মাদ্রাসা-এতিমখানার নামে লুট হচ্ছে সরকারি বরাদ্দের চাল
- আপডেট সময় : ০৩:২০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪২ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রামে অস্তিত্বহীন মাদ্রাসা আর এতিমখানার নামে লুট হচ্ছে সরকারি বরাদ্দের শত শত টন চাল। এতে বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত এতিম ও মাদরাসা ছাত্ররা। সম্প্রতি নগরীর এমন কয়েকটি ভুয়া এতিমখানা ও মাদরাসার নামে বরাদ্দ হওয়া চাল জব্দ করে পুলিশ। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে দীর্ঘদিন ধরে এসব চাল গোপনে বাজারে বিক্রি করে আসছিলো একটি চক্র।
সরকার যে খাদ্য সহায়তা দেয় চট্টগ্রামসহ আশেপাশের জেলায় সেসব চাল বণ্টন হয় এখান থেকে। প্রতিদিন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায় চালবাহী শত শত ট্রাক। তেমনই তিনটি ট্রাক শাহ আমানত সেতু পার হয়ে কক্সবাজার সড়কে যাওয়ার সময় আটক করে বাকলিয়া থানা পুলিশ। কিন্তু সরকারি সহায়তার চাল পুলিশ কেন আটক করলো? সেখান থেকেই অনুসন্ধানের শুরু।
পুলিশ জানায়, নগরী থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী এসব ট্রাকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টন চাল, যা নগরীর বিভিন্ন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্য বরাদ্দ। তবে নগরীর ভেতরকার প্রতিষ্ঠানের চাল কেন নগর ছাড়িয়ে বাইরে যাচ্ছিল সে সন্দেহ জাগে পুলিশের।
বরাদ্দের কাগজে দেখা যায়, পাহাড়তলির আবু বকর ছিদ্দিক আদর্শ মাদ্রাসা, বাকলিয়ার বায়তুল রিদওয়ান এতিমখানা, আকমল আলী রোড এলাকার দারুল আরহাম করিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কাট্টলী মধু চৌধুরী রোড এলাকার মিছবাহুল কুরআন হিফজ মাদরাসাসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের জন্য এ চাল বরাদ্দ হয়।
বরাদ্দপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বায়তুল রিদওয়ানের অবস্থান বাকলিয়ার নগরীর আব্দুল লতিফহাট এলাকায়। সেখানে প্রতিষ্ঠানটির খোঁজ করলে স্থানীয়রা কেউ এতিমখানাটির সন্ধান দিতে পারলেন না। আশেপাশের এলাকাতেও খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না।
জানা যায়, মূলত ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের দেয়া তালিকা অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানের নামে চাল বিতরণ করে খাদ্য বিভাগ। জেলায় এ তালিকা দেন ত্রাণ ও দুর্যোগ কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠান আছে কী নেই সেটি দেখার দায়িত্বও তাদের।
গেলো ছয় মাসে অন্তত আড়াই হাজার টন এমন চাল বরাদ্দ পেয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তবে ক্যামেরার সামনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি কর্মকর্তা। পরে মোবাইল ফোনে তার বক্তব্য ধারণ করা হয়।
এবার গন্তব্য জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান কিভাবে বরাদ্দ পেলো জানতে চাইলে জবাবে অসহায়ত্ব ত্রাণ কর্মকর্তার কণ্ঠে। জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে এসব বরাদ্দ দেয়া হয়। মহানগরীতে জনবল সংকটে এসব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া সম্ভব হয় না অনেকাংশেই।
মূলত অগ্নিদুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারী সহায়তা হিসেবে চাল বরাদ্দ দেয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়।