যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এতে এক লেবানিজ সেনাসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, যেদিন ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যেদর প্রত্যাহারের কথা ছিল, সেদিনই এমন হামলার ঘটনা ঘটল। দক্ষিণ লেবাননের এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
লেবাননের মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত গ্রামগুলোতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করা নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত ৮৩ জন আহত হয়েছেন।
লেবাননের সেনাবাহিনীর এক বিবৃতি বলেছে, মাইস আল-জাবাল গ্রামে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে একজন লেবানিজ সৈন্য নিহত এবং একজন আহত হয়েছেন।
এরআগে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র আভিচায় আদরাই রোববার দক্ষিণ লেবাননের ৬০টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্দেশে একটি বার্তা দেয়, এতে তাদের ফিরে না আসার জন্য বলা হয়েছিল।
আল জাজিরা লিখেছে, ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ড নভেম্বরে সম্পাদিত একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, এর অধীনে রোববার বেলা ২টায় লেবানন থেকে তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা ছিল।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেনা প্রত্যাহার বিলম্ব হওয়ার জন্য লেবাননকে দায়ী করে বলেছেন, হিজবুল্লাহ সীমান্ত অঞ্চল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরে আসেনি। লেবানন এই দাবি অস্বীকার করেছে এবং ইসরায়েলকে সময়সীমা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
দক্ষিণ লেবাননের বোর্জ আল-মলুক থেকে আল জাজিরার সংবাদদাতা জেইনা খোদর বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করছে, তাদের আরও বেশি সময় ধরে সেখানে অবস্থান করা উচিত, কারণ লেবাননের সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণ এবং সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলা নিশ্চিত করতে তাদের কাজ করছে না।
ইসরায়েলিরা বলছে, মাটিতে পর্যাপ্ত লেবাননের সেনা নেই। হিজবুল্লাহ এখনও এখানে রয়েছে।
জেইনা খোদর বলেন, এখানকার মানুষ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত। তারা বিশ্বাস করে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্য প্রত্যাহার করা উচিত ছিল। ৬০ দিনের সময়সীমা পার হয়ে গেছে।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, লেবাননের সেনাবাহিনীকে দক্ষিণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের পাশাপাশি মোতায়েন করার কথা ছিল। আর ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এলাকা থেকে সরে যাবে।
গত নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতির চুক্তির ফলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা লড়াইয়ের অবসান ঘটে।
তবে এক যৌথ বিবৃতিতে লেবাননে জাতিসংঘের দূত এবং লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের প্রধান বলেছেন, দক্ষিণ লেবাননে নাগরিকদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের জন্য এখনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।