বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও জোরদার
- আপডেট সময় : ০৪:০৬:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৩৯ বার পড়া হয়েছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে দুইবার সাক্ষাৎ করেন।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন এবং ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক ফের জোরদার হতে শুরু করে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। ইসলামাবাদ সরকার ও ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো আশা করছে এমন পরিস্থিতিতে ঢাকার সঙ্গে আগামী এক বছরের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্য তিন গুণ বেড়ে ৩০০ কোটি ডলার হতে পারে। যা বর্তমান সময়ের চেয়ে চারগুণ বেশি। খবর নিক্কেই এশিয়ার।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে নতুন দেশের জন্ম হয়। এরপর আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা যখনই ক্ষমতায় ছিল তখনই ঢাকা- ইসলামাবাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যায়। তবে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ তৃতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসেন। তবে তার পতনের পরপরই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
গত বছর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে দুইবার সাক্ষাৎ করেন। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল এস এম কামরুল হাসান ইসলামাবাদ সফর করেন ও সেখানে তিনি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেন।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় চেম্বার অব কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রিজের (এফপিসিসিআই) একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। এটা গত এক দশকের মধ্যে পাকিস্তানের কোনো উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়িক দলের সফর। এই প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করে। সফরকালে পাকিস্তান-বাংলাদেশ যৌথ ব্যবসায়িক কাউন্সিল গঠনের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিরও আহ্বান জানায়।
এফপিসিসিআই-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকিব ফাইয়াজ মাগুন বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী আমাদের জানিয়েছেন যে ঢাকা আমদানির জন্য পাকিস্তানি ব্যবসাকে পছন্দ করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কেবল বস্ত্র ও প্লাস্টিক শিল্প রয়েছে। তাদের জনগণের জন্য বাকি অনেক পণ্য আমদানি করতে হয়। এতে আমাদের জন্য একটি নতুন দ্বার উন্মক্ত হয়েছে। যা শেখ হাসিনার সময় বন্ধ ছিল। মাগুন বলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে তাৎক্ষণিক ব্যবহারের জন্য ৫০ হাজার টন চাল ও ২৫ হাজার টন চিনি আমদানির জন্য অর্ডার দিয়েছে। বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে খেজুর আমদানিরও কথা ভাবছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বছরে মাত্র ৭ হাজার লাখ ডলারের বাণিজ্য রয়েছে।
নিক্কেই এশিয়াকে মাগুন বলেন, বাণিজ্য বিধিনিষেধ দূর হলে এক বছরের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্য ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে। আমরা চাল, চিনি, তেল, তুলার সুতা ও নারীদের পোশাকের মতো অনেক পণ্যে আমরা নজর দিতে পারি। দুই দেশের মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হলো চট্টগ্রাম ও করাচির মধ্যে ম্যারিটাইম রুট। যা গত ৫২ বছর ধরে ব্যবহার হয়নি। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যর পাশাপাশি যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচলেও সুবিধা পাবে। তাছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তান এখন সরসারি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারেও যাচাইবাছাই করছে। যা ২০১৮ সালের পর থেকে বন্ধ রয়েছে।