ঢাকা ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

প্রেমিকের চোখে প্রেয়সীর চেয়েও লাবণ্যময়ী প্যারিস

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২৬:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। প্রেমের নগরী হিসেবে পৃথিবীজোড়া খ্যাতি রয়েছে ‘সিটি অফ লাভ’ খ্যাত এ শহরটির। প্যারিসে মোহিত হয়ে কবি লিখেছেন অর্ধেক নগরী তুমি, অর্ধেক কল্পনা। এটি কি কেবলই রোমান্টিক শহর নাকি এর বাইরেও আছে আলাদা কোনো তাৎপর্য।

গোটা শহরই যেন একটি ছবি, আভিজাত্য ও শিল্পে পৃথিবীময় নন্দিত নগরী প্যারিস। যার ব্যাখ্যা দিতে গেলে বাড়ে উপাখ্যান। এই শহর সাহিত্যকর্মের জন্য তীর্থ, প্রেমিকের চোখে প্রেয়সীর চেয়েও লাবণ্যময়ী। আবার ভ্রমণে যাদের তৃষ্ণা তাদের সঙ্গেও প্যারিসের নিদারুণ যোগসূত্র।

প্যারিসের সঙ্গে আইফেল টাওয়ারের হৃদ্যতা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। ১৮৮৯ সালে নির্মিত এই টাওয়ার প্যারিসকে দারুণভাবে চিত্রিত করেছে। ঐতিহাসিক থেকে এটি এখন রোমান্টিক পাড়ায় পরিণত হয়েছে। আইফেল টাওয়ারের সামনে প্রিয়তমাকে প্রেম নিবেদন করতেই যেন পূর্ণতা। ৩২৪ মিটার উচ্চতার এই টাওয়ারের চূড়ায় বসে প্যারিসে বিমুগ্ধ হওয়ার সুযোগও রয়েছে।

প্যারিসকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে সেইন নদী। শহরের সৌন্দর্যে স্থায়ী ভিত তৈরি করেছে নদীটি। এর কিনারায় রচিত হয়েছে কতশত কবিতা-উপন্যাস। তীর ঘেঁষা রাস্তায় দেখা মেলে বিখ্যাত সব সাহিত্যিকদের।

প্যারিসকে বলা হয় সিটি অব লাভ, তাই রোমান্টিকতা নিয়ে এ শহরে আছে নানা আয়োজন। নদীর পাড়ে চোখে পড়বে অগণিত লাভ লক। সেইন নদীকে মানা হয় ভালোবাসার সাক্ষী। তাই তো নিজেদের নাম লিখা তালা ঝুলিয়ে আসেন যুগলরাও।

ফ্রান্সের ঐতিহ্য সম্বলিত মিউজিয়াম ল্যুভর এ শহরেই অবস্থিত, ১৭৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া জাদুঘরটি পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় সংগ্রহশালাগুলোর একটি। সাড়ে ছয় লাখ বর্গফুটের বেশি জায়গাজুড়ে এর বিস্তৃতি। এটি ৩৮ হাজারের বেশি প্রাগৈতিহাসিক জিনিসের সংগ্রহশালা। প্রবেশদ্বারে কাঁচের তৈরি পিরামিড বিমুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। বছরে প্রায় এক কোটি পর্যটক জাদুঘরটি পরিদর্শনে আসেন। ধরিত্রীর বিস্ময় লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির শিল্পকর্ম মোনালিসাও এখানে আছেন পরম যত্নে।

প্যারিসে রয়েছে ৮০০ বছরের পুরনো নটরডেম ক্যাথড্রেল বা গির্জা। যা তৈরি করতেই লেগে যায় প্রায় ২০০ বছর। যেটি লম্বায় ১৩০ মিটার ও উচ্চতায় ৬৯ মিটার। এখানে অসংখ্য যোদ্ধার সংগ্রহশালা। দুনিয়া কাঁপানো সেনাপতি নেপোলিয়নের যুদ্ধ বিজয়ের হাতিয়ারও এখানে সংরক্ষিত।

এ নগরীর প্রতিবাদের ভাষাও যেন চিত্রকর্ম। শিল্পীর তুলিতে দেয়াল ও সড়ক নিপুণ সব গ্রাফিতি-পেইন্টিং দিয়ে অঙ্কিত। যা মুগ্ধ করবে যে কাউকে।

দিনের বেলার ব্যস্ত প্যারিস রাতে যেন আরও আবেদনময়ী। এক সময় এটিকে বলা হতো আলোর শহর। আলোর ঝলকানিতে এ শহর অনন্য। রাত যত বাড়ে ততই বাড়তে থাকে আলোর খেলা। তাই পর্যটকদের কাছে রাতের আকাশের আছে ভিন্ন এক তাৎপর্য।

ডিস্কো ও ফ্যাশন শোর জন্য প্যারিসের রয়েছে আলাদা সুখ্যাতি। ফ্যাশন দুনিয়ার রাজধানী এটি। বিশ্বের ফ্যাশন প্রেমীদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট প্যারিস ফ্যাশন উইক। সব ফ্যাশন মডেলের স্বপ্ন এই মঞ্চে ক্যাটওয়াক করা। এতে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন মডেলরাও অংশ নেন।

কী নেই এই জাদুর শহরে! আছে প্রেমের অনুরক্তি, হয়তো আছে অজানা আর্তনাদ। তবে জন কিটসের বিখ্যাত উক্তি ‘সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য’- এমনই এক মাধুর্যে মোড়ানো সিটি অফ লাভ ‘প্যারিস’।

