গ্রিনল্যান্ড কিনতে কত লাগবে? চলছে আলোচনা
- আপডেট সময় : ০৩:২৬:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার কথা বলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন ঘটনা অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নয়। এর আগেও আলাস্কা অঙ্গরাজ্য কিনে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার কাছ থেকে এ ভূখণ্ড কিনে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় হয়েছিল ৭২ লাখ ডলার। এখন গ্রিনল্যান্ড কিনে নিতে কত ব্যয় হতে পারে, সেটি নিয়েই চলছে বিশ্বজুড়ে আলোচনা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ এবং আলাস্কার দামের ওপর ভিত্তি করে এবং মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য করে গ্রিনল্যান্ডের একটি আনুমানিক দাম নির্ধারণ করেছেন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার এবং নিউ ইয়র্ক ফেডের প্রাক্তন অর্থনীতিবিদ ডেভিড বার্কার। তিনি বলেন, ‘ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কিনতে ট্রাম্পকে ১ হাজার ২৫০ কোটি থেকে ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার গুনতে হতে পারে।’
গ্রিনল্যান্ডের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়। ২০১৯ সালেও তিনি একবার গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। স্নায়ুযদ্ধের সময় থেকেই কৌশলগত কারণে গ্রিনল্যান্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। এ কারণে ১৯৪৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ১০ কোটি ডলার মূল্যের স্বর্ণের বিনিময়ে এটি ডেনমার্কের কাছ থেকে কিনতে চেয়েছিলেন। তবে ডেনিস সরকার ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
ভূখণ্ড কিনে নেওয়ার ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন নয়। এর আগে লুইজিয়ানা, আলাস্কা ও ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ কিনে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখন ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ড বিক্রি করতে না চাইলেও ১৯১৭ সালে ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ বিক্রি করেছিল ওয়াশিংটনের কাছে। আর ১৮০৩ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে লুইজিয়ানা কিনে নিয়েছিল দেড় কোটি ডলার সোনার মূল্যে।
ডেভিড বার্কার বলেন, ‘মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য গ্রিনল্যান্ডের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটি বিবেচনা করলে এর মূল্য অবশ্যই অনেক বেশি হবে। তবে শুধু খনিজ পদার্থ বিবেচনা করলে, এটি মার্কিন অর্থনীতির জন্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
এর আগে ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গ্রিনল্যান্ডের সম্পদের মূল্য ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার হতে পারে। তবে ডেভিড বার্কার এই অনুমানকে অবাস্তব বলেছেন।
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি গ্রিনল্যান্ড নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন ট্রাম্প। তিনি সরাসরি বলেন, জাতীয় ও আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত করা জরুরি। এ জন্য দ্বীপটি তিনি কিনে নিতে চান। প্রয়োজনে এই দ্বীপ দখল করতে মার্কিন সামরিক বাহিনীকেও ব্যবহার করার হুমকি দেন ট্রাম্প।
বলে রাখা প্রয়োজন, গ্রিনল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি বড় ঘাঁটি রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত সামরিক জোট নেটোর সদস্য ডেনমার্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও যথেষ্ট ভালো।
কিন্তু ট্রাম্পের সাম্প্রতিক আগ্রাসী মন্তব্যের কারণে দুই দেশের সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এরই মধ্যে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডারিকসেন বলেছেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কেরও নয়। গ্রিনল্যান্ড হলো গ্রিনল্যান্ডবাসীদের।
অন্য দিকে গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগেদে বলেছেন, ‘কেউ এই ভূমি কব্জা করবে, তা আমরা কখনোই বরদাস্ত করব না।’