দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা নেয়ার পর নেতৃত্বদানের অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সীমান্ত সংকট সমাধান, রাজস্ব আয়ে রেকর্ড পরিমাণ ঘাটতি মোকাবিলা কিংবা তেলের বাজার দখলের ম্যানডেটে মনোযোগ দিয়ে নিষ্কৃতি পাবেন না এই রিপাবলিকান নেতা। সিএনএন বলছে, সরকারি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরার আগেও দাবানল কবলিত লস অ্যাঞ্জেলেস পুনর্গঠনে ত্রাণ তহবিলে অর্থ সরবরাহ সচল করার চ্যালেঞ্জ সহজ হবে না ট্রাম্পের জন্য।
শুধু ক্যালিফোর্নিয়ার নয়, লস অ্যাঞ্জেলেসের আগুনের আঁচ পৌঁছাতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। দাবানল পরিস্থিতি যত অবনতির দিকে যাচ্ছে ততই উৎসবের আড়ম্বর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে রিপাবলিকান শিবির।
আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় দফায় ওভাল অফিসের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। ক্ষমতা নেয়ার প্রথম দিন থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়া কোনো প্রেসিডেন্টের জন্যই সহজ নয়। অবধারিতভাবে, শপথ নেয়ার পর ফেডারেল সরকারের ব্যয় কমানোর ঝক্কি সামলাতে হবে ট্রাম্পকে। ৬ মাসেরও কম সময়ে ঠেকাতে হবে সরকারি দপ্তরের অচলাবস্থা।
গার্ডিয়ান বলছে, মাত্র ৫ আসনের সামান্য ব্যবধানে কংগ্রেসের আধিপত্য পেলেও হাউজে যে কোনো বিল পাশ করাই ট্রাম্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তার ওপর লস অ্যাঞ্জেলেসবাসীর পাশে দাঁড়াতে সরকারি ত্রাণ তহবিলে অর্থের যোগান সচল রাখার বাড়তি চাপ নিতে হবে তাকে।
যদিও রিপাবলিকান প্রচারদলের দাবি, ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল থেকে রাজনৈতিক সুবিধাও নিতে পারেন ট্রাম্প। গৃহহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বাড়াতে পারেন ভোট ব্যাংক। আর নিউজম্যাক্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প স্বয়ং দাবি করেছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের ভোল পাল্টে ফেলবেন তিনি। দাবানল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও পুনর্গঠন পরিকল্পনায় ব্যক্তিগত ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করছেন বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
যদিও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দাবানল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেয়ার অভিযোগ ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নরের। এনবিসি নিউজের সাক্ষাৎকারে গ্যাভিন নিউসম আরও দাবি করেন, ক্যালিফোর্নিয়ার দুর্গত বাসিন্দাদের জন্য সরকারি তহবিল স্থগিতের হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম বলেন, ‘ইউটা ও মিশিগান কর্তৃপক্ষের সাথেও ট্রাম্প একই কাজ করেছেন। ২০১৮ সালে আমি যখন গভর্নর ছিলাম না, পুয়ের্তো রিকো বা ক্যালিফোর্নিয়ার খারাপ সময়ে ট্রাম্প এই একই আচরণ করেছেন। পরে যখন ট্রাম্প জানতে পারেন ওরেঞ্জ কাউন্টির ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন তখন তহবিলের অনুমোদন দিয়েছেন। একই কাজ করেছেন জর্জিয়াবাসীর সাথেও।’
ট্রাম্পের গেল শাসনামলে একাধিক ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতারা অভিযোগ করেন, যে সব অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকানদের ভোট ব্যাংক নেই, সেখানে সরকারি বরাদ্দ পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হলে আগে ভোটের রাজনীতিকে বড় করে দেখেন এই বর্ষীয়ান নেতা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট শিবিরের দাবি, পুয়ের্তো রিকোর হ্যারিকেন কিংবা কভিড নাইন্টিন মহামারী- গেল শাসনামলে ট্রাম্পের হাত গুটিয়ে নেয়ার এমন ভুরিভুরি উদাহরণ আছে। ফলে, দাবানলে পুড়ে ছাই লস অ্যাঞ্জেলেস পুনর্গঠনই হতে যাচ্ছে ট্রাম্প 'টু পয়েন্ট ও' প্রশাসনের প্রথম অগ্নিপরীক্ষা।