ঢাকা ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

তৃতীয় দফা বন্দিবিনিময়ের পর নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:০০:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৩২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সময়ক্ষেপণের পর অবশেষে ১১০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। অন্যদিকে এর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত আট জিম্মির চিকিৎসা চলছে ইসরাইলে। তৃতীয় দফা বন্দিবিনিময়ের পর নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যারাই ইসরাইলি জিম্মিদের আঘাতের চেষ্টা করবে, তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। এদিকে পশ্চিম তীরে আইডিএফের অভিযানে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত দুই ফিলিস্তিনি।

হামাস আট জিম্মিকে মুক্তি দিলেও কারাবন্দি ফিলিস্তিনিদের দেশে ফেরত পাঠাতে কালক্ষেপণ করছিল ইসরাইল। রামাল্লায় সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আইডিএফের সংঘর্ষও বাড়িয়ে তোলে দুশ্চিন্তা।

তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পূর্ব নির্ধারিত ১১০ কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) নিজ ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের রাতে তাদের বরণ করে নেয় সাধারণ মানুষ। বাস থেকে নামার পর কারাবন্দিদের তুলে নেয়া হয় কাঁধে। স্লোগানের পাশাপাশি বীরদের স্বাগত জানানো হয় পতাকা হাতে। যদিও ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মুক্তিপ্রাপ্তদের নিয়ে উল্লাস করায় পূর্ব জেরুজালেম থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর পরিবারের সঙ্গে কারাবন্দিদের পুনর্মিলনীতে তৈরি হয় আবেগঘন পরিস্থিতি। মুক্তিপ্রাপ্তরা বলছেন হাজারও নির্যাতনের পরও দৃঢ় প্রত্যয়ী থাকার একমাত্র কারণ ইসরাইলি আগ্রসনকে রুখে দিয়ে দেশকে বিনির্মাণের সংকল্প।

মুক্তিপ্রাপ্ত একজন বলেন, ‘আমরা এই জনস্রোতের অংশ। আমার ভাইয়েরা পুরো বিশ্বকে বলেছে আমাদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত তারা হাল ছাড়বে না। এখন জাতীয় ঐক্য গঠনের সময় চলে এসেছে।’

মুক্তিপ্রাপ্ত অন্য একজন বলেন, ‘আমাদের সব দুঃখ কষ্ট জেলে রেখে এসেছি। বাকি ভাইয়েরা জেলে থেকে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’

এর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত আট জিম্মিও ইসরাইলে পৌঁছেছেন। এদের সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পাঁচ থাই নাগরিককে পাঠানো হবে নিজ দেশে। অপরদিকে ইসরাইলি জিম্মিরা ফিরে গেছেন তাদের নিজ বাড়িতে। দেড় বছর পর স্বজনদের সঙ্গে পুনর্মিলনীতে রামাল্লা ও গাজার মতো পরিস্থিতি ছিল তেল আবিবেও। তৃতীয় দফা বন্দি বিনিময়ের পর নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যারাই ইসরাইলি জিম্মিদের আঘাতের চেষ্টা করবে, তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য এই সমঝোতার চূড়ান্ত রূপ দেখতে পাচ্ছি। চুক্তির লঙ্ঘন সহ্য করা হবে না। জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার সময় আমরা কিছু ভয়াবহ চিত্র দেখতে পেয়েছি। পরিষ্কার করে বলছি, জিম্মিদের আঘাতের চেষ্টা করা হলে তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ।’

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে গাজাবাসী। এরইমধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে সাড়ে ৩শ’ এরও বেশি মরদেহ উদ্ধার করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির প্রতিবেদন বলছে, ১৫ মাসের যুদ্ধে তৈরি হয়েছে পাঁচ কোটি টন কংক্রিটের জঞ্জাল। যা অপসারণে সময় প্রয়োজন কমপক্ষে ২০ বছর। চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে গাজা থেকে আড়াই হাজার শিশুকে অন্য দেশে সরিয়ে নেয়ার আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

এদিকে গাজায় সাময়িকভাবে শান্তি ফিরলেও পশ্চিমতীরে ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার আইডিএফের হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি। হামলা চালানো হয়েছে জেনিন শরণার্থী শিবির, তুলকেরামসহ বিভিন্ন এলাকায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

তৃতীয় দফা বন্দিবিনিময়ের পর নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি

