ঢাকা ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঢাবি প্রো-ভিসি ও নিউমার্কেটের ওসিকে সরাতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:২৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের পদত্যাগ ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা।

আজ (সোমবার, ২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের শহীদ মিনার থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

দাবি মেনে না নিলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও এবং কলেজ সমূহের সামনের সড়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঢাকা কলেজের সমন্বয়ক মঈনুল ইসলাম বলেন, ’২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিউমার্কেট থানার ওসি প্রত্যাহার আর প্রো–ভিসি পদত্যাগ না করলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও করা হবে। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য অধিভুক্ত ৭ কলেজের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের ৬টি দাবির মধ্যে ৫টিই মানা হয়নি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বানও জানানো হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না ৭ কলেজঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি হলো:-

১. ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে।

২. ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলাসহ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেট থানা-পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি-ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কর্তৃক ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও অশালীন অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সম্পর্কের চূড়ান্ত অবসান ঘটিয়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

৫. উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসির সদস্য ও ঢাবির উপাচার্যের সমন্বয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে তাৎক্ষণিক উচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ের মাধ্যমে এই ঘটনার সমাধান করতে হবে।

৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট এলাকায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

‘পুলিশ না থাকলে সাত কলেজ–ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ রক্তক্ষয়ী হতো’‘পুলিশ না থাকলে সাত কলেজ–ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ রক্তক্ষয়ী হতো’
রোববার পাঁচ দফা দাবি নিয়ে কথা বলতে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ পাঁচ দাবির অগ্রগতি জানতে তাঁরা অধ্যাপক মামুনের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় অধ্যাপক মামুন ছাত্রদের অপমান-অপদস্ত করে বের করে দেন। এর পর সেখান থেকে বের হয়েই এর প্রতিবাদে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব ও টেকনিম্যাল মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এর প্রায় সাড়ে চার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। এসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের বাসভবন ঘেরাও করতে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে পৌঁছালে ধাওয়া দিয়ে এক পর্যায়ে সরিয়ে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে। চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়। আহত হন বেশ কয়েকজন।

গভীর রাত পর্যন্ত চলে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া। রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার নিজ নিজ কলেজের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি দেন।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে একটি জরুরি সভায় করেন। সভা শেষে উপাচার্য জানান, অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হবে না। চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঢাবি প্রো-ভিসি ও নিউমার্কেটের ওসিকে সরাতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

আপডেট সময় : ১০:২৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের পদত্যাগ ও নিউমার্কেট থানার ওসিকে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা।

আজ (সোমবার, ২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা কলেজের শহীদ মিনার থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

দাবি মেনে না নিলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও এবং কলেজ সমূহের সামনের সড়কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে ঢাকা কলেজের সমন্বয়ক মঈনুল ইসলাম বলেন, ’২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিউমার্কেট থানার ওসি প্রত্যাহার আর প্রো–ভিসি পদত্যাগ না করলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও করা হবে। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য অধিভুক্ত ৭ কলেজের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের ৬টি দাবির মধ্যে ৫টিই মানা হয়নি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বানও জানানো হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না ৭ কলেজঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকছে না ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি হলো:-

১. ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে।

২. ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্য হামলাসহ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেট থানা-পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি-ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কর্তৃক ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও অশালীন অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সম্পর্কের চূড়ান্ত অবসান ঘটিয়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

৫. উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসির সদস্য ও ঢাবির উপাচার্যের সমন্বয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে তাৎক্ষণিক উচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ের মাধ্যমে এই ঘটনার সমাধান করতে হবে।

৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট এলাকায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

‘পুলিশ না থাকলে সাত কলেজ–ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ রক্তক্ষয়ী হতো’‘পুলিশ না থাকলে সাত কলেজ–ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ রক্তক্ষয়ী হতো’
রোববার পাঁচ দফা দাবি নিয়ে কথা বলতে ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ পাঁচ দাবির অগ্রগতি জানতে তাঁরা অধ্যাপক মামুনের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় অধ্যাপক মামুন ছাত্রদের অপমান-অপদস্ত করে বের করে দেন। এর পর সেখান থেকে বের হয়েই এর প্রতিবাদে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব ও টেকনিম্যাল মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

এর প্রায় সাড়ে চার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। এসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের বাসভবন ঘেরাও করতে যাচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে পৌঁছালে ধাওয়া দিয়ে এক পর্যায়ে সরিয়ে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে। চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয় ওই এলাকায়। আহত হন বেশ কয়েকজন।

গভীর রাত পর্যন্ত চলে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া। রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নীলক্ষেত মোড়ে সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার নিজ নিজ কলেজের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি দেন।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে একটি জরুরি সভায় করেন। সভা শেষে উপাচার্য জানান, অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হবে না। চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।