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রেমিকের চোখে প্রেয়সীর চেয়েও লাবণ্যময়ী প্যারিস

আপডেট সময় : ১২:২৬:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। প্রেমের নগরী হিসেবে পৃথিবীজোড়া খ্যাতি রয়েছে ‘সিটি অফ লাভ’ খ্যাত এ শহরটির। প্যারিসে মোহিত হয়ে কবি লিখেছেন অর্ধেক নগরী তুমি, অর্ধেক কল্পনা। এটি কি কেবলই রোমান্টিক শহর নাকি এর বাইরেও আছে আলাদা কোনো তাৎপর্য।

গোটা শহরই যেন একটি ছবি, আভিজাত্য ও শিল্পে পৃথিবীময় নন্দিত নগরী প্যারিস। যার ব্যাখ্যা দিতে গেলে বাড়ে উপাখ্যান। এই শহর সাহিত্যকর্মের জন্য তীর্থ, প্রেমিকের চোখে প্রেয়সীর চেয়েও লাবণ্যময়ী। আবার ভ্রমণে যাদের তৃষ্ণা তাদের সঙ্গেও প্যারিসের নিদারুণ যোগসূত্র।

প্যারিসের সঙ্গে আইফেল টাওয়ারের হৃদ্যতা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। ১৮৮৯ সালে নির্মিত এই টাওয়ার প্যারিসকে দারুণভাবে চিত্রিত করেছে। ঐতিহাসিক থেকে এটি এখন রোমান্টিক পাড়ায় পরিণত হয়েছে। আইফেল টাওয়ারের সামনে প্রিয়তমাকে প্রেম নিবেদন করতেই যেন পূর্ণতা। ৩২৪ মিটার উচ্চতার এই টাওয়ারের চূড়ায় বসে প্যারিসে বিমুগ্ধ হওয়ার সুযোগও রয়েছে।

প্যারিসকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে সেইন নদী। শহরের সৌন্দর্যে স্থায়ী ভিত তৈরি করেছে নদীটি। এর কিনারায় রচিত হয়েছে কতশত কবিতা-উপন্যাস। তীর ঘেঁষা রাস্তায় দেখা মেলে বিখ্যাত সব সাহিত্যিকদের।

প্যারিসকে বলা হয় সিটি অব লাভ, তাই রোমান্টিকতা নিয়ে এ শহরে আছে নানা আয়োজন। নদীর পাড়ে চোখে পড়বে অগণিত লাভ লক। সেইন নদীকে মানা হয় ভালোবাসার সাক্ষী। তাই তো নিজেদের নাম লিখা তালা ঝুলিয়ে আসেন যুগলরাও।

ফ্রান্সের ঐতিহ্য সম্বলিত মিউজিয়াম ল্যুভর এ শহরেই অবস্থিত, ১৭৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া জাদুঘরটি পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় সংগ্রহশালাগুলোর একটি। সাড়ে ছয় লাখ বর্গফুটের বেশি জায়গাজুড়ে এর বিস্তৃতি। এটি ৩৮ হাজারের বেশি প্রাগৈতিহাসিক জিনিসের সংগ্রহশালা। প্রবেশদ্বারে কাঁচের তৈরি পিরামিড বিমুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। বছরে প্রায় এক কোটি পর্যটক জাদুঘরটি পরিদর্শনে আসেন। ধরিত্রীর বিস্ময় লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির শিল্পকর্ম মোনালিসাও এখানে আছেন পরম যত্নে।

প্যারিসে রয়েছে ৮০০ বছরের পুরনো নটরডেম ক্যাথড্রেল বা গির্জা। যা তৈরি করতেই লেগে যায় প্রায় ২০০ বছর। যেটি লম্বায় ১৩০ মিটার ও উচ্চতায় ৬৯ মিটার। এখানে অসংখ্য যোদ্ধার সংগ্রহশালা। দুনিয়া কাঁপানো সেনাপতি নেপোলিয়নের যুদ্ধ বিজয়ের হাতিয়ারও এখানে সংরক্ষিত।

এ নগরীর প্রতিবাদের ভাষাও যেন চিত্রকর্ম। শিল্পীর তুলিতে দেয়াল ও সড়ক নিপুণ সব গ্রাফিতি-পেইন্টিং দিয়ে অঙ্কিত। যা মুগ্ধ করবে যে কাউকে।

দিনের বেলার ব্যস্ত প্যারিস রাতে যেন আরও আবেদনময়ী। এক সময় এটিকে বলা হতো আলোর শহর। আলোর ঝলকানিতে এ শহর অনন্য। রাত যত বাড়ে ততই বাড়তে থাকে আলোর খেলা। তাই পর্যটকদের কাছে রাতের আকাশের আছে ভিন্ন এক তাৎপর্য।

ডিস্কো ও ফ্যাশন শোর জন্য প্যারিসের রয়েছে আলাদা সুখ্যাতি। ফ্যাশন দুনিয়ার রাজধানী এটি। বিশ্বের ফ্যাশন প্রেমীদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট প্যারিস ফ্যাশন উইক। সব ফ্যাশন মডেলের স্বপ্ন এই মঞ্চে ক্যাটওয়াক করা। এতে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন মডেলরাও অংশ নেন।

কী নেই এই জাদুর শহরে! আছে প্রেমের অনুরক্তি, হয়তো আছে অজানা আর্তনাদ। তবে জন কিটসের বিখ্যাত উক্তি ‘সত্যই সুন্দর, সুন্দরই সত্য’- এমনই এক মাধুর্যে মোড়ানো সিটি অফ লাভ ‘প্যারিস’।