ঢাকা ০৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ট্রাম্পের শুল্কারোপ বাস্তবায়ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দেশের ওপর শুল্কারোপ বাস্তবায়ন করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে কার্যকর হচ্ছে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক। চীনের ক্ষেত্রে এই হার ১০ শতাংশ। তিন দেশের পর ইইউ’র ওপরেও শুল্কারোপের পরিকল্পনা নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দেয়ার ঘোষণা কানাডার প্রধানমন্ত্রীর।

নানা জল্পনা কল্পনা শেষে শুল্ক যুদ্ধ শুরু করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে তিন দেশের পণ্যের ওপর কার্যকর হলো আমদানি শুল্ক। এর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করলেন ৭৮ বছর বয়সী রিপাবলিকান এই নেতা।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হচ্ছে। চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে এই হার ১০ শতাংশ। তবে উর্ধ্বমূল্যের কারণে অটোয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে শুল্কের হার কমিয়ে আনা হয়েছে ১০ শতাংশে। যা কার্যকর হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে।

মার্কিন ভূখণ্ডে ভয়াবহ মাদক ফেন্টানিল ও অবৈধ অভিবাসীদের অবাধ প্রবাহ তৈরির কারণে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। যা থেকে তাকে কেউ সরিয়ে আনতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।

তবে শুল্কারোপের কারণে নাগরিকদের সাময়িক ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে, যা জনগণ বুঝতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমার শাসনামলে ৬০ হাজার কোটি ডলার শুল্ক আদায় করেছিলাম। কিন্তু তেমন মূল্যস্ফীতি ছিলো না। শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি হয় না, শুল্কের ফলে সফলতা আসে। সাময়িকভাবে জনগণকে এর ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। তবে আশা করছি মার্কিনরা বিষয়টি বুঝতে পারবে।’

তিন দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের ঝুঁকিতে ইউরোপের ২৭ দেশ। ইইউভুক্ত দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে একপাক্ষিকভাবে সুবিধা আদায় করেছে। যা বন্ধে করতে ইতোমধ্যে শুল্কারোপের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করা হয়েছে। বলতে গেলে তারা আমাদের কোনো পণ্য আমদানি করে না। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বড় হয়েছে। তাই ইইউর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উল্লেখযোগ্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’

এতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। কড়া জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। অন্যদিকে মেক্সিকোর প্রধানমন্ত্রী ক্লদিয়া শেইনবাউম জানান, ঠান্ডা মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করছেন তিনি।

মেক্সিকোর প্রধানমন্ত্রী ক্লদিয়া শেইনবাউম বলেন, ‘ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা সংলাপের জন্য প্রস্তুত আছি। শুল্কারোপের কারণে মার্কিন অর্থনীতিও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। আমাদের তিন দেশের নাফটা চুক্তিও তখন কার্যকর থাকবে না। আপাতত কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘কানাডার বিরুদ্ধে শুল্কারোপ করা হলে আমরা এর জবাব দিবো। আমরা ততক্ষণ ক্ষান্ত হবো না, যতক্ষণ না শুল্ক প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সবকিছুই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য।’

ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র আমদানির অর্ধেক বা ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার পণ্যের জন্য নির্ভর করতে হয় এই তিন দেশের ওপর। শুল্কারোপের কারণে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব যোগ হলেও যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তাপর্যায়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ার সঙ্গে বিঘ্নিত হবে সরবরাহ ব্যবস্থা, চাকরি হারাবেন কয়েক হাজার মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ট্রাম্পের শুল্কারোপ বাস্তবায়ন

আপডেট সময় : ০৩:০৫:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দেশের ওপর শুল্কারোপ বাস্তবায়ন করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে কার্যকর হচ্ছে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক। চীনের ক্ষেত্রে এই হার ১০ শতাংশ। তিন দেশের পর ইইউ’র ওপরেও শুল্কারোপের পরিকল্পনা নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দেয়ার ঘোষণা কানাডার প্রধানমন্ত্রীর।

নানা জল্পনা কল্পনা শেষে শুল্ক যুদ্ধ শুরু করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে তিন দেশের পণ্যের ওপর কার্যকর হলো আমদানি শুল্ক। এর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করলেন ৭৮ বছর বয়সী রিপাবলিকান এই নেতা।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হচ্ছে। চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে এই হার ১০ শতাংশ। তবে উর্ধ্বমূল্যের কারণে অটোয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে শুল্কের হার কমিয়ে আনা হয়েছে ১০ শতাংশে। যা কার্যকর হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে।

মার্কিন ভূখণ্ডে ভয়াবহ মাদক ফেন্টানিল ও অবৈধ অভিবাসীদের অবাধ প্রবাহ তৈরির কারণে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। যা থেকে তাকে কেউ সরিয়ে আনতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।

তবে শুল্কারোপের কারণে নাগরিকদের সাময়িক ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে, যা জনগণ বুঝতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমার শাসনামলে ৬০ হাজার কোটি ডলার শুল্ক আদায় করেছিলাম। কিন্তু তেমন মূল্যস্ফীতি ছিলো না। শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতি হয় না, শুল্কের ফলে সফলতা আসে। সাময়িকভাবে জনগণকে এর ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। তবে আশা করছি মার্কিনরা বিষয়টি বুঝতে পারবে।’

তিন দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের ঝুঁকিতে ইউরোপের ২৭ দেশ। ইইউভুক্ত দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে একপাক্ষিকভাবে সুবিধা আদায় করেছে। যা বন্ধে করতে ইতোমধ্যে শুল্কারোপের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বাজে আচরণ করা হয়েছে। বলতে গেলে তারা আমাদের কোনো পণ্য আমদানি করে না। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বড় হয়েছে। তাই ইইউর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উল্লেখযোগ্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।’

এতে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। কড়া জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। অন্যদিকে মেক্সিকোর প্রধানমন্ত্রী ক্লদিয়া শেইনবাউম জানান, ঠান্ডা মাথায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করছেন তিনি।

মেক্সিকোর প্রধানমন্ত্রী ক্লদিয়া শেইনবাউম বলেন, ‘ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা সংলাপের জন্য প্রস্তুত আছি। শুল্কারোপের কারণে মার্কিন অর্থনীতিও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। আমাদের তিন দেশের নাফটা চুক্তিও তখন কার্যকর থাকবে না। আপাতত কূটনৈতিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘কানাডার বিরুদ্ধে শুল্কারোপ করা হলে আমরা এর জবাব দিবো। আমরা ততক্ষণ ক্ষান্ত হবো না, যতক্ষণ না শুল্ক প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সবকিছুই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য।’

ব্লুমবার্গের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র আমদানির অর্ধেক বা ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার পণ্যের জন্য নির্ভর করতে হয় এই তিন দেশের ওপর। শুল্কারোপের কারণে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব যোগ হলেও যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তাপর্যায়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ার সঙ্গে বিঘ্নিত হবে সরবরাহ ব্যবস্থা, চাকরি হারাবেন কয়েক হাজার মানুষ।