ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস। শেষ হতে যাচ্ছে দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। হতে যাচ্ছে বন্দিবিনিময়। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কাতার-মিশরের মধ্যস্ততায় দীর্ঘ কয়েক মাসের আলোচনা শেষে সম্মত হয় উভয়পক্ষ। কার্যকর হবে ১৯ জানুয়ারি থেকে। এতে আনন্দে ভাসছেন বাসিন্দারা।
১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে গাজায় প্রাণহানি যখন ৪৬ হাজার ৭শ'র ঘর ছাড়িয়েছে, ঠিক তখন এসে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় শর্তে রাজি হলো হামাস-ইসরাইল। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে চুক্তিতে পৌঁছায় দুই পক্ষ। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোশ্যাল ট্রুথে দেয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শিগগিরই জিম্মিদের মুক্তি দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় এবং কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততায় দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর যুদ্ধ বন্ধ ও বন্দিদের মুক্তির খবর এলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা আসেনি। তবে রোববার থেকে এটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু হবে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এমন খবরে নিজেদের বিজয় হিসেবে দেখছেন গাজায় বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের স্বজনরা। এছাড়া খুশিতে ভাসছেন প্রিয়জন ও ঘরবাড়ি হারা অসহায় গাজাবাসীও।
গাজাবাসীদের একজন বলেন, ‘আল্লাহর কসম, আমরা খুবই খুশি যে আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া এই সংকট, বোমা হামলা এবং মৃত্যুর অবসান ঘটছে। আমরা আমাদের নিজ শহরে ফিরে যেতে পারবো। যেসব স্বজনরা ইসরাইলি বন্দি আসেন তারাও ফিরে আসবেন, এরচেয়ে খুশির খবর আর কি হতে পারে।’
আরেকজন বলেন, ‘আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি। যারা এই দিনটি না দেখে, আমাদের আলিঙ্গন না করে ছেড়ে চলে গেছেন।’
২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের ঠিক আগে হওয়া এই চুক্তির আওতায় প্রথম পর্যায়ে হামাস-ইসরাইল বন্দিবিনিময় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে ইসরাইল প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে বলে আভাস মিলছে। আর প্রথম পর্যায়ে ৯৪ জনের মধ্যে ৩৩ ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিতে পারে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
এছাড়া গাজার আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ভ্রমণের অনুমতি দেবে ইসরাইল। প্রথম পর্যায়ের শুরুর সাত দিন পর ইসরাইল মিশরের সাথে রাফাহ ক্রসিংও খুলে দেবে। এছাড়া মিশরের সাথে গাজার ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সরে আসতে শুরু করবে ইসরাইলি বাহিনী।