যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানলের আগুন নিয়ন্ত্রণে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের দুটি বড় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স চানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। এর আগে প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। গতকাল থেকে বাতাসের গতি কমে আসায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে।
গত মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির আশপাশে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত ভয়াবহ এ দাবানলে অন্তত ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ধ্বংস হয়েছে অন্তত ১০ হাজার অবকাঠামো। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ দিকে দাবানলের মধ্যেই শুরু হয়েছে ব্যাপক লুটপাট। সহিংসতা ও লুটপাট থামাতে লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি করা হয়েছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা উদ্ধারকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া দাবানল এলাকায় সর্বসাধারণের উপস্থিতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
যদি কেউ কারফিউ লঙ্ঘন করে বাইরে বের হয়, তাকে ১ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা অথবা ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির কর্মকর্তারা।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের পশ্চিম প্রান্তে প্যালিসেইডস এলাকার আগুন এবং পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত টন এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গতকালের আগ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার মাত্রা ছিল শূন্য শতাংশ। অবশেষে গতকাল থেকে প্যালিসেইডসের আগুন ৮ শতাংশ এবং ইটনের আগুন ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এরই মধ্যে এই দুই অঞ্চলের প্রায় ৩৪ হাজার একর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন বাস গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে সাফল্যের খবরও পাওয়া গেছে। তবে আগামী সপ্তাহের শুরুতে বাতাসের তীব্রতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসকে প্রস্তুত রাখা ও জীবন বাঁচানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করা আমাদের প্রথম কাজ।’
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, পাঁচটি দাবানলের আগুন নেভাতে এখনো সংগ্রাম করছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা।