ঢাকা ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজশাহীর মালিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এবারের বিপিএলে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই ক্রিকেটারদের বেতনের ২৫ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল। অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর দুই সপ্তাহ পরও টাকা না পাওয়ায় অনুশীলন বয়কট করে রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। এরপর বিদেশি ক্রিকেটাররা ম্যাচ বয়কট করেছেন, দেশি ক্রিকেটারদের দেওয়া চেক বাউন্স হয়েছে।

এরপর ক্রিকেটারদের হোটেল থেকে বাড়ি পাঠানো, বিদেশি ক্রিকেটারদের ফেরার বিমান টিকিট না দেওয়া, টিম বাসের খরচ না দেওয়া- অভিযোগের যেন শেষ নেই। এতে বিপিএল তো বটেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। বিশ্ব ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। গতকাল তাই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক শফিকুর রহমানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিজের দোষ স্বীকার করে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধের অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

বকেয়া বেতন নিয়ে সংকটের পর বিসিবি তো বটেই, ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও। এবং মালিকের আশ্বাস শুনে ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু ক্রীড়া উপদেষ্টাকে দেওয়া কথাও রাখেননি রাজশাহীর মালিক।

গতকাল বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশে ফিরতে চাওয়ার আকুতি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। নতুন করে টিম বাসের টাকা বকেয়ার অভিযোগও শোনা যায়। এ কারণে ক্রিকেটারদের কিট ব্যাগ না দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এরপরই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।

এ ব্যাপারে আজ মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিটি পাঠকের সুবিধার্থে পুরো তুলে দেওয়া হলো –

‘বিপিএল ২০২৫ কে ঘিরে বিসিবি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ আয়োজনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে আন্তরিক প্রয়াস প্রতীয়মান হলেও, টুর্নামেন্টটির ফ্রাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহী তার দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি লঙ্ঘন করে টুর্নামেন্ট তথা রাষ্ট্রের সম্মান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

‘তাদের এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রচার হলে বিষয়টি নিষ্পত্তিকল্পে ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।’

উপদেষ্টা মহোদয়কে ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দলের ৫০ শতাংশ পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি, বরঞ্চ গণমাধ্যমে উঠে এসেছে অনিয়মের নানান অভিযোগ। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার খবরও কানে আসলে, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি আরো গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পালিয়ে যাবার গুঞ্জন উঠলে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সরকার।’

‘এমতাবস্থায়, দলটির এমন টালমাটাল অবস্থা সামাল দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের পাওনা বুঝিয়ে দিতে ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দলটির বিতর্কিত মালিক শফিকুর রহমানকে। সংকট নিরসনে সমাধান জানতে চাইলে, নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ২৫ শতাংশ হারে ৩, ৭ এবং ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তথা তিন কিস্তিতে দলের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।’

‘এছাড়াও, প্রতি কিস্তিতে খেলোয়াড় ছাড়াও দল সংশ্লিষ্ট সকলেই অর্থ বুঝে পাবেন বলেও নিশ্চয়তা দেন শফিক। অন্যথায়, তার বিরুদ্ধে যে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে মর্মে জানিয়েছেন তিনি।’

‘তাছাড়া বিপিএলে নানা অনিয়মের আদ্যোপান্ত অনুসন্ধানে কাজ করছে একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।’

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজশাহীর মালিককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ

আপডেট সময় : ১২:২০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

এবারের বিপিএলে একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে দুর্বার রাজশাহী। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই ক্রিকেটারদের বেতনের ২৫ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল। অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর দুই সপ্তাহ পরও টাকা না পাওয়ায় অনুশীলন বয়কট করে রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। এরপর বিদেশি ক্রিকেটাররা ম্যাচ বয়কট করেছেন, দেশি ক্রিকেটারদের দেওয়া চেক বাউন্স হয়েছে।

এরপর ক্রিকেটারদের হোটেল থেকে বাড়ি পাঠানো, বিদেশি ক্রিকেটারদের ফেরার বিমান টিকিট না দেওয়া, টিম বাসের খরচ না দেওয়া- অভিযোগের যেন শেষ নেই। এতে বিপিএল তো বটেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছিল। বিশ্ব ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। গতকাল তাই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক শফিকুর রহমানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিজের দোষ স্বীকার করে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধের অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

বকেয়া বেতন নিয়ে সংকটের পর বিসিবি তো বটেই, ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও। এবং মালিকের আশ্বাস শুনে ক্রীড়া উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু ক্রীড়া উপদেষ্টাকে দেওয়া কথাও রাখেননি রাজশাহীর মালিক।

গতকাল বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশে ফিরতে চাওয়ার আকুতি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। নতুন করে টিম বাসের টাকা বকেয়ার অভিযোগও শোনা যায়। এ কারণে ক্রিকেটারদের কিট ব্যাগ না দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এরপরই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।

এ ব্যাপারে আজ মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিটি পাঠকের সুবিধার্থে পুরো তুলে দেওয়া হলো –

‘বিপিএল ২০২৫ কে ঘিরে বিসিবি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ আয়োজনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে আন্তরিক প্রয়াস প্রতীয়মান হলেও, টুর্নামেন্টটির ফ্রাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহী তার দলের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একের পর এক চুক্তি লঙ্ঘন করে টুর্নামেন্ট তথা রাষ্ট্রের সম্মান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

‘তাদের এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রচার হলে বিষয়টি নিষ্পত্তিকল্পে ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।’

উপদেষ্টা মহোদয়কে ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দলের ৫০ শতাংশ পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি, বরঞ্চ গণমাধ্যমে উঠে এসেছে অনিয়মের নানান অভিযোগ। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ফ্রাঞ্চাইজি মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করার খবরও কানে আসলে, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি আরো গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকের পালিয়ে যাবার গুঞ্জন উঠলে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সরকার।’

‘এমতাবস্থায়, দলটির এমন টালমাটাল অবস্থা সামাল দিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের পাওনা বুঝিয়ে দিতে ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দলটির বিতর্কিত মালিক শফিকুর রহমানকে। সংকট নিরসনে সমাধান জানতে চাইলে, নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ২৫ শতাংশ হারে ৩, ৭ এবং ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তথা তিন কিস্তিতে দলের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।’

‘এছাড়াও, প্রতি কিস্তিতে খেলোয়াড় ছাড়াও দল সংশ্লিষ্ট সকলেই অর্থ বুঝে পাবেন বলেও নিশ্চয়তা দেন শফিক। অন্যথায়, তার বিরুদ্ধে যে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে মর্মে জানিয়েছেন তিনি।’

‘তাছাড়া বিপিএলে নানা অনিয়মের আদ্যোপান্ত অনুসন্ধানে কাজ করছে একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।’