জাতীয় নির্বাচন শুধু ইসির ব্যাপার নয়, ভোটাধিকারের লড়াইয়ের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে গোটা জাতিকে। সাভারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম উদ্বোধন করে এ কথা বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, ভোটের সব অনিয়মের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে হালনাগাদ কার্যক্রম।
তরুণ এই জনগোষ্ঠী। যাদের বয়স কেবল ১৮তে পৌঁছালো। রাষ্ট্রের নাগরিকত্বের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে নিবন্ধন করে নিলেন নিজের নাম, ঠিকানা এবং বয়সসহ যাবতীয় তথ্য। তাদের শৈশব কৈশোর থেকে যে দীর্ঘ অসুস্থ নির্বাচন ব্যবস্থা দেখে আসছিলেন যেখানে ছিল না মানুষের কোনো ভোটাধিকার। তারা চান নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে নিজের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করতে।
নতুন ভোটারদের একজন বলেন, ‘আমি যেহেতু এবার নতুন ভোটার হচ্ছি আগামী নির্বাচনে যেন সঠিকভাবে ভোট প্রয়োগ কর একজন যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচন করেত পারি।’
আরেকজন বলেন, ‘এত বছর তো মানুষ ভোট দিতে পারতো না এবার নতুন করে আমরা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবো।’
আজ (সোমবার, ২০ জানুয়ারি) ঢাকার সাভারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মানুষের ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ ঘোচাতে চায় কমিশন। নির্বাচনের সকল অনিয়ম এর বিরুদ্ধে জন প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান সিইসি।
তিনি বলেন, ‘ভয় ভীতিহীনভাবে যেন নিজের ভোট যেদিন দিতে পারবে সেদিন আমরা মনে করবো ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হলো। আমরা সেই প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেমেছি। সবাইকে সাথে নিয়েই এই কাজ করতে হবে।’
জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার যে সুযোগ এসেছে, তা ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে কাজে লাগানোর প্রত্যয় উঠে আসে সিইসির কণ্ঠে।
এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা সুযোগ পেয়েছি। এখন প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে। আর এই প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ হচ্ছে ভোটার তালিকা সুষ্ঠুভাবে তৈরি করা।’
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনাররা বলেন,অতীতে নানাভাবে ভোটার তালিকাকে কলুষিত করা হয়েছে। এবার কোনো অভিযোগ শুনতে চায় না ইসি।
নির্বাচন কমিশনার ব্রি.জে. (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘মৃত ভোটার সেটা বাদ দিতে হবে। ডুয়েল এন্ট্রি বাদ দিতে হবে। আর বিদেশি ভোটার। এই তিনটায় ক্যাটাগরি।’
নির্বাচন কমিশনার বেগম তহমিদা আহমদ বলেন, ‘জনগণের সেবক নির্ধারণের অধিকার যা আমরা দীর্ঘদিন হারিয়ে ফেলেছিলাম। আর সারা বছর সেই চেষ্টায় থাকবে যেন ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে পারি।’
ভুয়া ভোটার, মৃত ভোটার এবং দ্বৈত নাগরিককে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা প্রস্তুতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনাররা। সেই সাথে নতুন ভোটারদের তথ্য নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ করারও তাগিদ দেয়া হয়েছে।