ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাজায় অস্ত্রবিরতির কৃতিত্বের দাবি বাইডেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৫:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজায় অস্ত্রবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার প্রশাসনের নিরলস পরিশ্রম ও কূটনৈতিক কৌশলে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত আসায় উভয়পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রধান। ইসরাইল ও হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন তুরস্ক, মিশর, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। জিম্মি পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন ফিলিস্তিনের সমর্থকরা।

ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে শিশুরা। আনন্দে একে অপরকে আলিঙ্গন করছেন কেউ কেউ। যদিও দৃশ্যটি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশের নয়। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে সম্মত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ব্রিজভিউ শহরে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনের সমর্থকরা।

ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একজন বলেন, ‘১৬ মাস ধরে টানা হামলা, ১৬ মাস ধরে গণহত্যা চালানো, এত কিছুর পরও গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইল। তারা পরাজিত এবং অপমানিত হয়ে গাজা থেকে বিতাড়িত হচ্ছে।’

ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় একজন বলেন, ‘যুদ্ধে জিতে গেছি এটা বলা কঠিন, যুদ্ধে আমাদের জয় হবে- এমনটা দাবি করা আরও কঠিন।’

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাত থেকে বিশ্বের নানা প্রান্তে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। জর্ডান, মিশর, কাতার, জার্মানি, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি আফ্রিকার দেশগুলোর ফিলিস্তিনি কমিউনিটিতে ছিল উৎসবের আমেজ। আর ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির খবরে উচ্ছ্বসিত ইসরাইলিরাও। জেরুজালেম ও তেল আবিবের রাস্তায় দেখা গেছে সেই চিত্র।

ইসরাইলি একজন বলেন, ‘এ এক অদ্ভুত অনুভূতি! একবার মনে হচ্ছে আমি অনেক খুশি। আবার মনে হচ্ছে যখন দেখব ইসরাইল সীমান্ত পেড়িয়ে জিম্মিরা দেশে ফিরে আসছেন তখন হয়তো সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হব।’

স্থানীয় একজন ইসরাইলি বলেন, ‘আমরা যতটা আনন্দিত, তার চেয়েও বেশি স্বস্তিতে। তবে সবচেয়ে বেশি খুশি হব যখন ওফার বাড়ি ফিরে আসবে।’

এদিকে ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া তিন ধাপের এই যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়নে মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকায় সফল হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইসরাইল ও হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম, রেড ক্রস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন। আর অস্ত্রবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার প্রশাসনের দাঁড় করানো ফ্রেমওয়ার্ক মেনেই কাজ করতে হবে ট্রাম্পকে।

জো বাইডেন বলেন, ‘আমার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আট মাস নিরলস পরিশ্রমের ফলে জিম্মিদের মুক্তি এবং অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। গেল বছরের মে মাসে আমি পূর্ণাঙ্গ একটি সমাধানে নকশা প্রণয়ন করেছি। পরবর্তী প্রশাসনকে সেই পথ ধরেই সামনে অগ্রসর হতে হবে। নির্দেশ দিয়েছি তাদের যেন সব ধরনের সহায়তা করা হয়।’

অস্ত্রবিরতির কৃতিত্ব নেয়া নিয়ে শীতল যুদ্ধ চলছে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত ও বিদায়ী প্রেসিডেন্টের মধ্যে। বুধবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস সম্মত হওয়ার পর জো বাইডেনের আগেই ট্রুথ স্যোশালে পোস্ট দেন ট্রাম্প। দাবি করেন এই কৃতিত্বের অংশীদার তিনিও। এর আগে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ক্ষমতা নেয়ার আগে হামাস অস্ত্রবিরতিতে সম্মত না হলে মধ্যপ্রাচ্যকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ায় ইসরাইল-হামাসকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন সৌদি আরব ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কাতার ও মিশরের রাষ্ট্রপ্রধানসহ স্পেন, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী। আর গাজায় চলমান সংঘাতে অস্ত্র বিরতির সিদ্ধান্তেকে হামাস ও ফিলিস্তিনের বিজয় হিসেবে দেখছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় অস্ত্রবিরতির কৃতিত্বের দাবি বাইডেনের

