সংস্কারের কথা বলে কেউ যদি নির্বাচন বিলম্বিত করতে চান, সেটা জনগণ মানবে না। আবার নির্বাচনের জন্য যদি সংস্কার আড়াল হয়ে যায়, সেটাও মানুষ গ্রহণ করবে না। আমরা সংস্কারও চাই, নির্বাচনও চাই। সেটা করার জন্য ন্যূনতম জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সংস্কার ও নির্বাচন মুখোমুখি বিষয় নয়। নির্বাচনের জন্য সংস্কার দরকার, আবার সংস্কার শেষ করার জন্য নির্বাচন দরকার।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণসংহতি আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ কমিটির আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ সব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাস্টিটের সঙ্গে ফ্যাস্টিটব্যবস্থা বিদায় দেওয়ার জন্য দেশের জনগণ লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে। সেটা করতে চাইলে সকলের মধ্যে ঐক্য রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানে ছাত্র-তরুণরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু দেশের শ্রমিক-জনতা, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অভ্যুত্থানে যুক্ত হয়েছিলেন। অভ্যুত্থানে শ্রমিকের অধিকার কোথায়? কৃষকের অধিকার কোথায়? সংখ্যালঘু, আদিবাসীদের অধিকার কোথায়? মানুষ জবাব চায়। একই সঙ্গে ঐক্য রক্ষা করে রাজনৈতিক সংকট পার করে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটাতে পারি।
ফ্যাসিবাদের পতন হলেও জনজীবনে স্বস্তি ফেরেনি উল্লেখ করে জুনায়েদ সাকি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের সংকট ও সংঘাত ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। তার বিরুদ্ধেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।
ছাত্র-জনতার স্পষ্ট বার্তা এই বন্দোবস্ত আর চলবে না। আমাদের নতুন বন্দোবস্ত লাগবে। তাই আগামী নির্বাচন হবে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের, গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠার, রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও জনগণের পক্ষের আইন তৈরির নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে সরকারকে কাজ করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী কেন মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারছে না, সেই জবাবদিহির ব্যবস্থা করতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের কাছে জবাবদিহি চাইতে হবে।’
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জুনায়েদ সাকি বলেন, রাতারাতি পরিবর্তনের প্রত্যাশা করা উচিত নয়। কিন্তু চাঁদাবাজি, লুটপাট ও আইএমএফের ঋণের চুক্তিতে নতুন করে ভ্যাট আরোপ মেনে নেওয়া হবে না। মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনতে হবে। সীমান্ত হত্যায় আগের সরকারের মতো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরিয়ে আসতে হবে।
‘সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি, নিয়ন্ত্রণহীন বাজার সিন্ডিকেট এবং নতুন করে আরোপিত ভ্যাট ও ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন। সমাবেশে বক্তৃতা করেন দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু ও তসলিমা আখতার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, ঢাকা উত্তরের সদস্যসচিব মোহাম্মদ বাবুল, ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ান ও সদস্য সচিব শহীদুজ্জামান, সংগঠক রতন তালুকদার, কায়সার আহমেদ, লুবানা তাবাসসুম, নূর ইসলাম প্রমুখ।