বিপিএলের কেলেঙ্কারিতে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন
- আপডেট সময় : ০৩:৪৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
বকেয়া পারিশ্রমিক, চেক জালিয়াতি, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা আর ফিক্সিংয়ের গন্ধ, সবমিলিয়ে এবারের বিপিএল কেলেঙ্কারির সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এতে বিশ্বক্রিকেটে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। ভবিষ্যতে বিদেশি ক্রিকেটাররা আর বাংলাদেশে খেলতে আসবে না বলেও মনে করেন তিনি।
উষালগ্ন থেকেই পারিশ্রমিক পরিশোধের পর্ব শুরুর কথা, অথচ গোধুলীলগ্নে বিপিএল, এখনও বেতনভাতা নিয়ে হাপিত্যেশ ক্রিকেটারদের। কেলেঙ্কারির গন্ধ ছড়ানোর শুরুটা দুর্বার রাজশাহীকে দিয়ে। দিন গড়াতেই জানা গেল এ নগ্নযাত্রায় তাদের সঙ্গী চিটাগাং কিংসও।
আসরে সব ম্যাচ খেলা শেষ, অথচ এক টাকাও পাননি, দুর্বার রাজশাহীতে এমন ক্রিকেটারও আছেন। ওদিকে, আমন্ত্রিত বিদেশিদের এক পয়সাও শোধ করেনি চিটাগাং। কেবল তাই নয়, অসহায় খাজা নাফি, জুবাইদ আকবরীদের বাড়ি ফেরার আকুতিটাও আমলে নেয়নি দলটি। পেশাদার ক্রিকেটাররা প্রাপ্য সম্মানের পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিকটাই না পেলে ঠিক কোন যুক্তিতে খেলে বেড়াবেন মাঠের ক্রিকেট?
মেহেদি মিরাজ বলেন, ‘দিন শেষে আমরা প্লেয়াররা ক্রিকেট খেলি টাকার জন্য। আমরা যদি পারিশ্রমিক না পাই এটা প্রতিটি প্লেয়ারের জন্য খারাপ। ’
একের পর এক মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, বারবার চেক দেয়ার নামে জালিয়াতি এবং সবশেষ মিশন শেষের আগেই বাধ্যতামূলক হোটেল ছাড়ার নির্দেশনা, দুর্বার রাজশাহীর স্বেচ্ছাচারিতার যেন সীমা নেই। ওদিকে, ফিক্সিংয়ের গন্ধ নাকে লাগে পাঁড় ক্রিকেট সমর্থকদেরও। সবমিলিয়ে এবারের বিপিএল ক্রিকেটবিশ্বে বাংলাদেশের মানসম্মান যেন ধুলোয় মিশিয়েছে।
খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এটা একটা হাসি ঠাট্টার টুর্নামেন্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থা শুধু বিপিএল নয় বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ভেল্যুর জন্য খুব খারাপ। বিদেশি খেলোয়াড়রা কিন্তু খুব বাজেভাবে সমালোচনা করবে এটার। এমন হবে যে একটা সময় বাংলাদেশে কেউ খেলতে আসতে চাইবে না।’
অথচ আসর শুরুর আগে এবারের বিপিএল একেবারে ব্যতিক্রমধর্মী আর বিতর্কমুক্ত হবে বলে উচ্চাশা দেখিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। এমন কেলেঙ্কারির দায় এড়ানোর সুযোগ কই দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার?
খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, ‘এখানে আমি ক্রিকেটবোর্ডকে দায়ী করব। ক্রিকেট বোর্ড যাদের টিম দিয়েছে তাদের টিম পরিচালনা করার মতো আর্থিক সচ্ছলতা আছে কিনা বা ব্যাকগ্রাউন্ড আছে কিনা এবং ব্র্যান্ড তৈরি মতো ধারণা আছে কিনা এগুলো কী তারা দিতে পেরেছে? ক্রিকেটবোর্ডই তো তাদের নিয়োগ দিয়েছে।’
বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেন, ‘ যতটুকু প্রস্তুতির দরকার ছিল বা যতটা খুঁটিনাটি দেখার দরকার ছিল সেটা হয়ত আমরা করতে পারি নাই। সেই ব্যর্থতা হয়ত আমাদের।’
এবারের বিপিএল যা দেখিয়ে গেল তাতে পরের বিপিএল আয়োজনের আগে শতবার ভাবতে হবে সংশ্লিষ্টদেরকে। যেভাবে এখানে খেলতে আসার আগে ভাববেন বিদেশি ক্রিকেটাররাও।