গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নতুন সমস্যা, আগ্রহ হারাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
- আপডেট সময় : ০৭:৫২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর আর্থিক ও শারীরিক ভোগান্তি কমলেও তৈরি হয় নতুন সমস্যা। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে থেকে ৪টি বিশ্ববিদ্যালয় বের হয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া প্রকৌশল গুচ্ছও ভেঙে গেছে। সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করা হলেও ব্শ্বিবিদ্যালয়গুলোর আবেদন ফি এখনও অনেক বাড়তি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা উপদেষ্টার চিঠিকে বিবেচনায় রাখার আহ্বান ইউজিসি’র।
এইচএসসির ফলের পরপরই গুচ্ছ থেকে বের হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ সেশনের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের মাঝে সৃষ্টি হয় শঙ্কা। গুচ্ছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বের হয়ে আলাদা করে পরীক্ষা না নেয়, সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরে গতবছর নভেম্বরে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা।
এরপর ডিসেম্বরে প্রথমে শিক্ষা উপদেষ্টা সরাসরি এবং ২য় বার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়ে গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতিতে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়।
যা উপেক্ষা করেই গুচ্ছ থেকে একেএকে বের হয়ে আলাদা করে ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি দেয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। কৃষিগুচ্ছ থাকলেও ভেঙে যায় প্রকৌশল গুচ্ছও। কিন্তু গুচ্ছ থেকে কেন বের হবার এই সিদ্ধান্ত?
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যেটা আছে, আমাদের যে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল তারা যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেভাবেই আমরা ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম।’
গুচ্ছ পদ্ধতির ফলে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার আর্থিক ও শারীরিক ভোগান্তি কমলেও দেখা দেয় নতুন সমস্যা। মাইগ্রেশনসহ ভর্তি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা যেখানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ১ম কিংবা ২য় সেমিস্টার শেষ হলেও এখনও শেষ হয়নি ওই সেশনের ভর্তি প্রক্রিয়া।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, ‘সামনের গুচ্ছ পরীক্ষাতে কীভাবে কষ্ট লাঘব করা যায় আমরা সে চিন্তা করতে পারি এবং শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের যেন কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়।’
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি পুনঃনির্ধারণ করে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করলেও দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি এখনও অনেক বেশি।
বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হওয়ায় ভর্তিচ্ছুদের গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে সংস্কারের পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘কোনটা ভালো হয় ছাত্রদের জন্য এরকম একটা ব্যবস্থা যদি করতে পারে এটাকে আমি প্রশংসা করবো। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা উপদেষ্টার চিঠিকে সম্মানের সাথে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান থাকবে। উনি অত্যন্ত সুন্দর একটা চিঠি লিখেছেন। এটা চাপিয়ে দেয়ার বিষয় না। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এটাও আমি বিশ্বাস করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা উপদেষ্টার চিঠিকে বিবেচনায় রাখার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের।