ভারতের মণিপুর রাজ্য আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। গতকাল শনিবার দিনভর নাগা ও কুকি–জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের পর সন্ধ্যায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া পৃথক আরেকটি ঘটনায় আসাম রাইফেলসের একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মণিপুরের কাংপোকপি জেলার একটি মহকুমায় কারফিউ জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে।
মণিপুরের কর্মকর্তারা বলেছেন, নাগা-অধ্যুষিত কনসাখুল গ্রাম এবং কুকি-জো-অধ্যুষিত লেইলন ভাইফেই গ্রামের গ্রামবাসীদের মধ্যে গত তিন দিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। কনসাখুল গ্রামবাসীদের দাবি, লেইলন ভাইফেই গ্রাম তাদের ভূখণ্ড। কিন্তু লেইলন ভাইফেইয়ের গ্রামবাসীরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। এই নিয়েই মূলত বিরোধ এবং উত্তেজনার সূত্রপাত।
গত বছরের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েকজন এমপির বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির অদূরে বোমা উদ্ধার হয়। এই আবহে গত ৩১ ডিসেম্বর মণিপুরের অশান্তির জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চান মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আশা করেছিলেন, চলতি বছরে শান্তি ফিরবে মণিপুরে। এরই মধ্যে আবারও অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, গতকাল শনিবার নাগা জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায় বাড়ি তৈরির জন্য কাঠ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন। অভিযোগ, কাঠবোঝাই গাড়িটি আটকে দেন আসাম রাইফেলসের জওয়ানেরা। তার পর থেকেই শুরু হয় অসন্তোষ। এক পর্যায়ে সেনাদের একটি অস্থায়ী ঘাঁটিতে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিক জনতা।