ঢাকা ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফ্রান্সে অনিয়মিতদের বৈধতার শর্ত কঠিন, উৎকণ্ঠায় বাংলাদেশিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধ করার প্রক্রিয়া আরো কঠোর করেছে ফ্রান্স। গেল ২৩ জানুয়ারি ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিবাসন সংক্রান্ত নতুন সার্কুলার ইস্যুর পর চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার বাংলাদেশি। নতুন আইনে বলা হয়েছে- বিশেষ বিবেচনায় বৈধতার ক্ষেত্রে বসবাসের সময় ও শর্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগ হয়েছে ফরাসি ভাষার দক্ষতা অর্জন।

ফ্রান্সে অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধকরণের সবচেয়ে প্রচলিত উপায়ের একটি ‘সার্কুলার ভালস’। ২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালসের চালু করা এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দেশটিতে স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন ৩৪ হাজারেও বেশি অনিয়মিত অভিবাসী। যার মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।

সলিডারিতে আজি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নয়ন এনকে বলেন, ‘ওরা ভাষাটার ওপর বিশেষ করে গুরুত্ব দিচ্ছি। তারা সার্টিফিকেটে দেখতে চাইবে ভাষা দক্ষতার লেভেল কোন পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া ফ্রান্সের মূলনীতিগুলো মানছে কিনা সেটাও দেখবে তারা।’

আইছা প্রো প্রেসিডেন্ট ওবায়দুল্লাহ কয়েছ বলেন, ‘বিশেষ ক্যাটাগরিতে যারা কাজ করে, যারা বিশেষভাবে সমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলোতে কাজ করে আসলে তাদের নাগরিকত্বের কার্ড দেয়া প্রয়োজন, এই দৃষ্টিকোণ থেকে যারা গুরুত্বপূর্ণ তাদেরকে কার্ড দেবে। আর যারা নিজেকে প্রমাণ করতে পারে নাই তারা কার্ড পাবেন না।’

আগের সার্কুলার অনুযায়ী, ৩ বছর বা এর বেশি সময় ফ্রান্সে অবস্থান করে কাজের অনুমতি সাপেক্ষে বৈধ হওয়ার সুযোগ পেতেন অনিয়মিত অভিবাসীরা। এছাড়াও, দীর্ঘ মেয়াদে ফ্রান্সে বসবাস এবং পরিবারের সহায়তায় বৈধ হতে পারতেন অনিয়মিতরা।

যদিও, গেল ২৩ জানুয়ারি এই নিয়ম বাতিল করে অভিবাসন সংক্রান্ত নতুন সার্কুলার জারি করেন ফ্রান্সের ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো । যেখানে বিশেষ বিবেচনায় বৈধতার ক্ষেত্রে বসবাসের সময় ও শর্ত বৃদ্ধি ছাড়াও ফরাসি ভাষার দক্ষতা অর্জন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার শর্ত যোগ করা হয়েছে।

ফ্রান্স আইনজীবী নিকোলা ওয়াখবা বলেন, ‘ফ্রান্সের রেস্টুরেন্ট সেক্টরে এমন অনেক বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন যারা কাজের মাধ্যমে এ দেশে বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। নতুন এই নিয়মের কারণে তাদের বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিফিচার ব্যবহার করে বৈধতা দেয়া নিরুৎসাহিত করছেন। রেসিডেন্সি কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি ফরাসি ভাষার দক্ষতা অর্জনের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে আবেদরকারীকে।’

ফ্রান্সে অভিবাসীদের বৈধতার জন্য কাজ করা সমাজকর্মীরা বলছেন, নতুন এই সার্কুলারটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিবাসনবিরোধী কঠোর মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। আর এতে বিপাকে পড়বেন কয়েকহাজার অনিয়মিত বাংলাদেশি কর্মী। তাই, সচেতনতামূলক সেমিনার করে নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রেখেছের ফ্রান্সের বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফ্রান্সে অনিয়মিতদের বৈধতার শর্ত কঠিন, উৎকণ্ঠায় বাংলাদেশিরা

