধ্যে ৫ বছরের গ্যাস ট্রানজিটের যে চুক্তি ছিল, নতুন বছরের প্রথম দিন তা অকেজো হয়েছে। ফলে ইউরোপজুড়ে যখন গ্যাস মজুদের তোড়জোড় চলছে তখন মস্কোর তরলীকৃত গ্যাস ও তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর মস্কোর তরল গ্যাসের বাজার ধরতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে ও কাতারের মতো দেশ। গেল ১১ দিন ধরে ইউক্রেন গ্যাস ট্রানজিট বন্ধ রাখায় আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে পারছে না কিয়েভ-মস্কো। আশঙ্কা আছে বাজার হারানোর।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়ার পর এ নিয়ে কথা বলেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও।

শীতের জ্বালানির চাহিদা বেশি থাকায় নিষেধাজ্ঞার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসের দাম লিটারে ৩-৪ সেন্ট বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে জো বাইডেন মনে করেন, এতে করে শত কোটি ডলার লোকসান গুনতে হবে মস্কোকে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘পুতিন এখন মারাত্মক চাপে আছেন। তাকে এখন কোন ধরনের ছাড় দেয়া যাবে না। সুযোগ পেলেই পুতিন আরেকজনের ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লাগবে। রাশিয়ার অর্থনৈতিক দুরবস্থা নিয়ে পুতিন বিপর্যস্ত। ক্ষমতা ছাড়ার আগ পর্যন্ত স্বাধীনতার প্রশ্নে আমি ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন ও সুবিধা দিতে চাই।’

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান জানায়, গেল ২ বছর ধরে মস্কোর গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চড়া দামে প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার পথে ছিল ইউরোপ। যদিও সেখানে গুনতে হবে অতিরিক্ত কিছু অর্থ।

কিন্তু এই ডামাডোলের মধ্যেই গেল মাসে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও গ্যাস আমদানির পরিমাণ না বাড়ানো হলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করবেন তিনি।

এমন বাস্তবতায় এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে মস্কো। শুক্রবার ক্রেমলিন মুখপাত্র জানান, ১০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা আছে তাদের।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার বলেছেন তিনি বিশ্ব নেতাদের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে আগ্রহী। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথেও। তিনি একাধিকবার এই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শর্তহীনভাবেই তিনি আলোচনায় বসতে চান। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে যে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব।’

মার্কিন গণমাধ্যমেও একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে, পুতিনের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতায় বসতে আগ্রহী ট্রাম্প। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ইতি টানতে হলেও আলোচনার বিকল্প নেই।

যদিও এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে ক্রেমলিনের সাথে যোগাযোগ করেনি ট্রাম্প শিবির। এখন ক্ষমতা ছাড়ার আগ মুহূর্তে ডেমোক্র্যাটদের এই মস্কো বিরোধী সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটনের ওপর বাড়তি চাপ হয়ে আসছে কী না- তা নির্ভর করছে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর।