নিজের পিএসজি ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার অবশেষে মুখ খুললেন। সম্প্রতি ব্রাজিলের সাবেক বিশ্বকাপজয়ী স্ট্রাইকার রোমারিওর সঙ্গে এক পডকাস্টে পিএসজির ওই দিনগুলোসহ অনেক কিছুই শেয়ার করেছেন নেইমার। সেখানে অনেক বিষয়ই খোলাশা করেছেন তিনি।
কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নেইমারের সম্পর্কটা নাকি ভালোই ছিলো প্যারিসের ক্লাবটিতে। কিন্তু ২০২১ সালের আগস্টে লিওনেল মেসি সেখানে যেতেই বাধে গণ্ডগোল। মেসি ও নেইমারের মধ্যে সুসম্পর্ক দেখে নাকি হিংসায় জ্বলতেন ফরাসি তারকা। তার মধ্যে একটা অহংকার কাজ করত বলেও জানান নেইমার। এই অহংবোধের কারণে পিএসজির পারফরম্যান্সে ব্যাঘাত ঘটত বলেও মনে করছেন নেইমার।
পডকাস্টে রোমারিও জিজ্ঞেস করেন, পিএসজিতে এমবাপ্পে বিরক্তিকর ছিল কিনা! এই প্রশ্নের উত্তরে নেইমার জবাব দেন, “না, সে ওই রকম ছিলো না। তার সঙ্গে আমার নিজস্ব কিছু বিষয় ছিলো। আমাদের সামান্য মনোমালিন্য হতো। তবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আমরা সবাই জানতাম সে হলো ক্লাবের মূল ভিত্তি। আমি তাকে ‘গোল্ডেন বয়’ বলে ডাকতাম। আমি সব সময় তার সঙ্গে খেলতাম। তাকে বলতাম, সে সেরাদের একজন হবে। আমি সব সময় তাকে সহায়তা করতাম, অনেক কথা বলতাম, সে আমার বাসায় আসত, আমরা একসঙ্গে রাতের খাবার খেতাম।”
যদিও মেসি আসার আগেই সে সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হয় বলে জানান নেইমার। নেইমার বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার জুটিটা কয়েক বছর ভালোই ছিলো। কিন্তু মেসি আসার পরই সে কিছুটা হিংসা করতে শুরু করলো। আমার সঙ্গে আর কারও ভালো সম্পর্ক হোক, এটা সে চায়নি। এর পরই মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো, তার আচরণ পাল্টে গেলো।’
যদিও কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি, ‘অহংকার থাকা ভালো। কিন্তু আপনার মনে রাখা উচিত, আপনি একা খেলতে পারবেন না। আপনার পাশে আরেকজনকে লাগবেই। সর্বত্রই এই অহংবোধ ছিল, যার ফলাফল মোটেও ভালো ছিল না। আপনি যদি একা দৌড়ান এবং কেউ যদি সহায়তা না করে, তাহলে কোনো কিছু জেতা অসম্ভব।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মোনাকো থেকে পিএসজিতে যোগ দেন এমবাপ্পে। একই বছর বার্সেলোনা থেকে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে প্যারিসের ক্লাবটিতে আসেন নেইমার। কাতারি মালিকরা দু’জনকেই এনেছিলেন মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের লক্ষ্যে। যদিও সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারেননি তারা। এরপর ২০২১ সালের আগস্টে সেখানে যান মেসি। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর ত্রয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সেটা হয়নি। তিনজনই এখন পিএসজি ছেড়ে ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানায়। তিনজনের মাঝে তৈরি হওয়া তিক্ততা নিয়ে ২০২৩ সালে মেসি ইন্টার মায়ামিতে পাড়ি জমান। ওই বছরই নেইমার চলে যান সৌদি লিগের দল আল হিলালে। এদিকে এমবাপ্পে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন।
নেইমারের সঙ্গে সৌদি ক্লাব আল হিলালের চুক্তি শেষ হবে চলতি বছর। ব্রাজিলের হয়ে মাঠে নামার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন নেইমার।