দলের অবস্থা ভালো নয়, তাই বিদায় জানিয়ে দেওয়া হবে তাঁকে?
- আপডেট সময় : ০২:১১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
‘আমরা এ মুহূর্তে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, গত ৩ বছরে যা ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫০০ কোটি টাকারও বেশি) ছাড়িয়েছে। এটা মোটেও টেকসই নয়। আমাদের কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে’- সমর্থকদের অফিসিয়াল গ্রুপে পাঠানো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাব কর্তৃপক্ষ বার্তার কয়েকটা লাইন ছিল ঠিক এমনই।
বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, বর্তমানে ইংলিশ ক্লাবটি আর্থিক নীতিমালা ভঙ্গের ঝুঁকিতে আছে। আর সেটা হলে লিগে পয়েন্ট হারানো, ট্রান্সফার মার্কেটে নিষেধাজ্ঞা কিংবা ক্লাবটিকে অর্থদণ্ডের মুখেও পড়তে হতে পারে। এ আর্থিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতেই ‘কঠিন সিদ্ধান্তের’ কথা ভাবছে ইংলিশ ক্লাবটি।
তা কী সেই কঠিন সিদ্ধান্ত? ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইসএনপিএন জানিয়েছে, ভালো প্রস্তাব পেলে সিনিয়র কোনো ফুটবলারকে চলমান শীতকালীন দলবদলের বাজারেই বিক্রি করে দিতে চায় ম্যান ইউনাইটেড। শুধু কি সিনিয়র? বিক্রির তালিকায় আর্জেন্টিনার ২০ বছর বয়সী স্ট্রাইকার আলেহান্দ্রো গারনাচোকে ওপরের দিকেই রাখছে ক্লাবটি।
আর্থিক দুরবস্থা কাটাতে শুধু গারনাচোর মতো খেলোয়াড়দের বিক্রি করার কথাই ভাবছে না ম্যান ইউনাইটেড, এর পাশাপাশি বিকল্প আয়ের ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। স্টেডিয়ামের টিকেটের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সমর্থকের গ্রুপে পাঠানো বার্তায় টিকিটের দাম বাড়ানোর বিষয়টিও উল্লেখ করেছে ইউনাইটেড।
এর আগে প্রতি ম্যাচের জন্য সর্বনিম্ন ৪০ পাউন্ডে (ছয় হাজার টাকার কিছু বেশি) খেলা দেখতে পেতেন সমর্থকেরা। সেটাকে বাড়িয়ে ৬৬ পাউন্ড (প্রায় ১০ হাজার টাকা) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনাইটেড। ক্লাবের এমন সিদ্ধান্তের পর থেকেই সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। নিজেদের গ্রুপে তারা প্রতিবাদও জানাতে থাকেন। আর সেটার প্রেক্ষাপটেই টিকিটের দাম বাড়ানোর ব্যাখ্যা দেয় ইউনাইটেড।
সে বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা যদি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রুহণ করতে ব্যর্থ হই, তবে আমরা পিএসআর কিংবা এফএফপি এর নীতিতে আটকে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়ব। যা আমাদের মাঠের খেলায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।’
পিএসআর হচ্ছে প্রিমিয়ার লীগের আর্থিক সঙ্গতি নীতি, যা ক্লাবগুলোকে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল রাখতে ও খেলোয়াড় কেনা-বেচার বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে কাজ করে। এই নীতি অনুসারে, একটি ক্লাবের সর্বশেষ তিন বছরের সম্মিলিত ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের বেশি দেখানো যাবে না। অর্থাৎ এ সময়ে আয়ের চেয়ে ক্লাব সর্বোচ্চ এই পরিমাণ বেশি খরচ করতে পারবে।
কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, শুধু গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্তই ক্লাবের ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি ৩২ লাখ পাউন্ড। এবার তো ৩ বছরে ৩০ কোটি পাউন্ডের বেশি ক্ষতির কথা জানিয়েই দিল সমর্থকদের। ফলে এটা স্পষ্ট যে, আর্থিক নীতিতে আটকে যাওয়ার শঙ্কায় আছে ক্লাবটি।
আর ঠিক এ দুরবস্থা কাটাতেই স্টেডিয়ামের টিকিটের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি গারনাচোর মতো তরুণ স্ট্রাইকারকে বিক্রির কথাও ভাবছে ইউনাইটেড। এরই মধ্যে আর্জেন্টাইন তারকার জন্য নাপোলি ও চেলসির আগ্রহ দেখা গেছে।
ইএসপিএন আরও জানিয়েছে, গারনাচোকে এখনই ছাড়ার কোনো ইচ্ছেই নেই ইউনাইটেডের। কিন্তু ক্লাবটির আর্থিক অবস্থা এতটাই নাজেহাল যে, চলতি দলবদলেই ইউনাইটেড যথাযথ দাম পেলে গারনাচোকে বিক্রি করে দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গারনাচোকেই বিক্রির বাড়তি সুবিধা হলো, গারনাচো ইউনাইটেডেরই একাডেমি থেকে মূল দলে গেছেন বলে তাঁকে বিক্রি করে পাওয়া পুরো অর্থই আয়ের হিসাবে দেখানো যাবে।