ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে গাজা উপত্যকা: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের দখলে থাকবে গাজা উপত্যকা। নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একটা লম্বা সময় গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উপত্যকাকে পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, ফিলিস্তিনিদের গাজার বাইরে স্থানান্তরের পরামর্শও দিয়েছেন। এদিকে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে গেলে বদলে যাবে গাজার ইতিহাস।

দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় বসে প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা উপত্যকা নিয়ে চমকপ্রদ কিছু প্রস্তাব রাখেন ট্রাম্প।

গাজা উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঢেলে সাজানো হবে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘমেয়াদে গাজার মালিকানা দখলে নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সচল করা হবে অর্থনীতি। এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য বিপুল কর্মসংস্থান তৈরির প্রস্তাবও দেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘গাজা উপত্যকাকে দখলে নিবে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে এই উপত্যকা নিয়ে বেশকিছু কাজও করবে। মালিকানা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে উপত্যকার অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করা হবে। অঞ্চলটিকে পুনর্নির্মাণ করা হবে। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন অপসারণের দায়িত্বও থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বাসিন্দাদের জন্য তৈরি করা হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ।’

যদিও দীর্ঘমেয়াদী মালিকানা গ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনার বিষয়ে কিছুই জানাননি ট্রাম্প। তার মতে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকা খুব বিপজ্জনক এবং এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। গাজার বর্তমান অবস্থা নরকের মতো। অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলেই বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে সেখানে ফিরছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনার বাস্তবতার সঙ্গে কোনও মিল নেই।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির সিনিয়র ফেলো ব্রায়ান ক্যাটুলিস বলেন, ‘আমার মতে, ট্রাম্প শুধু মুখের কথা অনেক কিছু করে ফেলা কথা বলছেন। এর পিছনে সুদূরপ্রসারী কোনো পরিকল্পনা নেই। যদি থেকেও থাকে তা বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতার সাথে কোনও মিল নেই। ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা অবাস্তব।’

সংবাদ সম্মেলনে- গাজায় বসবাসকারী ১৮ লাখের বেশি মানুষকে অন্যান্য আরব দেশে স্থানান্তরিত করা উচিত বলে ফের মত দেন ট্রাম্প। যদিও আরব রাষ্ট্রগুলো আগেই তার এ মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি নিশ্চিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এই পরিকল্পনা পছন্দ করবে। আরব বিশ্বের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাদের অভিমত, এর মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আসবে। শান্তি ফিরবে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে।’

হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে অস্ত্র বিরতি চুক্তি ব্যর্থ হলে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আলোচনায় অংশ নিতে কাতারে প্রতিনিধি পাঠাতে রাজি হয়েছে ইসরাইল।

সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে তার পূর্বসূরির বাইডেন প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। ট্রাম্পের অভিযোগ, গেল চার বছরের ইসরাইলের শত্রুদের আরও শক্তিশালী করেছেন বাইডেন।

এদিকে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে প্রশংসা করেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। এ সময় ট্রাম্পকে ইসরাইলের সর্বকালের সেরা বন্ধু বলে অভিহিত করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে গাজা উপত্যকা: ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের দখলে থাকবে গাজা উপত্যকা। নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একটা লম্বা সময় গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উপত্যকাকে পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, ফিলিস্তিনিদের গাজার বাইরে স্থানান্তরের পরামর্শও দিয়েছেন। এদিকে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে গেলে বদলে যাবে গাজার ইতিহাস।

দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসের ক্ষমতায় বসে প্রথম বিদেশি নেতা হিসেবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা উপত্যকা নিয়ে চমকপ্রদ কিছু প্রস্তাব রাখেন ট্রাম্প।

গাজা উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঢেলে সাজানো হবে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘমেয়াদে গাজার মালিকানা দখলে নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সচল করা হবে অর্থনীতি। এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য বিপুল কর্মসংস্থান তৈরির প্রস্তাবও দেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘গাজা উপত্যকাকে দখলে নিবে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে এই উপত্যকা নিয়ে বেশকিছু কাজও করবে। মালিকানা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে উপত্যকার অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করা হবে। অঞ্চলটিকে পুনর্নির্মাণ করা হবে। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন অপসারণের দায়িত্বও থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। এছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে বাসিন্দাদের জন্য তৈরি করা হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ।’

যদিও দীর্ঘমেয়াদী মালিকানা গ্রহণের বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনার বিষয়ে কিছুই জানাননি ট্রাম্প। তার মতে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকা খুব বিপজ্জনক এবং এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। গাজার বর্তমান অবস্থা নরকের মতো। অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলেই বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে সেখানে ফিরছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনার বাস্তবতার সঙ্গে কোনও মিল নেই।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির সিনিয়র ফেলো ব্রায়ান ক্যাটুলিস বলেন, ‘আমার মতে, ট্রাম্প শুধু মুখের কথা অনেক কিছু করে ফেলা কথা বলছেন। এর পিছনে সুদূরপ্রসারী কোনো পরিকল্পনা নেই। যদি থেকেও থাকে তা বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতার সাথে কোনও মিল নেই। ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা অবাস্তব।’

সংবাদ সম্মেলনে- গাজায় বসবাসকারী ১৮ লাখের বেশি মানুষকে অন্যান্য আরব দেশে স্থানান্তরিত করা উচিত বলে ফের মত দেন ট্রাম্প। যদিও আরব রাষ্ট্রগুলো আগেই তার এ মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি নিশ্চিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এই পরিকল্পনা পছন্দ করবে। আরব বিশ্বের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তাদের অভিমত, এর মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আসবে। শান্তি ফিরবে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে।’

হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে অস্ত্র বিরতি চুক্তি ব্যর্থ হলে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদিকে, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আলোচনায় অংশ নিতে কাতারে প্রতিনিধি পাঠাতে রাজি হয়েছে ইসরাইল।

সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে তার পূর্বসূরির বাইডেন প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। ট্রাম্পের অভিযোগ, গেল চার বছরের ইসরাইলের শত্রুদের আরও শক্তিশালী করেছেন বাইডেন।

এদিকে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে প্রশংসা করেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। এ সময় ট্রাম্পকে ইসরাইলের সর্বকালের সেরা বন্ধু বলে অভিহিত করেন তিনি।