তিন বিমানবন্দরে চার প্রকল্পে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের অভিযোগ, আইন ভেঙে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ এবং আগাম বিল তুলে কাজ বন্ধ করাসহ অনেক অনিয়ম করা হয়েছে। এদিকে নিম্নমানের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন কিনে অর্থ অপচয়ের অভিযোগ ওঠা সত্ত্বে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মতো বিশেষজ্ঞরা কিসের ভিত্তিতে মেশিনগুলোকে যথাযথ মনে করেছিলেন সেটি খতিয়ে দেখবে দুদক।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাডার নির্মাণের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে বারবার ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকল্প কাজ ঘনিষ্টজনদের টেন্ডার দেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ দুদকের। এসব অভিযোগে সংশ্লিষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক বিমান সচিব মহিবুর হক, সাবেক বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ দুদকের।‌

একই বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণেও একই ব্যক্তিদের ২৫০ কোটি টাকার অর্থ লুটপাটের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। অন্যদিকে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালকে আইন ভেঙে প্রকল্পে সম্পৃক্ত করা হয়। প্রকল্পের কাজে ২১২ কোটি টাকা আগাম বিল তুলে কাজ বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছে।

দুদকের অভিযোগ, কক্সবাজার বিমানবন্দর নির্মাণ ও রানওয়ে তৈরিতে অনিয়ম করে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আড়ালে স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি মূল্য ধরে ২০০ কোটি টাকা লুটপাট করেছে।

এ নিয়ে তিন বিমানবন্দরে উন্নয়নে ৮১২ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিস্তারিত তুলে ধরেন দুদক প্রতিরোধ মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব তারিক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪৩ জনের নামে চার পৃথক মামলা করা হয়েছে।

দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় প্রতিষ্ঠান অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে কাজ করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিমান সচিব মহিবুর হক, সাবেক বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ অনুযায়ী আজ একটি মামলা রুজু হয়েছে।’

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের এক হাজার ৫৯৯টি ইভিএম কোথায় রয়েছে এবং ৬১৮ ইভিএমের কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি পাওয়ায় মুহাম্মদ জাফর ইকবাল কোন ভিত্তিতে মেশিনগুলোকে যথাযথ মনে করেছিলেন তার কারণ অনুসন্ধান করবে দুদক।