আপডেট সময় : ০৯:০০:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

সময়ক্ষেপণের পর অবশেষে ১১০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। অন্যদিকে এর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত আট জিম্মির চিকিৎসা চলছে ইসরাইলে। তৃতীয় দফা বন্দিবিনিময়ের পর নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যারাই ইসরাইলি জিম্মিদের আঘাতের চেষ্টা করবে, তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। এদিকে পশ্চিম তীরে আইডিএফের অভিযানে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত দুই ফিলিস্তিনি।

হামাস আট জিম্মিকে মুক্তি দিলেও কারাবন্দি ফিলিস্তিনিদের দেশে ফেরত পাঠাতে কালক্ষেপণ করছিল ইসরাইল। রামাল্লায় সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আইডিএফের সংঘর্ষও বাড়িয়ে তোলে দুশ্চিন্তা।

তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পূর্ব নির্ধারিত ১১০ কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) নিজ ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের রাতে তাদের বরণ করে নেয় সাধারণ মানুষ। বাস থেকে নামার পর কারাবন্দিদের তুলে নেয়া হয় কাঁধে। স্লোগানের পাশাপাশি বীরদের স্বাগত জানানো হয় পতাকা হাতে। যদিও ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মুক্তিপ্রাপ্তদের নিয়ে উল্লাস করায় পূর্ব জেরুজালেম থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর পরিবারের সঙ্গে কারাবন্দিদের পুনর্মিলনীতে তৈরি হয় আবেগঘন পরিস্থিতি। মুক্তিপ্রাপ্তরা বলছেন হাজারও নির্যাতনের পরও দৃঢ় প্রত্যয়ী থাকার একমাত্র কারণ ইসরাইলি আগ্রসনকে রুখে দিয়ে দেশকে বিনির্মাণের সংকল্প।

মুক্তিপ্রাপ্ত একজন বলেন, ‘আমরা এই জনস্রোতের অংশ। আমার ভাইয়েরা পুরো বিশ্বকে বলেছে আমাদের মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত তারা হাল ছাড়বে না। এখন জাতীয় ঐক্য গঠনের সময় চলে এসেছে।’

মুক্তিপ্রাপ্ত অন্য একজন বলেন, ‘আমাদের সব দুঃখ কষ্ট জেলে রেখে এসেছি। বাকি ভাইয়েরা জেলে থেকে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’

এর আগে মুক্তিপ্রাপ্ত আট জিম্মিও ইসরাইলে পৌঁছেছেন। এদের সবাই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পাঁচ থাই নাগরিককে পাঠানো হবে নিজ দেশে। অপরদিকে ইসরাইলি জিম্মিরা ফিরে গেছেন তাদের নিজ বাড়িতে। দেড় বছর পর স্বজনদের সঙ্গে পুনর্মিলনীতে রামাল্লা ও গাজার মতো পরিস্থিতি ছিল তেল আবিবেও। তৃতীয় দফা বন্দি বিনিময়ের পর নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান, যারাই ইসরাইলি জিম্মিদের আঘাতের চেষ্টা করবে, তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য এই সমঝোতার চূড়ান্ত রূপ দেখতে পাচ্ছি। চুক্তির লঙ্ঘন সহ্য করা হবে না। জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার সময় আমরা কিছু ভয়াবহ চিত্র দেখতে পেয়েছি। পরিষ্কার করে বলছি, জিম্মিদের আঘাতের চেষ্টা করা হলে তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ।’

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে গাজাবাসী। এরইমধ্যে ধ্বংসস্তূপ থেকে সাড়ে ৩শ’ এরও বেশি মরদেহ উদ্ধার করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির প্রতিবেদন বলছে, ১৫ মাসের যুদ্ধে তৈরি হয়েছে পাঁচ কোটি টন কংক্রিটের জঞ্জাল। যা অপসারণে সময় প্রয়োজন কমপক্ষে ২০ বছর। চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে গাজা থেকে আড়াই হাজার শিশুকে অন্য দেশে সরিয়ে নেয়ার আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

এদিকে গাজায় সাময়িকভাবে শান্তি ফিরলেও পশ্চিমতীরে ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার আইডিএফের হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি। হামলা চালানো হয়েছে জেনিন শরণার্থী শিবির, তুলকেরামসহ বিভিন্ন এলাকায়।