আপডেট সময় : ০৬:৫৫:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

গাজায় অস্ত্রবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার প্রশাসনের নিরলস পরিশ্রম ও কূটনৈতিক কৌশলে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত আসায় উভয়পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রধান। ইসরাইল ও হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন তুরস্ক, মিশর, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। জিম্মি পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন ফিলিস্তিনের সমর্থকরা।

ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে শিশুরা। আনন্দে একে অপরকে আলিঙ্গন করছেন কেউ কেউ। যদিও দৃশ্যটি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশের নয়। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে সম্মত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ব্রিজভিউ শহরে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনের সমর্থকরা।

ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একজন বলেন, ‘১৬ মাস ধরে টানা হামলা, ১৬ মাস ধরে গণহত্যা চালানো, এত কিছুর পরও গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইল। তারা পরাজিত এবং অপমানিত হয়ে গাজা থেকে বিতাড়িত হচ্ছে।’

ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় একজন বলেন, ‘যুদ্ধে জিতে গেছি এটা বলা কঠিন, যুদ্ধে আমাদের জয় হবে- এমনটা দাবি করা আরও কঠিন।’

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাত থেকে বিশ্বের নানা প্রান্তে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। জর্ডান, মিশর, কাতার, জার্মানি, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি আফ্রিকার দেশগুলোর ফিলিস্তিনি কমিউনিটিতে ছিল উৎসবের আমেজ। আর ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির খবরে উচ্ছ্বসিত ইসরাইলিরাও। জেরুজালেম ও তেল আবিবের রাস্তায় দেখা গেছে সেই চিত্র।

ইসরাইলি একজন বলেন, ‘এ এক অদ্ভুত অনুভূতি! একবার মনে হচ্ছে আমি অনেক খুশি। আবার মনে হচ্ছে যখন দেখব ইসরাইল সীমান্ত পেড়িয়ে জিম্মিরা দেশে ফিরে আসছেন তখন হয়তো সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হব।’

স্থানীয় একজন ইসরাইলি বলেন, ‘আমরা যতটা আনন্দিত, তার চেয়েও বেশি স্বস্তিতে। তবে সবচেয়ে বেশি খুশি হব যখন ওফার বাড়ি ফিরে আসবে।’

এদিকে ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাওয়া তিন ধাপের এই যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাস্তবায়নে মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকায় সফল হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইসরাইল ও হামাসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম, রেড ক্রস, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন। আর অস্ত্রবিরতির কৃতিত্ব দাবি করে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার প্রশাসনের দাঁড় করানো ফ্রেমওয়ার্ক মেনেই কাজ করতে হবে ট্রাম্পকে।

জো বাইডেন বলেন, ‘আমার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আট মাস নিরলস পরিশ্রমের ফলে জিম্মিদের মুক্তি এবং অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। গেল বছরের মে মাসে আমি পূর্ণাঙ্গ একটি সমাধানে নকশা প্রণয়ন করেছি। পরবর্তী প্রশাসনকে সেই পথ ধরেই সামনে অগ্রসর হতে হবে। নির্দেশ দিয়েছি তাদের যেন সব ধরনের সহায়তা করা হয়।’

অস্ত্রবিরতির কৃতিত্ব নেয়া নিয়ে শীতল যুদ্ধ চলছে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত ও বিদায়ী প্রেসিডেন্টের মধ্যে। বুধবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস সম্মত হওয়ার পর জো বাইডেনের আগেই ট্রুথ স্যোশালে পোস্ট দেন ট্রাম্প। দাবি করেন এই কৃতিত্বের অংশীদার তিনিও। এর আগে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ক্ষমতা নেয়ার আগে হামাস অস্ত্রবিরতিতে সম্মত না হলে মধ্যপ্রাচ্যকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ায় ইসরাইল-হামাসকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন সৌদি আরব ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কাতার ও মিশরের রাষ্ট্রপ্রধানসহ স্পেন, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী। আর গাজায় চলমান সংঘাতে অস্ত্র বিরতির সিদ্ধান্তেকে হামাস ও ফিলিস্তিনের বিজয় হিসেবে দেখছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা।