আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে বৈধতা না দিতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। গতকাল রোববার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে মুসলিম দেশগুলোর মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ক এক সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
তালেবানের কঠোর শাসনব্যবস্থা নারীদের শিক্ষার সুযোগ, কর্মসংস্থান ও মৌলিক অধিকারগুলো প্রায় সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মালালা বলেন, ‘তালেবান নারীদের মানুষ মনে করে না। তারা তাদের অপরাধগুলোকে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যুক্তিতে আড়াল করার চেষ্টা করে।’
মুসলিম বিশ্বের নেতাদের প্রতি মালালা বলেন, ‘তালেবানকে বৈধতা দেবেন না। মুসলিম নেতাদের এখনই সময় নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করার। সঠিক নেতৃত্ব ও প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে জানানোর এখনই সময়।’
ইসলামিক বিশ্বে নারীদের শিক্ষা নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সম্মেলনে অংশ নিতেই পাকিস্তান যান মালালা।
মেয়েদের শিক্ষার পক্ষে প্রচার চালানো মালালা ২০১২ সালে পাকিস্তানি তালেবানের হাতে গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সুস্থ হওয়ার পর থেকে মালালা মেয়েদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। ২০১২ সালের পর এনিয়ে তিনবারের মতো নিজ দেশ পাকিস্তান সফর করেন তিনি।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর তালেবান সরকার কঠোর আইন প্রয়োগ করেছে। তাদের বিভিন্ন বিধিনিষেধের ফলে নারীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ বন্ধ হয়েছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন চাকরি থেকেও তারা বঞ্চিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবান সরকারের বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে একমত হলেও শাসকগোষ্ঠীটির সঙ্গে কীভাবে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। অনেকে বলছেন, তালেবানকে কূটনৈতিক মহল থেকে একঘরে করে রাখা উচিত, আবার অনেকে আলোচনা ও যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।