হিজবুল্লাহর সাথে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তের সময়সীমার মধ্যে ইসরাইল সেনা প্রত্যাহার না করায় উত্তপ্ত লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল। প্রায় ১৬ মাস ধরে বসতভিটা ছেড়ে থাকা হাজার হাজার বাসিন্দারা যখন রোববার অঞ্চলটিতে ফিরছিলেন তখন বাঁধা গুলি চালিয়ে অন্তত ২২ জনকে হত্যা করে নতুন করে যুদ্ধ উত্তেজনা উস্কে দিলো ইসরাইলি বাহিনী। এ অবস্থায় হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে লেবাননের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি।
২৭ নভেম্বর কার্যকর হওয়া হিজবুল্লাহর সাথে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি শর্তের আওতায় লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার না করে নতুন করে উত্তেজনার পারদ বাড়িয়ে দিলো ইসরাইল।
প্রায় ১৬ মাস ধরে বসতভিটা ছেড়ে থাকা হাজার হাজার বাসিন্দারা যখন রোববার অঞ্চলটিতে ফিরছিলেন তখন বাঁধা দেয় এবং গুলি চালায় ইসরাইলি বাহিনী। লেবাননের সেনা সদস্যসহ এই হত্যাযজ্ঞের শিকার হয় ২০ জনের বেশি মানুষ, আহত শতাধিক।
এভাবেই যুদ্ধবিরতির শেষ দিনে এসে ইসরাইল আবারও লেবাননে যুদ্ধ উস্কে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে এখনো ইসরাইলি সেনাদের অবস্থান কিছুতেই মেনে না নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাধারণ জনতা।
এক অধিবাসী বলেন, ‘অনুমতি না দিলেও আমরা আমাদের গ্রামে ফিরবোই। কোনো কিছুতেই আমাদের আটকানো যাবে না। প্রয়াত হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ আমাদের সাথে না থাকলেও তিনি আমাদের শক্তি।’
আরেকজন বলেন, ‘আমরা কোনো ভুল করিনি। কেনো তারা আমাদের গ্রামে যেতে বাঁধা দেবে। আমরা এক বছর ৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে নিজ বসতভিটায় ফেরার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’
এদিকে হুমকির আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি এলাকায় সতর্কতামূলক গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনীও। এমনকি কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করার কথাও জানিয়েছে, তবে হতাহতের ব্যাপারে কিছু জানায়নি নেতানিয়াহু বাহিনী। তবে লেবাননের সেনাবাহিনীর মোতায়েন এবং লিতানি নদীর উত্তরে হিজবুল্লাহর সরে যাওয়ার ওপর সেনা প্রত্যাহার নির্ভর করছে বলে দাবি ইসরাইলের।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানালো, ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলো হিজবুল্লাহ-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি। একই সাথে প্রতিশ্রুতি দিলো ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পরে বন্দী লেবানিজদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা শুরুর।
হিজবুল্লাহ-ইসরাইল সংঘাতে লেবাননে প্রায় ৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১২ লাখের বেশি বাসিন্দা বাড়িঘর ছাড়া। এ অবস্থায় বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন, যিনি সংকটে জর্জরিত দেশটি স্থিতিশীলে তৎপরতা চালাচ্ছেন।