আপডেট সময় : ০৩:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধ করার প্রক্রিয়া আরো কঠোর করেছে ফ্রান্স। গেল ২৩ জানুয়ারি ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিবাসন সংক্রান্ত নতুন সার্কুলার ইস্যুর পর চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার বাংলাদেশি। নতুন আইনে বলা হয়েছে- বিশেষ বিবেচনায় বৈধতার ক্ষেত্রে বসবাসের সময় ও শর্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগ হয়েছে ফরাসি ভাষার দক্ষতা অর্জন।

ফ্রান্সে অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধকরণের সবচেয়ে প্রচলিত উপায়ের একটি ‘সার্কুলার ভালস’। ২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালসের চালু করা এই পদ্ধতি অনুসরণ করে দেশটিতে স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন ৩৪ হাজারেও বেশি অনিয়মিত অভিবাসী। যার মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।

সলিডারিতে আজি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নয়ন এনকে বলেন, ‘ওরা ভাষাটার ওপর বিশেষ করে গুরুত্ব দিচ্ছি। তারা সার্টিফিকেটে দেখতে চাইবে ভাষা দক্ষতার লেভেল কোন পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া ফ্রান্সের মূলনীতিগুলো মানছে কিনা সেটাও দেখবে তারা।’

আইছা প্রো প্রেসিডেন্ট ওবায়দুল্লাহ কয়েছ বলেন, ‘বিশেষ ক্যাটাগরিতে যারা কাজ করে, যারা বিশেষভাবে সমাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলোতে কাজ করে আসলে তাদের নাগরিকত্বের কার্ড দেয়া প্রয়োজন, এই দৃষ্টিকোণ থেকে যারা গুরুত্বপূর্ণ তাদেরকে কার্ড দেবে। আর যারা নিজেকে প্রমাণ করতে পারে নাই তারা কার্ড পাবেন না।’

আগের সার্কুলার অনুযায়ী, ৩ বছর বা এর বেশি সময় ফ্রান্সে অবস্থান করে কাজের অনুমতি সাপেক্ষে বৈধ হওয়ার সুযোগ পেতেন অনিয়মিত অভিবাসীরা। এছাড়াও, দীর্ঘ মেয়াদে ফ্রান্সে বসবাস এবং পরিবারের সহায়তায় বৈধ হতে পারতেন অনিয়মিতরা।

যদিও, গেল ২৩ জানুয়ারি এই নিয়ম বাতিল করে অভিবাসন সংক্রান্ত নতুন সার্কুলার জারি করেন ফ্রান্সের ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো । যেখানে বিশেষ বিবেচনায় বৈধতার ক্ষেত্রে বসবাসের সময় ও শর্ত বৃদ্ধি ছাড়াও ফরাসি ভাষার দক্ষতা অর্জন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার শর্ত যোগ করা হয়েছে।

ফ্রান্স আইনজীবী নিকোলা ওয়াখবা বলেন, ‘ফ্রান্সের রেস্টুরেন্ট সেক্টরে এমন অনেক বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন যারা কাজের মাধ্যমে এ দেশে বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। নতুন এই নিয়মের কারণে তাদের বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া এখন অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিফিচার ব্যবহার করে বৈধতা দেয়া নিরুৎসাহিত করছেন। রেসিডেন্সি কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি ফরাসি ভাষার দক্ষতা অর্জনের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে আবেদরকারীকে।’

ফ্রান্সে অভিবাসীদের বৈধতার জন্য কাজ করা সমাজকর্মীরা বলছেন, নতুন এই সার্কুলারটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিবাসনবিরোধী কঠোর মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। আর এতে বিপাকে পড়বেন কয়েকহাজার অনিয়মিত বাংলাদেশি কর্মী। তাই, সচেতনতামূলক সেমিনার করে নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারি রেখেছের ফ্রান্সের বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা।